বাবা মায়ের ঝগড়ার কারণে আত্মগোপনে যায় চার বোন
কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লায় বাবা মায়ের ঝগড়ার কারনেই সাত দিন আগে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া চার বোন আত্মগোপনে ছিল। এরপর বৃহস্পতিবার (২ জুন) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাদের উদ্ধার করে।
শুক্রবার (৩ জুন) সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন পিবিআই পুলিশ সুপার পুলিশ পরিদর্শক তৌহিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, কুমিল্লা নগরীর জাঙ্গালিয়া এলাকার হালিমা বেগম (৫০) এর বসত বাড়ি থেকে নিখোঁজ চার বোনকে উদ্ধার করা হয়। চার বোনকে সকালে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিখোঁজ চার বোনের সাথে কথা বললে তারা জানায়, তাদের বাবা উগ্র মেজাজী স্বভাবের মানুষ। তিনি তাদের মায়ের সাথে প্রায়শই ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত থাকতো। সেদিন সকালেও তাদের বাবা-মা ঝগড়া করে।
যে কারণে তারা বের থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলে। তখন তাদের বদমেজাজি বাবা তাদের বের হয়ে যেতে বলেন। পরে বিকেলে তাদের নানু এসে তাদের নানার বাড়িতে নিয়ে যায়।
এতেও তাদের রাগ না ভাঙলে তারা পরদিন মাদ্রাসার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে নাঙ্গলকোটের ফতেহপুর এলাকায় চলে যায়। সেখান থেকে তারা কুমিল্লা সুপার বাসে উঠে চলে আসে কুমিল্লার জাঙ্গালিয়া এলাকায়।
সেখানে অপরিচিত এক অটোরিকশা চালকের মাধ্যমে এক স্থানীয় হালিমা বেগম (৫০) এর বসত বাড়িতে এক কক্ষের একটি বাসা ভাড়া নেয়। যখনই তারা বাসা ভাড়া নেয় তখনই হালিমা বেগমের সন্দের হয়। কিন্তু তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা পত্রিকার সাথে যুক্ত না হওয়াতে তিনি তাদের হারানোর খবর পাননি।
পরে তারা সেখানে তাদের সাথে থাকা টাকা দিয়ে খাবার খায় এবং চলা ফেরা করে। এরপর বৃহস্পতিবার তাদের উদ্ধার করে পিবিআই।
এসময় উপস্তিত ছিলেন পিবিআইএর পরিদর্শক মনজুর আলম, হিলাল উদ্দীন, মোবারক হোসেন ও বিপুল চন্দ্র দেবনাথ।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ মে মা-বাবার সঙ্গে রাগারাগি করে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার হুমকি দেয় কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের চার বোন। পরে রাগ ভাঙাতে এসে নাতনিদের সঙ্গে করে নিয়ে যান তাদের নানি।
পরদিন ২৬ মে সেই বাড়ি থেকে মাদ্রাসার উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ রয়েছে তারা। নিখোঁজ চার বোন উপজেলার মৌকরা ইউনিয়নের কালেম গ্রামের মজিবুল হকের মেয়ে।
তারা স্থানীয় দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। আত্মীয়-স্বজনসহ বন্ধু-বান্ধবীদের বাড়িতে খোঁজ করেও মেলেনি সন্ধান।
এ ঘটনায় ২৭ মে রাতে নাঙ্গলকোট থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তাদের বাবা মুজিবুল হক। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।