২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সব বান্ধবীর বিয়ে শেষ, ক্লাসে একা নার্গিস

অনলাইন ডেস্ক:
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী নার্গিস। অষ্টম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় নার্গিসসহ তার আটজন সহপাঠী ছিলেন।

নার্গিস ও তার আট বান্ধবী অষ্টম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তিও হয়। কিন্তু লকডাউনের সময় স্কুল বন্ধ থাকা অবস্থায় একে একে নার্গিসের আটজন বান্ধবীর বিয়ে হয়ে যায়। এখন নবম শ্রেণিতে নার্গিস নাহারই একমাত্র ছাত্রী। যার এখন কথা বলার কোনো সঙ্গীই নেই।

করোনা মহামারিতে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খুলেছে। স্কুল খোলার পর থেকে শুধু নার্গিস নাহারই ক্লাসে আসেন। বান্ধবীদের ছাড়া মন খারাপের মধ্য দিয়েই স্কুলে সময় কাটছে তার।

নার্গিস জানায়, এখন শুধু আমিই বাকি রয়েছি। ক্লাসজুড়ে আমি শুধু একা। কারো সঙ্গে কোনো কিছু শেয়ার করতে পারি না। তাই মন খারাপ করেই ক্লাস করতে হচ্ছে।

নার্গিস আরও জানায়, বান্ধবীদের বিয়ে হয়ে গেছে। তাই আমার মধ্যেও অজানা শঙ্কা কাজ করছে। আমার শেষ পরিণতি কী হবে তাও অজানা। আমার বাবা-মাকে অনুরোধ করেছি, আমাকে যেন হঠাৎ করে বিয়ে না দেয়।

আমি পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করে নিজের অবস্থা তৈরি করেই বিয়ে করব। এর আগে নয়। অন্যের বোঝা হয়ে থাকতে চাই না আমি।

সরেজমিন সারডোব উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ৯ম শ্রেণির ছাত্রী নার্গিস নাহার ক্লাস করছেন। এক পাশে ছাত্ররা এবং অন্য পাশে নার্গিস একা বসে আছেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফজলে রহমান বলেন, তার বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ২২৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৩ জন ছাত্রী। এদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ছাত্রী এবং ৭০ শতাংশ ছাত্র বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছে। বাকিদের খোঁজ খবর নিতে শিক্ষকদের নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয়েছে।

তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যালয়ে না আসার প্রকৃত কারণ তুলে ধরবেন। প্রাথমিক তথ্য মতে স্কুলের ১৮ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির চার জন ছাত্রীর মধ্যে জেসমিন ছাড়া বাকি তিন জনেরই বাল্যবিয়ে হয়েছে। ৯ম শ্রেণিতে নয়জনের মধ্যে নার্গিস ছাড়া আটজনের বিয়ে হয়েছে।

এছাড়াও ষষ্ঠ শ্রেণির একজন, সপ্তম শ্রেণির দুইজন, অষ্টম শ্রেণির চারজনকে পরিবার থেকে গোপনে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ফজলে রহমান। সূত্র: ডেইলী বাংলাদেশ

আরো দেখুন
error: Content is protected !!