জেনে নিন পোড়া রোগীর ঘরোয়া চিকিৎসা
স্বাস্হ্য কথা ডেস্ক।।
শরীর বিভিন্নভাবে পুড়ে যেতে পারে। যেমন- আগুন, গরম জলীয় বাষ্প, গরম পানি, ইলেকট্রিসিটি, রাসায়নিক দ্রব্য ও রেডিয়েশন এমনকি প্রখর সূর্যাতাপে শরীর পুড়ে যেতে পারে।
পোড়া রোগীর ঘরোয়া চিকিৎসার বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক এবং মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. রাজাশিস চক্রবর্তী।
পোড়া রোগীর চিকিৎসা মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।
পোড়ার গভীরতা
কতখানি জায়গা পুড়েছে
কোথায় পুড়েছে
সেলফ কেয়ার
প্রথম ডিগ্রি পোড়া
পোড়া জায়গায় দ্রুত ঠাণ্ডা পানি ঢালুন, ঠাণ্ডা পানির পাত্রে পোড়া হাত বা পা ডুবিয়ে রাখুন। যতক্ষণ ব্যথা থাকে ততক্ষণ এ অবস্থায় রাখুন অথবা মোটামুটি ১০ মিনিট রাখুন। এতে চামড়া কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ঠাণ্ডা পানি বা বরফ বেশিক্ষণ ব্যবহার করবেন না। এতে করে সম্পূর্ণ জায়গাটি একেবারে অবশ হয়ে যাবে এবং বিপদ বাড়বে। একে কোল্ড বার্ন বলে।
পোড়া ক্ষতটি উন্মুক্ত রাখুন এবং নিচু করে রাখবেন না। একেবারে শুকনো ড্রেসিং ব্যবহার করা যেতে পারে।
অনেকে মাখন বা হাতের কাছে পাওয়া মলম লাগিয়ে থাকেন পোড়া জায়গায়। এটি করা যাবে না। টুথপেস্ট বা গাছ-গাছড়ার পাতা বা রস লাগানো যাবে না।
লোকাল এনেসথেটিক ক্রিম বা স্প্রে অনেকে লাগান। এতে ক্ষত সারতে সময় বেশি লাগে এবং কারও কারও অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হয়। এগুলো ব্যবহার করবেন না।
দু’দিন পর থেকে যদি ইনফেকশন দেখা যায় তবে চিকিৎসক দেখান।
ইনফেকশন হলে
শরীরে ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি তাপ থাকবে, খিঁচুনি থাকতে পারে, ক্ষতস্থানে লাল, ফোলা অথবা পুঁজ হতে পারে এবং ব্যথা থাকে।
এসপিরিন ট্যাবলেট, প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন ভরা পেটে ব্যথার জন্য খেতে পারেন। এ ওষুধ বাচ্চাদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
দ্বিতীয় ডিগ্রি পোড়া (ভয়াবহ আকার ধারণ না করলে)
ক্ষত স্থানটি ঠাণ্ডা পানিতে (বরফ নয়) ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন বা যতক্ষণ ব্যথা থাকে ততক্ষণ রাখুন।
ঠাণ্ডা পানিতে পরিষ্কার কাপড় ভিজিয়ে নিংড়ান। তারপর সেটি ক্ষত স্থানে হালকা করে চেপে রাখুন। কিছুক্ষণ পর আবার উঠিয়ে ভিজান ও নিংড়ান। তারপর সেটি ক্ষত স্থানে হালকা করে চেপে রাখুন। কিছুক্ষণ পর আবার উঠিয়ে ভেজান ও নিংড়ান। এমন করে ঘণ্টাখানেক করুন। পরে বাতাসে ক্ষত স্থানটি শুকান। রগড়াবেন না।
কোনো ফুসকুড়ি ফাটাবেন না।
কোনো এন্টিসেপটিক স্প্রে, মলম, ক্রিম ব্যবহার করবেন না।
শোকানোর পর ক্ষত স্থানটি পাতলা একস্তরবিশিষ্ট গজ দ্বারা জড়িয়ে রাখুন যাতে চামড়ার সঙ্গে লেগে না যায়। ক্ষত স্থানটি থেকে দূরে গজটি টেপ দিয়ে আটকে রাখুন।
পরবর্তী দিন ড্রেসিং বদলাবেন। দুদিন পর পর আবার বদলাবেন। সম্ভব হলে ক্ষত স্থানটি শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে ওপরে রাখুন।
দুদিন পর ক্ষত স্থান ভালো না হলে বা ইনফেকশন হয়ে গেলে অবশ্যই চিকিৎসক দেখাবেন।