কুমিল্লা সদর দক্ষিণে শিশু বাপ্পির লাশ নানার হাতে তুলে দেয় সৎ বাবা
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লায় আলোচিত শিশু বাপ্পি হত্যার দায় স্বীকার করেছে নিহতের সৎ বাবা ঘাতক সেলিম ওরফে রুবেল।
বুধবার রাতে পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর রুবেল ওই শিশুকে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করে মরদেহ ডোবায় ফেলে দেয়। পরে পানা দিয়ে ঢেকে রাখা সৎ ছেলের মরদেহ শ্বশুরের হাতে তুলে দিয়ে আত্মগোপন করে।
পরে বৃহস্পতিবার বিকালে আদালতেও একইভাবে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেছে ঘাতক।
সেলিম ওরফে রুবেল (২৫) জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার ধনাজোর গ্রামের মো. জলিল হক ওরফে ফজলু মিয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ১৭ এপ্রিল জেলার সদর দক্ষিণ মডেল থানাধীন ধনাজোর গ্রামের জলাশয় থেকে আরাফাত হোসেন বাপ্পি নামে ৭ বছরের এক শিশুর মৃত ও অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শিশু বাপ্পির মামা আল আমিন বাদী হয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
নিহতের সৎ বাবাকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। বুধবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের পর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নিহত বাপ্পির মা তাকে নিয়ে ঘাতক রুবেলকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরই মাঝে রুবেলের একটি ছেলে সন্তান হয়। বাপ্পিকে তার নানার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে রুবেল। কিন্তু তার মা কিছুতেই তাকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাননি। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল।
এরই মাঝে রুবেলের আপন ছেলের সঙ্গে সৎ ছেলে বাপ্পির খুনসুঁটি ঝগড়া হলে তাকে মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু ঘাতক সৎ বাবা তাকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য পরিকল্পনা করে।
গত ১৬ এপ্রিল বাপ্পিকে একই উপজেলার তারাপুর গ্রামে মামারবাড়ি থেকে কৌশলে ডেকে এনে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ধনাজোর গ্রামের একটি জলাশয়ে ফেলে দেয় রুবেল। পরে তাকে খুঁজে না পেয়ে তার নানা কান্নাকাটি শুরু করলে ঘাতক বাপ্পির মরদেহ দেখিয়ে পালিয়ে যায়।
সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরেই শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ঘাতক সৎ বাবা রুবেলকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হলে বৃহস্পতিবার বিকালে সে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।