২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, আ’টক ১

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে খালের পানি থেকে মাছ ধরার বেড় জালের বাঁশ না তোলায় এক গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

খবর পেয়ে বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাতে সাড়ে ১১ টার দিকে দেবিদ্বার থানা পুলিশ ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।এ ঘটনায় পুলিশ গৃহবধূর শ্বাশুড়ি জুলেখা বেগমকে আটক করেছে।

গত বুধবার বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী ইউনিয়নের (উত্তরপাড়া) কোরেরপাড় এলাকায় দুলাল মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে নির্যাতনের শিকার জোৎসনা বেগম শ্বশুর, শাশুড়ি দুই ননদের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত শ্বশুর দুলাল মিয়া পেশায় একজন কসাই।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গেলে স্থানীয় চৌকিদার আবুল হাশেম বলেন, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ জোৎসনা ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে আর্তনাদ করেছে, তবুও ভয়ে সামনে কেউ এগিয়ে আসেনি এসময় তাদের বাড়ির গেইট ও দরজা সব বন্ধ ছিলো, কেউ ভিতরে যেতে পারেনি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আমির হোসেন বলেন, ‘১৮ বছর আগে উপজেলার গুনাইঘর গ্রামের সুজাত আলীর মেয়ের সঙ্গে ধামতি গ্রামের (উত্তরপাড়া) কোরের পাড় (কসাই) দুলাল মিয়ার ছেলে হেলাল মিয়া সঙ্গে বিয়ে হয়।

বিয়ের পর তাদের সংসারে ২ ছেলে ও ২ মেয়ের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী হেলাল তার মা-বাবা ও বোনেরা যৌতুকের জন্য তাকে পাশবিক নির্যাতন করে চালাত।

গত ৩ বছর আগে হেলাল ওমানে চলে যান। গত বুধবার বিকালে পানি থেকে বেড়জালের বাঁশ না তোলায় তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছে। তাদের যারা বাধা দিতে যায় তাদেরকেও গালিগালাজ করে। এ জন্য কেউ এগিয়ে যায়নি।’

নির্যাতিতা গৃহবধূর মা ফরিদা বেগম ও ছোট ভাই মো. জামাল হোসেন বলেন, শ্বশুর দুলাল মিয়া, শাশুড়ি জুলেখা বেগম, ননদ মৌসুমী ও পাখি যৌতুকের জন্য প্রায়ই জোৎসনাকে মারধর ও নির্যাতন করত।

তবুও এত বছর সংসার করেছে। ঘটনার দিন গলা সমান খালের পানি থেকে বেড়জালের বাঁশ না তোলায় আমার বোনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছে। আমরা থানায় এসেছি এ ঘটনায় মামলা দায়ের করব।

এ ব্যাপারে ওমানী থেকে জোৎসনার স্বামী হেলাল মিয়া মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, জোৎসনা বৈদ্যুতিক তারে সট খেতে ছুটাছুটি করায় তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলতে বলেছি।

অভিযুক্ত শ্বাশুড়ি জুলেখা বেগম ও ননদ মৌসুমী বেগম বলেন, খাল থেকে বেড় জালের বাঁশ তুলতে বলায় জোৎসনা পারবে না বলায় একটি চড় দেওয়া হয়।

পরে সে রাগে ফাঁসি দিতে গেলে তাকে আটকে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। আমরা কেউ তাকে মারধর করেনি।

ধামতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন মিঠু বলেন, ঘটনাটি শুনেছি- খুবই বর্বর ও পাশবিক। এলাকার লোকজন আমার কাছে নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও পাঠিয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে যা যা প্রয়োজন আমি সহযোগিতা করব। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে তিনি।

এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই নারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন দ্রুত বাকি আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!