কুমিল্লায় অতি উৎসাহীরা কেউ হামলা করে থাকলে ব্যবস্থা
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লায় কেউ যদি অতি উৎসাহী হয়ে কিছু করে থাকেন, কিংবা ইচ্ছাকৃত ওই ঘটনাটা ঘটান, তিনি বা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে কুমিল্লায় বিএনপি নেতাদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শনিবার কুমিল্লায় বিএনপির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার ওপর হামলা হয়েছে, এ বিষয়ে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা বিএনপি নেতাদের উপস্থিতি মাঠে ময়দানে হঠাৎ করেই দেখছেন। বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল, এর পাশাপাশি আমাদের দেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল রয়েছে।
তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা রয়েছে, আমাদের সরকারে পক্ষ থেকে সব সময় বলা হচ্ছে তারা গঠনতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করলে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। সরকার মনে করে সব রাজনৈতিকদলই সমানভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে।
কিন্তু সবাইকে দেশের আইন মেনে চলতে হবে। যখন কেউ ভাঙচুর করবে, রাস্তা অবরোধ করবে, জনমালের ক্ষতি কিংবা জ্বালাও পোড়াও করবে- তখনই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের যে অর্পিত দায়িত্ব, সেটা তারা পালন করবে। সেটা তারা করছে বলে বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, শনিবারকে কুমিল্লার ঘটনায় বিএনপির এক সিনিয়র নেতা আহত হয়েছেন। আমরা সেটা শুনেছি, ইত্যোমধ্যে তদন্তের ব্যবস্থা করেছি।
কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন সেটা দুই রকমভাবে শুনেছি। যেহেতু আমি শুনেছি, তাই তদন্তের আগে কিছু বলতে পারব না। আমি একুটু বলতে পারি যদি কেউ এ ব্যাপারে অতি উৎসাহী হয়ে কেউ কিছু করে থাকেন, কিংবা কেউ যদি ইচ্ছা করে ঘটিয়ে থাকেন, তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার বনানীতে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা কি অতি উৎসাহী হয়ে ঘটিয়েছে বলতে চাচ্ছেন- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বনানীর যে ঘটনাটা সেটা না জেনে আমি বলতে পারব না। সেটা আমি আগেই বলেছি। ঘটনার সবকিছু জেনে আপনাদের আরেকদিন ব্রিফ করব। কেন এসব ঘটছে, কীভাবে ঘটছে না জেনে আপনাদের বলা উচিৎ না।
আহত হচ্ছে, রক্ত ঝরছে এ বিষয়ে আপনার কোনো নির্দেশনা থাকবে কিনা- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা দুই দলের ক্ষেত্রেই হচ্ছে৷ আমাদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
কাজেই একদল মার খাচ্ছে, আর একদল ঘরে বসে আছে সেটা কিন্তু নয়। পাল্টাপাল্টি ঘটনা হচ্ছে, মুখোমুখি হচ্ছে। কেন হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে? প্রধানমন্ত্রী সব সময় বলেন, সবারই রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে।
তবে যারা রাজনৈতিক দল, তারা যদি নিয়ম মেনে রাজনীতি করে, রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে, আমাদের সেখানে কিছু বলার নেই। যার যার কর্মসূচি নিয়ে কাজ করবে। কিন্তু সেটা বিধি সম্মত হতে হবে।
আইনশৃঙ্খলার এমন পরিস্থিতির জন্য পুলিশের ভূমিকা কী হবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলেছি সভা, সমিতি করলে আমাদের কিছু বলার নেই।
যদি সভা সমিতি ছেড়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তখনই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যায়। তার আগে কোথাও নিরাপত্তা বাহিনী যাচ্ছেন না।
রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়ছে সেটা বলছেন, সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য কোনো নির্দেশনা আছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে।
কোথাও সংঘর্ষ লাগার সম্ভাবনা থাকলে, আগেই সতর্ক করছে, ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং সংঘর্ষ লেগে গেলে উদ্ধার করছে।
কুমিল্লায় যে ঘটনা ঘটেছে, খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে ছুটে গেছে। এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যা করার, করছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে তারাই করেছে, এমন কোনো খবর আমার কাছে আসেনি।
তাহলে কী নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরনের সংঘর্ষ শুরু হলো?- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের সময় রয়েছে অনেক।
তবে এখানে কার, কী উদ্দেশ্য, এগুলোতো আমরা পর্যবেক্ষণ না করে বলতে পারব না। অনেকেরই অনেক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। আমি সব সময় বলি, প্রধানমন্ত্রী সব সময় জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করেন। কোনো ষড়যন্ত্র, মাসেল, বন্ধুকের নল এগুলোতে আমরা বিশ্বাস করি না।
আমরা মনে করি সামনে নির্বাচন আসছে। সে নির্বাচনে আবার জনগণ যদি আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে, তাহলে আমরা ক্ষমতা থাকেব। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র, কিংবা ভয়ভীতি দেখানো বা কোনো পেশিশক্তির ব্যবহারকে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না।
তবে, যারা এগুলো করবেন তাদের জন্য অশুভ সংবাদ হলো, এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।