২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এই ঈদে ঝাল-মিষ্টি

👁️লাইফস্টাইল ডেস্ক ✒️
ঈদ মানে নতুন জামা–কাপড় আর পোলাও, কোর্মা, জর্দা ও দুধের সেমাইয়ের আবেগ জড়ানো ভালোবাসা। ঈদের দিনে মুরগির কোর্মা হবে না, এটা ভাবাই যায় না। ছোট–বড় সবারই ভীষণ পছন্দের এই কোর্মা। পোলাও আর কোর্মা রান্না করলে বাচ্চারা কেমন যেন লক্ষ্মী হয়ে যায়! তবে কেবল কোর্মা নয়, বরং এই ঈদে কোর্মার সঙ্গে থাকছে কোফতা কারি আর কেকও। ঝাল আর মিষ্টি স্বাদের চমৎকার তিনটি রেসিপি।

বিফ কোফতা কারিগরুর মাংসের অনেক নানা পদের মধ্যে কোফতা কারি বেশ মজার! হাড়বিহীন মাংসের ডিশ হওয়ায় বাচ্চারাও এটি বেশি পছন্দ করে! বড়রা তো পছন্দ করেনই! ঝামেলাবিহীন আর বেশ সহজেই তৈরি করা যায়।

উপকরণ
কোফতার জন্য: গরুর মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম, আদা–রসুনবাটা ১ চা–চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা–চামচ, ধনেগুঁড়া ১ চা–চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা–চামচ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা–চামচ, সাদা ভিনেগার আধা চা–চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ৫০ গ্রাম, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, কর্নফ্লাওয়ার বা টালা বেসন ২-৩ চা–চামচ, ভাজার জন্য তেল।

কারির জন্য: তেল ১২৫ মিলি, ঘি ১-২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজকুচি ১৫০ গ্রাম, পেঁয়াজবাটা ৬০ গ্রাম, টমেটোকুচি করা ১টি, আদা ও রসুনবাটা দেড় চা–চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা–চামচ, ধনেগুঁড়া ১ চা–চামচ, টালা জিরা আধা চা–চামচ, দারুচিনি ২-৩ টুকরা (আধা ইঞ্চি সাইজের), এলাচি ২-৩টি, তেজপাতা মাঝারি সাইজের ১-২টি, হলুদগুঁড়া ১ চা–চামচ, মরিচগুঁড়া দেড় চা–চামচ, কাঁচা মরিচ ৫-৬টি, টমেটো সস ১-২ চা–চামচ, পানি ঝোলের ঘনত্ব অনুযায়ী, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, চিনি আধা চা–চামচ (ঐচ্ছিক), ধনেপাতাকুচি ২-৩ চা–চামচ (ঐচ্ছিক)।
প্রণালি
প্রথমে কিমা, মসলাসহ সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। পাটায়ও বেটে নেওয়া যাবে। এরপর কিমার মিশ্রণ ছোট ছোট বলের মতো করে কোফতা বানিয়ে নিতে হবে। ১২-১৫টি কোফতা হবে।
তারপর একটি কড়াইয়ে তেল গরম করে কোফতাগুলো ভেজে নিতে হবে। বেশি কড়া করে ভাজলে ভেতরে শুকনো হয়ে যাবে।

