হাশরের ময়দানে আল্লাহ তাআলার আগমন
কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা হরজত ইসরাফিল আলাইহিস সালামে সিঙ্গায় দ্বিতীয়বার ফুৎকার দেয়ার নির্দেশ দিবেন। সে নির্দেশে পৃথিবীর শুরু থেকে কিয়ামত অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত সব মানুষ আবার জীবত হবে। সবার মাঝে থাকবে চরম পেরেশানী। সবাই মুক্তির অপেক্ষায় আত্মহারা পাগলপারা অবস্থায় সময় কাটাবে। সে সময়ের অবস্থা বর্ণনা ইমাম ইবনে জারির রহমাতুল্লাহি আলাইহি একটি হাদিস এনেছিন। যা হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। যখন সব মানুষ ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে; তখন তারা নবিদের নিকট সুপারিশ জানাবে। হজরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে এক একজন নবির কাছে তারা যাবে এবং প্রত্যেকের কাছে তারা পরিস্কার জবাব (প্রত্যেকেই সাহায্য করার ব্যাপারে সুস্পষ্ট অপরগতা প্রকাশ করবে।) পেয়ে ফিরে আসবে। অবশেষে সব মানুষ সাহায্য লাভের সুপারিশ নিয়ে বিশ্বনবি হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট পৌঁছবে।
তিনি উত্তর দিবেন, আমি প্রস্তুত আছি। আর আমিই তার (এ কাজের) অধিকারী। অতঃপর তিনি (বিশ্বনবি আরশের নিকট) যাবেন এবং আরশের নিচে সিজদায় পড়ে যাবেন। তিনি আল্লাহ তাআলার নিকট সুপারিশ করবেন যে, তিনি (আল্লাহ) যেন বান্দাদের ফয়সালার জন্য আগমন করেন।আল্লাহ তাআলা তাঁর (বিশ্বনবির) সুপারিশ কবুল করবেন এবং মেঘমালার ছায়াতলে সমাগত হবেন। দুনিয়ার আকাশও ফেটে যাবে এবং দুনিয়ার সব ফেরেশতাও এসে যাবে।
অতঃপর দ্বিতীয় আকাশও ফেটে যাবে, সেখানের ফেরেশতারাও এসে যাবে। এভাবে সাতটি আকাশ ফেটে যাবে এবং সব ফেরেশতা এসে উপস্থিত হবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলার আরশ থেকে নেমে আসবে, সম্মানিত ফেরেশতাগণ (আগে) অবতরণ করবেন অতঃপর স্বয়ং মহা পরাক্রমশালী আল্লাহ তাআলা আগমন করবেন।আরশে আজিম থেকে হাশরের ময়দানে আল্লাহ তাআলার আগমনের সময় সব ফেরেশতা এ তাসবিহ পাঠে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন-উচ্চারণ : ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়ালমালাকুতি; সুবহানা জিল ইযযাতি ওয়াল আজমাতি ওয়াল জাবারুতি; সুবহানাল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ামুতু; সুবহানাল্লাজি ইয়ুমিতুল খালায়িক্বি ওয়া লা ইয়ামুতু; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহি; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন; সুবহানা রাব্বানাল আ’লা; সুবহানা জিস সুলত্বানি ওয়াল আ’জমাতি; সুবহানাহু আবাদান আবাদান।’অর্থ :‘সম্রাজ্য ও আত্মার অধিকারীর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। সম্মান ও অসীম ক্ষমতার অধিকারীর প্রশংসা ও গুণগান করছি। সেই চিরঞ্জীবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি, যিনি মৃত্যুবরণ করেন না। তাঁরই গুণগান করছি, যিনি সৃষ্টিজীব সমূহের মৃত্যু ঘটিয়ে থাকেন এবং তিনি নিজে মৃত্যুমুখে হন না। ফেরেশতাগণ ও আত্মার প্রভুর তাসবিহ পাঠ করছি। আমাদের বড় প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। সম্রাজ্য ও শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারীর আমরা গুণগান করছি। সদা সর্বদা তাঁরেই পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
’পরিশেষে…আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে হাশরের ময়দানে তাঁর পবিত্রতা ও গুণগান করার মাধ্যমে নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন। হাশরের ময়দানে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুপারিশ পেতে কুরআন বিধি-বিধান পালন এবং বিশ্বনবির পরিপূর্ণ সুন্নাহর তথা আনুগত্য, অনুসরণ ও তাঁর সুমহান আদর্শের অনুকরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।