১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিয়ে বাড়িতে বকশিশ না দেয়ায় সংঘর্ষ, বর কনেসহ আ’হত ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
বিয়ে বাড়ির খাওয়া শেষে বরের হাত ধুইয়ে দেয়ার বিনিময়ে বকশিশ নেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে বর ও কণে পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

আহতদের মুরাদনগর ও দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর বিয়ে সম্পন্ন না করেই বরপক্ষ কনের বাড়ি থেকে ফিরে গেছে।

রবিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় মুরাদনগর উপজেলার ১৮নং ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামের সাবেক মেম্বার আমির হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বর মো. সাদেক হোসেন (২৬) দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের পশ্চিমপাড়া পাইঞ্জত আলী মূন্সী বাড়ির মোঃ ইসমাইল মূন্সীর পুত্র এবং কণে মোসা- সোনিয়া আক্তার (১৮), মুরাদনগর উপজেলার ১৮ নং ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নেয়ামতকান্দি গ্রামের মো. শানু মিয়ার কণ্যা বর এবং কণেপক্ষ পূর্ব ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে গত রোববার (১৬ অক্টোবর) পারিবারিক ভাবে বিয়ের দিন ধার্য ছিল।

রোববার (১৬ অক্টোবর) দুপুরের পর বরযাত্রী কনের বাড়িতে গেলে, বিয়ের গেইটের সালামি নিয়ে প্রথমে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। পরে খাওয়া দাওয়ায় বরপক্ষকে খাবার পরিমাণে কম দেওয়াতে এবং বরের হাত ধোয়ানোর বকশিশের টাকা নিয়ে আবারও দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

এ নিয়ে দুই পক্ষ হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে বরের পক্ষের ১৫ জন ও কনে পক্ষের ৮-১০ জন আহত হয়।

আহতদের মধ্যে সাইফুর ইসলাম, সায়মা বেগম, কামাল হোসেন, ফয়েজ আহমেদ, জুয়েল আহমেদ, বাবু, হেলালসহ কয়েক জনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। সংঘর্ষের কারনে বিয়ে সম্পন্ন না করেই ফিরে যান বরযাত্রীরা।

কনের বড় ভাই মো. গিয়াস উদ্দিন মুরাদনগর থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করেন, বর পক্ষ ১৫০ জন বরযাত্রী নিয়ে আসার কথা থাকলেও তারা ১৬০ জন বরযাত্রী নিয়ে আসেন।

তাদের খাওয়া দাওয়া শেষ করার পর বরের হাত ধোয়ার বকশিশের দরকষা-কষিতে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এক পর্যায়ে কনের পক্ষের মেয়েদেরকে বরপক্ষের লোকজন অকথ্যভাষায় গালমন্দ, মারধর ও শ্লীলতাহানী ঘটায়।

এ অবস্থায় ওই বাড়ির লোকজন বরপক্ষকে শান্ত করতে গেলে তারা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের লোকদের উপর হামলা চালায়।

এসময় কনে সোনিয়া আক্তার, মো. সোহেল মিয়া, সানাউল্লাহ, মো. শিপন মিয়াসহ ৮-১০জন মারাত্মক আহত হয়। অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করেন, বরপক্ষের লোকজন কনের কক্ষে ঢুকে স্বর্নালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়।

এ ব্যপারে বরের ভাই মো.সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা বিয়ে বাড়ির সদর দরজায় আসার পর বখশিশের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমরা পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ হাজার টাকার পরও আরো ৫শত টাকা দিলে কণে পক্ষের লোকজন গেইটের চেয়ার-টেবিল ছুড়ে ফেলে দেয়। বরযাত্রী ১৩০ জন যাওয়ার কথা থাকলেও ১২০ জন গিয়েছি।

তারপরও খাবার দেয়ার ক্ষেত্রে বরপক্ষের লোকদের খাবার দিতে পারে নাই। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বরের পরিহিত জামাকাপড় ছিড়ে ফেলে। আমাদের মহিলা দাওয়াতীদের উপরও মারাত্মক হামলা চলে। আমি থামাতে গেলে মারধরের আঘাতে অচেতন হয়ে পড়ি।

সোমবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বর পক্ষকে খাবার কম দেওয়াতে উভয় পক্ষের মারামারির অভিযোগ পেয়েছি, আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!