এবার চুলায় মাঝারি আঁচে একটি কড়াইতে তেল দিতে হবে। সঙ্গে দিতে হবে ১-২ চা–চামচ ঘি। এবার এতে গরমমসলার ফোড়ন দিন। একটু ভেজে ঘ্রাণ বেরোলে পেঁয়াজকুচি দিতে হবে। পেঁয়াজকুচি বাদামি করে ভেজে দিন পেঁয়াজবাটা। এবার আরেকটু ভেজে দিন টমেটোকুচি এবং একটু ভেজে তাতে আদা–রসুনবাটা, হলুদ–মরিচগুঁড়া এবং বাকি মসলা দিয়ে অল্প পানিতে ভালো করে কষান। সব মসলার কাঁচা গন্ধ চলে গেলে কোফতা দিয়ে দিন। লবণ দিয়ে একটু কষিয়ে টমেটো সস ইচ্ছা হলে দিন। যতটুকু ঝোল চান, সে অনুযায়ী পানি দিয়ে ফুটে উঠলে কাঁচা মরিচ দিয়ে নামিয়ে নিন। এরপর জিরার গুঁড়া ছড়িয়ে ধনেপাতা দিয়ে গরম–গরম পরিবেশন করুন।
চাইলে নামানোর আগে অল্প গাওয়া ঘি দিলে সুন্দর সৌরভ ছড়াবে। মজাদার এই বিফ কোফতা কারি পোলাও, ভাত, নান বার, পরোটার সঙ্গে দারুণ লাগে। চাইলে এই ভাজা মিট বল দিয়ে র‌্যাপ করে রোল এবং স্যান্ডউইচও করা যেতে পারে।

মুরগির কোর্মা

উপকরণ
মুরগির মাংস ২ কেজি, তেল ২০০ মিলি, ঘি ৫০ মিলি, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, পেঁয়াজবাটা আধা কাপ, টক দই ১ কাপ, কাজুবাদামবাটা ২ টেবিল চামচ, আদাবাটা ২ চামচ, রসুনবাটা ২ চামচ, গরমমসলার গুঁড়া ১ চা–চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, ধনেবাটা দেড় চা–চামচ, দারুচিনি ৫-৬ টুকরা, এলাচি ৫-৬টি, তেজপাতা ২-৩টি, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চামচ, ফ্রেশ ক্রিম ১০০ গ্রাম, তরল দুধ ২৫০ মিলি (ঝোলের ঘনত্ব অনুযায়ী), লবণ স্বাদমতো, পেঁয়াজ বেরেস্তা পরিমাণমতো, চিনি ১ চা–চামচ অথবা ইচ্ছানুযায়ী, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, কিশমিশ ২ টেবিল চামচ, বাদামকুচি ২-৩ মুঠো।

প্রণালি
প্রথমে মুরগির মাংস ভালোমতো পরিষ্কার করে সুন্দর সাইজে কেটে নিয়ে ধুয়ে ১ চা–চামচ করে আদা ও রসুনবাটা আর লবণ দিয়ে মাখিয়ে তেলে হালকা করে ভেজে নিতে হবে।
তেল থেকে মাংস তুলে তাতে গরমমসলা হালকা ভেজে পেঁয়াজকুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ হালকা বাদামি করে ভেজে পেঁয়াজবাটা দিতে হবে। ভালো করে ভেজে তাতে আদা–রসুনবাটা, ফেটানো টক দই কাজুবাদামবাটা ও বাকি মসলা দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানোর একপর্যায়ে তেল ভেসে উঠলে তাতে ভাজা মুরগির মাংস এবং লবণ দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে চুলার আঁচ কমিয়ে ঢেকে রাখতে হবে ৮-১০ মিনিট। ১০ মিনিট পরে দুধ দিয়ে আরও ১০ মিনিট রান্না করতে হবে। এরপর এতে ফ্রেশ ক্রিম এবং চিনি দিতে হবে। ঝোল শুকিয়ে এলে আরও একটু দুধ দিতে হবে। এ পর্যায়ে লবণ চেখে ঘি ছড়িয়ে কাঁচা মরিচ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। আর ২ মিনিট রান্না করে চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। গরম–গরম কোর্মা পাত্রে ঢেলে পেঁয়াজ বেরেস্তা এবং পছন্দ অনুযায়ী বাদামকুচি ছিটিয়ে পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে।

