‘ডি কোম্পানি’ -ভয়ংকর কিশোর গ্যাং
নিউজ ডেস্ক
ভয়ংকর কিশোর গ্যাং ডেয়ারিং কোম্পানি (‘ডি কোম্পানির’) প্রধান পৃষ্ঠপোষক রাজিব চৌধুরী বাপ্পী ওরফে লন্ডন বাপ্পীসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১ সদস্যরা। গত শনিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা ও টঙ্গী এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে দুইটি বিদেশি পিস্তল, ২টি চাপাতি, ২টি রামদা, ৩টি লোহার রড ও ১টি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
সম্প্রতি টঙ্গীর পূর্ব থানাধীন আরিচপুর এলাকায় দুইটি ঘটনায় নৃশংসভাবে হামলা চালিয়েছে এই ‘ডি কোম্পানি’র সদস্যরা। এই গ্যাংয়ের উদ্দেশ্য ছিল হামলা, ভাংচুর, মারামারি এবং নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটিয়ে পুরো টঙ্গী নিয়ন্ত্রণ করা। রবিবার ( ৬ জুন) বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এই গ্যাংয়ের গ্রেফতার অন্যতম আরেক সদস্য মইন আহমেদ নীরব ওরফে ডন নীরব ও রাজিব আহমেদ নীরব ওরফে টম নীরব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মেসেঞ্জার মাধ্যমে দুই শতাধিক কিশোরকে সক্রিয় রাখতো।গ্রেফতারকৃত অন্যরা হল, মো. তানভীর হোসেন ওরফে ব্যাটারী তানভীর, মো. পারভেজ ওরফে ছোট পারভেজ, মো. তুহিন ওরফে তারকাটা তুহিন, মো. সাইফুর ইসলাম শাওন, মো. রবিউল হাসান, মো. শাকিল ওরফে বাঘা শাকিল, মো. ইয়াসিন আরাফাত ওরফে বিস্কুট ইয়াছিন, মো. মাহফুজুর রহমান ফাহিম ও ইয়াছিন মিয়া ওরফে ইয়াছিন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১ জুন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ‘ডি কোম্পানি’র সদস্যরা টঙ্গীর পূর্ব থানাধীন আরিচপুর এলাকার ভূঁইয়া পাড়া জামে মসজিদের সামনে মো. তুহিন আহমেদ এবং তুষার আহমেদকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুত্ব আহত করে। এ ঘটনায় পরের দিন তুহিন আহমেদ বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের পর দেশব্যাপি আলোড়ন সৃষ্টি করে। ঘটনার পরপরই র্যাব তদন্ত শুরু করে এবং আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করে। তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা মাদক সেবন, স্কুল,কলেজে বুলিং, র্যাগিং, ইভটিজিং, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও শেয়ারসহ নানাবিধ অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
র্যাব সূত্র জানান, এই গ্রুপের প্রধান রাজিব চৌধুরী বাপ্পী এর আগেও অস্ত্রসহ র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। এছাড়াও একটি অপহরণ মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি সে জামিনে বেরিয়ে ফের বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পরে। তার ভাই পাপ্পু ওরফে লন্ডন পাপ্পু এক সময় লন্ডনে ছিল। লন্ডন থেকে ফিরে এলাকায় মাদক কারবার, মারামারি, হত্যা চেষ্টা ও বিভিন্ন অপরাধে সে এখন কারাগারে রয়েছে। জামিনে বেরিয়ে সে ফের বেপরোয়া হওয়ার পরিকল্পনা করছে। এজন্য ‘ডি কোম্পানি’ প্রতিষ্ঠিত করে পুরো টঙ্গী নিয়ন্ত্রণে করবে। এমনকি দুইটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটাবে বলে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে তথ্য পেয়েছে। এজন্য তার ভাই বাপ্পী অস্ত্র মজুদ রেখেছে।ওই সূত্র আরও জানায়, ‘ডি কোম্পানি’সহ টঙ্গীতে আরও কয়েকটি কিশোর গ্যাংয়ের সন্ধান পেয়েছেন তারা। একেক গ্রুপের সঙ্গে মারামারি, ভাংচুরসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত রয়েছে। তাদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।