৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডেনমার্কের স্বপ্ন ভেঙে ফাইনালে ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক
ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের ডেনমার্ককে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় করে প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ইতালি।

ইউরোর দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বুধবার ওয়েম্বলিতে ২-১ গোলে জিতেছে ইংল্যান্ড।

নিজেদের সুদীর্ঘ ফুটবল ইতিহাসে এর আগে কখনোই ইউরোর ফাইনালে পৌঁছাতে পারেনি ইংলিশরা।

এবার তা করে দেখালো গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।
ম্যাচের মূল নায়ক হতে পারতেন আসলে ডেনমার্কের গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মাইকেল।

অসংখ্য শট নিয়েও নির্ধারিত সময়ে তাকে পরাস্ত করতে পারেনি ইংলিশরা। বরং অসীম বীরত্ব দেখিয়ে একের পর এক আক্রমণ প্রতিহত করেন তিনি।এমনকি অতিরিক্ত সময়ে ঠেকিয়ে দেন হ্যারি কেনের নেওয়া স্পটকিকও। তবে ফিরতি শটে সেই কেনের গোলেই শেষ হয় ক্যাসপারের প্রতিরোধ।

ম্যাচ শুরুর আগে ইউরোয় ডেনমার্কের প্রথম ম্যাচে মাঠেই হার্ট অ্যাটাকের পর আসর থেকে ছিটকে যাওয়া দলটির সবচেয়ে বড় তারকা এরিকসেনের নাম লেখা ইংল্যান্ডের একটি জার্সি ডেনমার্কের অধিনায়কের হাতে তুলে দেন হ্যারি কেন, যাতে ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের সই রয়েছে। এরিকসেন আবার টটেনহামে ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেনের সতীর্থ ছিলেন।

খেলা শুরুর কয়েক মিনিটে দুই দলের কেউই প্রতিপক্ষের বক্সে সেই অর্থে কোনো জোরালো আক্রমণ শানাতে পারেনি। তবে ত্রয়োদশ মিনিটে স্টার্লিংয়ের আক্রমণ প্রতিহত করেন ড্যানিশ গোলরক্ষক।

দুই মিনিট পর ডেনমার্কের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন হ্যারি কেন। যদিও তার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৫ মিনিটের মাথায় ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন ড্যামসগার্ড। ডান পায়ের শটে বল টার্গেটে রাখতে পারেননি তিনি।৩০তম মিনিটে দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে গোল করে ডেনমার্ককে এগিয়ে দেন ড্যামসগার্ড। চলতি ইউরোয় এই প্রথম গোল হজম করে ইংল্যান্ড। তবে খুব বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি ডেনমার্ক।

৩৯ মিনিটের মাথায় ড্যানিশ ডিফেন্ডার সাইমন জায়েরের আত্মঘাতী গোলে ইংল্যান্ড ম্যাচে ১-১ সমতা ফেরায়। ডান দিক থেকে আক্রমণে ওঠে আসা ইংলিশ উইঙ্গার সাকা বক্সের মাঝ বরাবর ক্রস দেন। দারুণ ক্রসে স্টার্লিং পা লাগানোর আগেই স্লাইড করতে গিয়ে নিজদের ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে দেন ড্যানিশ অধিনায়ক।

জায়েরের আগে ইউরোয় আর কোনও ড্যানিশ ফুটবলার আত্মঘাতী গোল করেননি। চলতি ইউরোয় এই নিয়ে মোট ১১টি আত্মঘাতী গোল হলো। আগের সবক’টি ইউরো মিলিয়ে মোট ৯টি আত্মঘাতী গোল হয়েছিল।

দ্বিতীয়ার্ধে ইংলিশদের বেশকিছু আক্রমণ প্রতিহত হয় ড্যানিশদের রক্ষণে। এর মধ্যে ৫৫ মিনিটের মাথায় হ্যারি মাগুইরের আক্রমণ ডান দিকে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন ড্যানিশ গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মিকেল। এর কিছুক্ষণ পর ফের মাগুইর ডেনমার্কের জালে বল জড়ানোর চেষ্টা করেন। যদিও বল মাঠের বাইরে চলে যায়। ৬৪ মিনিটের মাথায় মাউন্টের আক্রমণ প্রতিহত করেন ক্যাসপার। ৭৩তম মিনিটে মাউন্টের ক্রস জালে জড়ানো থেকে আটকান ড্যানিশ গোলকিপার।

নির্ধারিত সময়ের শেষদিকে চাপ বাড়ায় ইংল্যান্ড। ৮০ মিনিটের মাখায় ফিলিপসের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৮৩ মিনিটের মাথায় স্টোনসের হেডার লক্ষভ্রষ্ট হয়। অপরদিকে রক্ষণের দেয়াল তুলে ইংলিশদের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যস্ত সময় কাটায় ডেনমার্ক। যোগ করা সময়ে ফের মাগুইরের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান ক্যাসপার। সমতা বিরাজ করায় এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ২০০০ সালের পর থেকে এই প্রথমবার ইউরোর দু’টি সেমিফাইনাল গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার আসরের প্রথম সেমিতে ইতালি ও স্পেনের মধ্যকার ম্যাচটির ভাগ্য নির্ধারিত হয় টাইব্রেকারে।

অতিরিক্ত সময়েও ড্যানিশ গোলরক্ষক ক্যাসপার ছিলেন রীতিমত দুর্ভেদ্য। ৯৪তম মিনিটে হ্যারি কেনের নিচু শট জালে জড়ানোর আগেই ঠেকিয়ে দেন তিনি।

১০২তম মিনিটে নিজেদের বক্সে স্টার্লিংকে ফাউল করে বসেন মাহলে। রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি উপহার দেন ইংল্যান্ডকে। কিন্তু কেনের শট ঠেকিয়ে দেন ক্যাসপার। তবে ফিরতি শটে বল জালে জড়ান ইংলিশ অধিনায়ক।

প্রায় ৯টি নিশ্চিত গোল হজম করা থেকে দলকে বাঁচালেও শেষদিকে আর পেরে উঠলেন না ক্যাসপার। সেই সঙ্গে রচিত হলো না ড্যানিশ রূপকথাও।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!