ফ্রায়েড মিল্ক কেকসাধারণ কেকের উপকরণে তৈরি অসাধারণ মজার এই কেক।

উপকরণ
গুঁড়া দুধ ১ কাপ, তেল ১ কাপ, ঘি ১ টেবিল চামচ, ময়দা ১ কাপ, চিনি ১ কাপ, বেকিং পাউডার ১ চা–চামচ, বেকিং সোডা ১ চা–চামচের ৮ ভাগের ১ ভাগ, ভ্যানিলা এসেন্স ১ টেবিল চামচ, গলানো মাখন ৩০ গ্রাম, গরম তরল দুধ ৩০ গ্রাম (কমবেশি লাগতে পারে) ও ডিম ৪টি।

প্রণালি
প্রথমেই ময়দা, বেকিং পাউডার আর বেকিং সোডা একসঙ্গে মিশিয়ে একটি বাটিতে রাখতে হবে।
এক কাপ রান্নার তেলে গুঁড়া দুধ হালকা বাদামি করে ভেজে নিতে হবে। খুবই অল্প আঁচে করতে হবে, না হলে দুধ পুড়ে যাবে। ননস্টিক ফ্রাই প্যান হলে ভালো হয়। ৪-৫ মিনিটেই দুধ ভাজা হয়ে যাবে।
এরপর এই ভাজা দুধ একটি বাটিতে ঢেলে নিতে হবে।
এখন ডিমের সাদা অংশ আর কুসুম আলাদা করে নিতে হবে।
ডিমের সাদা অংশ ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে এবং ১ কাপ চিনি ৩ বারে দিয়ে এটাকে ৩-৪ মিনিট ধরে ফেটাতে হবে। ৩-৪ মিনিটেই এটি খুব সুন্দর ফোমি হবে আর গড়িয়ে পড়বে না। এ পর্যায়কে স্টিফ পিক বলে। এখন এই মিশ্রণে ডিমের কুসুম একটি একটি করে দিয়ে আরও ৩০ সেকেন্ড করে ফেটাতে হবে। এই পর্যায়ে দিয়ে দিতে হবে এসেন্স।
এখন ডিম চিনির এই মিশ্রণে ময়দার মিশ্রণটি অল্প অল্প করে ৩ বারে মেশাতে হবে। জোরে জোরে মেশানো যাবে না। আলতো হাতে একটি স্প্যাচুলা দিয়ে আলগোছে মিশিয়ে নিতে হবে।
ময়দা আগেই একটি চালুনি দিয়ে চেলে নিতে হবে।
ডিমের মিশ্রণে ময়দা মেশানো হলে ভাজা দুধও ৩ বারে একদম আলগোছে মিশিয়ে নিয়ে, গলানো মাখন দিয়ে দিতে হবে।
ভাজা দুধ দিলে কেকের ব্যাটার একটু ঘন হয়ে আসবে, তখন তরল দুধ গরম করে মিশিয়ে নিতে হবে।
খেয়াল রাখতে হবে, বেশি পাতলা যেন না হয়। সাধারণ কেকের ব্যাটারের মতো ঘনত্ব হবে।
এখন একটি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ওভেন প্রুফ ডিশে (কেক বানানো যাবে এমন ডিশে) তেল ব্রাশ করে নিয়ে ডিশের নিচে পার্চমেন্ট পেপার বিছিয়ে নিতে হবে, যাতে সহজে আনমোল্ড করা যায়।
একটু চাপ করে নিতে হবে, যাতে কেকের ব্যাটারে বাতাস না থাকে। না হলে কেকের ভেতরে ফাঁকা হয়ে গর্ত হয়ে যায়।
এখন ডিশটি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে দিয়ে ৫ মিনিট হাই হিটে বেক করতে হবে। আর মাত্র ৫ মিনিটেই হয়ে যাবে দারুণ স্বাদের অসাধারণ ভাজা দুধের কেক বা ফ্রায়েড মিল্ক কেক!
তবে তাপমাত্রার তারতম্যের জন্য আপনাদের মাইক্রোওয়েভ ওভেনে সময় ১-২ মিনিট বেশি লাগতে পারে!
কেক ঠান্ডা করে ইচ্ছামতো ডেকোরেশন করে নেওয়া যাবে।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!