৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের নবম বিভাগ হচ্ছে কুমিল্লা ফেসবুকে ভাইরাল!

👁️মহানগর নিউজ ডেস্ক ✒️
[দেশের নবম বিভাগ হচ্ছে কুমিল্লা ফেসবুকে ভাইরাল!] ‘কথাটি কি সত্যি?’ -প্রশ্নটি এখন বৃহত্তর কুমিল্লা-চাঁদপুর অঞ্চলের যে কোন সচেতন নাগরিকের মুখে মুখে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ‘বাংলাদেশের টি-টুয়েন্টি সিরিজ জয়’, ‘করোনায় দুই শতাধিক মৃত্যু’ সব কিছুকে ছাপিয়ে ফেসবুকের ভাইরাল সংবাদ ‘সোমবারের মধ্যে ঘোষণা আসছে, দেশের নবম বিভাগ হচ্ছে কুমিল্লা।’

যদিও প্রতিটি পোস্টের কমেন্ট বক্সে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছেন নানান মতাদর্শের মানুষ।

নেটিজেনদের আলোচনায় স্থান পাচ্ছে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক রেলমন্ত্রী মজিবুল হকের উদ্ধৃতিও। মজিবুল হকের উদ্ধৃতি দিয়ে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আরশ মজুমদার লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, কুমিল্লা (নামেই) বিভাগ হচ্ছে। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।’

অর্থমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে মাজহারুল ইসলাম লিখেছেন, আজ (সোমবার) কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণা হচ্ছে, অবশেষে কুমিল্লা নামেই বিভাগ পেতে যাচ্ছি। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মাননীয় অর্থ মন্ত্রী জনাব আ হ ম মুস্তফা কামাল এফ সিএ (লোটাস কামাল) এমপি।

আইনমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্র আহসান কবীর বলেন, দেশের নবম বিভাগ হচ্ছে কুমিল্লা, আইনমন্ত্রী কুমিল্লা এসেই বলেছেন, কুমিল্লা বিভাগ হওয়ার সিদ্ধান্ত এবং সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন ঘোষণার অপেক্ষায় কুমিল্লা বিভাগ। আইনমন্ত্রী কি মিথ্যা বলবেন ভাই?

‘অবশেষে কুমিল্লার নামেই হচ্ছে কুমিল্লা বিভাগ’ সংবাদটি গুজব নাকি সত্যি সে আলোচনায় না গিয়ে যদি ধরেই নেওয়া হয় ঘোষণাটি সঠিক তবে কি খুব বেশি অবাক হবেন? যেখানে মাত্র ৪টি জেলা নিয়ে দেশের ৮ম বিভাগ হিসেবে ময়মনসিংহ যাত্রা শুরু করলো, সেখানে ৬টি বৃহত্তর-মাঝারি আকৃতির জেলা নিয়ে কুমিল্লা বিভাগ হওয়াটাই কি যৌক্তিক নয়?

কুমিল্লা বিভাগ হওয়ার এ আলোচনা এখন থেকে নয়, সেই ২০১৫ সাল থেকে শুরু। তারপর কেটে যাচ্ছে আরও ৬টি বছর। আসেনি কোন সুসংবাদ। ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারী মন্ত্রীসভার বৈঠকে নতুন দুটি বিভাগের অনুমোদনের প্রস্তাব করা হয়েছিলো। যার একটি ছিলো ‘ফরিদপুর’ যা ঢাকা বিভাগের পাঁচটি জেলা নিয়ে গঠিত হওয়ার কথা।

প্রস্তাবনার অন্য বিভাগটি ছিলো ‘কুমিল্লা’, যা চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী – এই ছয়টি জেলা নিয়ে গঠিত হওয়ার কথা। এ দু’টি জেলার মধ্যে ভৌগোলিক অবস্থান এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের দিক থেকে কুমিল্লা জেলাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে।

ভৌগলিক অবস্থান, যোগাযোগ, রাজধানী থেকে সহজ যাতায়াত, প্রস্তাবিত বিভাগের ৬ জেলার প্রাণকেন্দ্র ও অর্থনৈতিক অঞ্চল সবদিক থেকেই কুমিল্লাই দেশের পরবর্তী বিভাগ হওয়ার জোর দাবি রাখে।

কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সংক্ষেপে যেটি ‘কুমিল্লা ইপিজেড’ নামে পরিচিত) বাংলাদেশের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, যা বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় শহর কুমিল্লার পুরাতন বিমান বন্দর এলাকায় অবস্থিত। ২৬৭.৪৬ একর এলাকার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই ইপিজেডটি বাংলাদেশের ৪র্থ বৃহত্তম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা।

রয়েছে একটি বিমান বন্দর, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)। বৃহত্তর কুমিল্লা-চাঁদপুর-নোয়াখালী অঞ্চলের শিক্ষা বোর্ডটি কুমিল্লাতেই অবস্থিত।

কুমিল্লা বৈদেশিক রেমিট্যান্স দিয়ে সারা বাংলাদেশে ১ম। রয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও শালবন বিহার, প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর সহ বহু প্রচীন ঐতিহ্যের সাক্ষী কুমিল্লা অঞ্চল। তাই কুমিল্লাই হতে পারে ৬ জেলা নিয়ে গঠিত বিভাগের নাম।

যদিও কিছুদিন পূর্বে আলোচনায় এসেছিলো, কুমিল্লা নয় নতুন বিভাগটির নাম হবে ময়নামতি বিভাগ। তা নিয়ে প্রতিবাদ জানায় কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষ।

কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুলের শিক্ষার্থী রায়হান উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম অবশেষে সফলতার পথে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বছরখানেক পূর্বে ‘কুমিল্লা বিভাগ’ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা আশায় বুক বেঁধেছি। কিন্তু এখন নতুন করে আরেক ঝামেলা শুরু হয়েছে। এখন কুমিল্লা বাদ দিয়ে নতুন বিভাগের নাম ‘ময়নামতি’ করার কথা হচ্ছে। আমি এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই।

আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে একনেক সভায় ‘কুমিল্লা’ দেশের নবম বিভাগ হওয়ার ঘোষণা আসলে খুব একটা অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

বর্তমানে বাংলাদেশের মোট প্রশাসনিক বিভাগের সংখ্যা আটটি। এর মধ্যে সবচেয়ে নবীন ‘ময়মনসিংহ বিভাগ’। ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিভাগের চারটি জেলা- জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা নিয়ে নবীনতম বিভাগটি গঠিত হয়।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!