কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার আটক, তিনমাসের সা’জা
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সঞ্জয় চন্দ্র রায় নামে এক ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তারকে শনাক্ত করে তিন মাসের সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
উপজেলার গুণবতী বাজারে অবস্থিত নিউ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
কারাদণ্ড পাওয়া সঞ্চয় পাল চট্টগ্রামের খুলশি উপজেলার বিবেক চন্দ্র রায়ের ছেলে। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) তাকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে বুধবার (২৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তমালিকা পাল।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ আল রায়হান পাটোয়ারী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রতারক সঞ্জয় সেখানে রোগী দেখা শুরু করেন।
শুরুতে তার পরামর্শ ফি ৫০০ টাকা হলেও সম্প্রতি ২০ টাকার টিকেটে মাইকিং করে প্রলোভন দেখিয়ে রোগীর সংখ্যা বাড়াতে থাকেন।
এ নিয়ে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার রাতে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে অংশ নেয়া উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মাহতাব জানান, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তমালিকা পালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিমসহ বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার গুনবতী বাজারের মক্কা টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত নিউ পপুলার হাসপাতালে অভিযানে চালায়।
নামের মিল থাকায় প্রতারক সঞ্জয় এমিবিবিএস রেজিঃ নং-৬০৬৭৫ তার নামের পাশে ব্যবহার করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে। তার প্রদানকৃত রেজিঃ নাম্বার চেক করে দেখা যায় রেজিঃ নাম্বারটি সঞ্জয় কান্তি নাথ নামের সিনিয়র এক চিকিৎসকের।
প্রতারক সঞ্জয় চট্টগ্রামের সন্দিপ উপজেলার প্রখ্যাত চিকিৎসক সঞ্জয় কান্তি নাথের রেজিঃ নাম্বার এবং একই ঠিকানা ব্যবহার করে নিউ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে বসে অপচিকিৎসা চালিয়ে আসছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে।’
অভিযানকালে উপস্থিত থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, ‘গ্রামের সহজ সরল প্রকৃতির মানুষকে ২০ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া ডাক্তারের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে নিউ পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারটি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।’
নিউ পপুলার ডায়াগনষ্টিকের ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ডাঃ সঞ্জয় রেজিঃ নাম্বারটি তার বলে আমাদের জানায়। আমরা সে অনুযায়ী প্যাড এবং প্রচারপত্র বিলি করি।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তমালিকা পাল জানান, ‘বিগত ৬-৭ মাস যাবৎ সঞ্জয় কান্তি নাথ নামের এক চিকিৎসকের নাম রেজিঃ নাম্বার ব্যবহার করে সঞ্জয় চন্দ্র রায় এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছিল।
বুধবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে’।