বাড়ির ছোট্ট শিশুটি করোনায় আক্রান্ত হলে কী ভাবে পরিচর্যা করবেন? বললেন চিকিৎসকেরা
নিউজ ডেস্ক
শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বাড়ছে, তাই মাথায় রাখতে হবে পরিচর্যার কথা।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে সংক্রমিত হতে পারে শিশুরাও। এমন আশঙ্কা করছেন বহু চিকিৎসক। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) বলছে, তুলনায় কম বয়সিদের মধ্যে সংক্রমণের হারও বাড়ছে। যদিও বেশির ভাগ রিপোর্ট বলছে, শিশুদের সংক্রমণ হলেও তার মাত্রা তুলনায় কম থাকে। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে ‘ভাইরাল লোড’ বলা হয়, এখনও পর্যন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে তার মাত্রা তুলনায় কম। অন্তত পরিসংখ্যান তাই বলছে।কিন্তু তার পরেও শিশুদের সংক্রমণ হলে, কী করবেন?
শিশু চিকিৎসক ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, বড়দের ক্ষেত্রেও যেমন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয়, শিশুদের ক্ষেত্রেও তাই করতে হবে।‘ওদের আলাদা ঘরে নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা প্রাথমিক দায়িত্ব,’ বলছেন তিনি। কিন্তু শিশুটি খুব ছোট হলে সেটি সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মা’কে ওর পরিচর্যা করতে হবে, এমনই পরামর্শ তাঁর।
‘ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ’-এর ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের মতে, আক্রান্ত শিশুর পরিচর্যা করার সময় মা’কে দু’টি মাস্ক একসঙ্গে পরতে হবে। নিয়মিত ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।‘খুব ছোট শিশুরা আক্রান্ত হলে, তাদের স্তন্যপানও করানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রেও দু’টি মাস্ক একসঙ্গে পরে খাওয়াতে হবে,’’ বলছেন তিনি।
খুব ছোট শিশুদের স্তন্যপান তো চলবেই, তার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন ত্রিদিব। ‘‘জ্বর বাড়লে, তার ওষুধ। অন্য সমস্যা হলে, সেটার ওষুধ দিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে,’’ বলছেন তিনি।
ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিত মাল্টিভিটামিন খাওয়ানো যেতে পারে। তবে সেটাও চিকিৎসকের থেকে জেনেই। এমনই মত অপূর্বর। তাঁর কথায়, ‘স্কুল বন্ধ, বাইরে বেরোনো বন্ধ। রোদের সংস্পর্শে না আসার ফলে সব শিশুরই এখন ভিটামিন ডি-র অভাব হচ্ছে। এই ভিটামিন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তা ছাড়া ঠান্ডা ঘরে দীর্ঘদিন জমিয়ে রাখা ফল বা আনাজে ভিটামিনের মাত্রা কমে যায়। তাই চিকিৎসকের থেকে জেনে সঠিক পরিমাণে মাল্টিভিটামিন দেওয়া যেতে পারে পারে আক্রান্ত শিশুকে,’’ বলেছেন তিনি।
কিন্তু যদি শিশু এবং বাবা-মা একসঙ্গে আক্রান্ত হন? সে ক্ষেত্রে কি বাড়ির অন্য সদস্যরা দেখভাল করতে পারেন শিশুর? এই বিষয়ে স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিচ্ছেন অপূর্ব ঘোষ। তাঁর মতে, বেশির ভাগ শিশুরই উপসর্গ থাকে না। খুব হালকা সংক্রমণ হয়ে তা সেরে যায়। কিন্তু আক্রান্ত শিশুর দায়িত্ব এই সময় কোনও ভাবেই বাড়ির বয়স্কদের হাতে ছাড়া যাবে না। ‘অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধাই নাতি-নাতনির প্রতি অপত্য স্নেহ থেকে তাদের দায়িত্ব নিয়ে নেন। এটা মনে রাখতে হবে, এই সংক্রমণ থেকে শিশুটির যতটা ভয়, তার চেয়ে অনেক বেশি ভয় বয়স্কদের। ফলে তাঁদের থেকে আক্রান্ত শিশুদের দূরে রাখতেই হবে,’ বলছেন তিনি।