১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় সেলুন দোকানী কাউসার হত্যাকান্ড; আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লা শহরতলীর চম্পকনগর এলাকার সেলুন কর্মচারী কাউসার হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও মূল পরিকল্পনাকারী মনির হোসেন(৩০) কে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

গ্রেতারকৃত আসামী মনির হোসেন মুরাদনগর উপজেলার পালাসুতা গ্রামের মৃত আবদুল মজিদ ওরফে মজু মিয়ার পুত্র এবং কাউসার হত্যা মামলার ৪নং এজাহারনামীয় আসামী।

সে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে কুমিল্লার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার কুমিল্লা পিবিআই এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

কুমিল্লা পিবিআই ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে কুমিল্লা শহরতলীর চম্পকনগর (সাতরা) এলাকায় ইকবালের বাড়ির সামনে মায়ের দোয়া নামক সেলুনে খুন হয় কাউসার (২৭)। কাউসার মুরাদনগর এলাকার কেমতলী গ্রামের আবদুল বারেকের পুত্র।

এ ঘটনায় কাউসারের বড় ভাই আবুল কালাম বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় ৪জন এজহার নামীয় আসামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলার ৪নং আসামী মনির হোসেন। থানা পুলিশ প্রায় ১ বছরের বেশি সময় ধরে তদন্ত শেষে মনির হোসেনকে বাদ দিয়ে আদালতে কাউছার হত্যা মামলার অভিযোগ পত্র দাখিল করে।

এতে বাদী না রাজি প্রদান করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি অধিক তদন্তের জন্য পিবিআই কুমিল্লা কে দায়িত্ব প্রদান করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই কুমিল্লা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম কিবরিয়া জানান, কাউছার খুনের ঘটনায় মনির হোসেনের সংশ্লিষ্টতা পেয়ে গত মঙ্গলবার তাকে নারায়নগঞ্জের রূপসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শহরতলীর চম্পকনগর সাতরা এলাকায় ইকবালের বাড়ির সামনে মায়ের দোয়া সেলুন দোকান একসময় ভাড়ায় চালাত গ্রেফতারকৃত আসামী মনির হোসেন। মনির হোসেন ২০১৭ সালে দোকানটি ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে কাউসারের নিকট হস্তান্তর করে।

পরে মনির অন্যান্য জায়গায় কাজ করে সুবিধা করতে না পেরে কাউছারের দোকানটি পুনরায় ফেরত দিতে প্রস্তাব দেয়। এতে কাউছার রাজি হয়নি।

পরে সে কাউসারকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে দোকান থেকে উঠিয়ে দিতে তার পরিচিত স্থানীয় বখাটে রাব্বি,শুভ,শান্ত ও ভোলনকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ঠিক করে। তারা ভয়-ভীতি দেখাতে গিয়ে কাউছারের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে শুভ ছূরি দিয়ে কাউছারের বুকে আঘাত (গাই মারে) করেন। এতে কাউছার ঘটনাস্থলে মারা যান। আসামীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।

মামলায় মনির হোসেন ৪ নং আসামী হলেও সে থানা পুলিশের অভিযোগ পত্র থেকে বাদ পড়লেও সে আত্মগোপনে থেকে ছদ্ধ নাম ধারন করে। পিবিআই এর ডিআইজি বনোজ কুমার এর দিক নির্দেশনায় এবং জেলা ইউনিটের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল এর সহযোগীতায় কাউছার হত্যার রহস্য উদযাটন ও মুল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান।

গত বুধবার বিকেলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ১৬৪ ধারার আদালতে মনির হত্যার দায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

পিবিআই কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, কাউছার হত্যাকান্ডের মুল পরিকল্পনার বিষয়ে কিছু তথ্য পেলে তা যাছাই-বাছাই ও স্বাক্ষ্য প্রমান মিললে মনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে সে সত্যতা স্বীকার করে এবং মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে আদালতে স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!