ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আনন্দ মিছিল
অনলাইন ডেস্ক।।
নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে আনন্দ মিছিল করেছেন রোহিঙ্গারা। মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হওয়ায় এ মিছিল করা হয়।
রোববার (১০ অক্টোবর) দুপুরে কয়েকশ রোহিঙ্গা ৯ নম্বর সেল্টারের সিআইসি অফিসের সামনে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে হাসপাতাল রোডের ১ নম্বর রোহিঙ্গা বাজারে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়। এতে ক্যাম্প হেড ফোকালরা নেতৃত্ব দেন।
জাতিসংঘ ও শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল থেকে বিভিন্ন শ্লোগান দেন রোহিঙ্গারা। এরমধ্যে ‘ওয়েলকাম ইউএন’, ‘ওয়েলকাম ইউএনএইচসিআর’, ‘থ্যাংক ইউ ইউএন’, ‘উই আর হ্যাপি’, শ্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার দেখা যায় তাদের হাতে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভাসানচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, জাতিসংঘের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ায় রোহিঙ্গারা এ মিছিল বের করেন।
এর আগে শনিবার (৯ অক্টোবর) ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদেরও মানবিক সহায়তা দিতে সংস্থাটি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করে। বাংলাদেশের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহসীন এবং জাতিসংঘের পক্ষে ইউএনএইচসিআরের কান্ট্রি ডিরেক্টর চুক্তি সই করেন।
ইউএনএইচসিআর সূত্র জানায়, এর ফলে ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সেবা ও সহায়তা কার্যক্রমে সরকার এবং জাতিসংঘের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা সম্ভব হবে। সুরক্ষা, শিক্ষা, দক্ষতা, প্রশিক্ষণ, জীবিকা ও স্বাস্থ্যসেবায় সহায়তার মাধ্যমে শরণার্থীরা দ্বীপে মানসম্মত জীবনযাপন করতে পারবেন। এছাড়া তারা ভবিষ্যতে মিয়ানমারে টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবেন।
শুরুতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো থেকে শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘের আপত্তি ছিল। তবে গত ১৭ মার্চ তিনদিনের সফরে ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের দেখতে যান জাতিসংঘের ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ভাসানচর ঘুরে আসা জাতিসংঘের কর্মকর্তারা প্রায় মাসখানেক পর ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানান।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের প্রথম দেখতে যায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) একটি প্রতিনিধি দল।
সর্বশেষ চলতি মাসের শুরুর দিকে ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের দেখতে যান ঢাকায় নিযুক্ত ১০ বিদেশি রাষ্ট্রদূত। সফর শেষে দাতা গোষ্ঠীদের এসব কূটনীতিকরাও ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানান।
কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে অধিকতর নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয় করে ভাসানচর প্রস্তুত করে বাংলাদেশ সরকার।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার।
এ পর্যন্ত ছয় দফায় ১৮ হাজার ৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়। আরও ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।