১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বয়স অনুযায়ী একজন সুস্থ মানুষের ঘুমের সঠিক পরিমাণ জেনে নিন

লাইফস্টাইল ডেস্ক।।
ঘুম আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। সারাদিন একটি দীর্ঘ সময় কঠোর পরিশ্রমের পরে বিছানায় যাওয়ার চেয়ে ভালো কিছু নেই। বিশ্রাম এবং পুনরুদ্ধারের জন্য ভালো ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমালে ভালো স্বাস্থ্যের সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু রাতে আমাদের কত সময় ঘুমানো দরকার? মানুষ সাধারণত মনে করেন যে দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো যথেষ্ট, কিন্তু এই কথাটা সবসময় সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাই আজকে আমরা বয়স অনুযায়ী মানুষের ঘুমের পরিমাণ আপনাদের জানাবো।

ঘুমের অভাব

অধিকাংশ মানুষেরাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভালো বিশ্রাম পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু ইন্টারনেটে সর্বশেষ ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখার জন্য ঘুম উপেক্ষা করাটা বাজে অভ্যাস। প্রথমত, ঘুমের অভাব ভবিষ্যতের ঘুমের নেতিবাচক প্রকৃতিকে প্রভাবিত করে। দ্বিতীয়ত, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া আমাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাকে দুর্বল করে তোলে এবং এর কারণে গুরুতর পরিণতি হতে পারে।

অপর্যাপ্ত ঘুম যে সমস্যা ও রোগের ঝুঁকি বাড়ায় তা হলোঃ

– অবসাদ/ক্লান্তি

– ডিপ্রেশন/বিষণ্নতা

– হরমোন ফাংশনে পরিবর্তন

– কার্ডিওভাসকুলার রোগ

– দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি করে

– ডায়াবেটিস

এছাড়াও, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব শরীর এবং চেহারার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন- ওজন বৃদ্ধি, চোখের নিচে কালো দাগ, বিবর্ণতা এবং খারাপ চেহারা। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবের কারণে কাজে মনোযোগী হতে পারে না, দৈনন্দিন কার্যকারিতা হ্রাস করে এবং অকালে বার্ধক্যে পরিণত করে।

বয়স অনুযায়ী ঘুমঃ

বয়স শুধুমাত্র আমাদের অবস্থা এবং দেহের ফাংশনের উপর প্রভাবিত করেনা। বিজ্ঞানীরা ভালো ঘুমের জন্য বয়স এবং ঘন্টার পরিমাণের মধ্যে সমন্বয় সাধন করেছেন।

০-৩ মাসঃ ১৪-১৭ ঘন্টা

৪-১১ মাসঃ ১২-১৫ ঘন্টা

১-২ বছরঃ ১১-১৪ ঘন্টা

৩-৫ বছরঃ ১০-১৩ ঘন্টা

৬-১৩ বছরঃ ৯-১১ ঘন্টা

১৪-১৭ বছরঃ ৮-১০ ঘন্টা

১৮-২৫ বছরঃ ৭-৯ ঘন্টা

২৬-৬৪ বছরঃ ৭-৯ ঘন্টা

৬৫+ বছরঃ ৭-৮ ঘন্টা

৩ মাস বয়সী সবচেয়ে বেশী সময় ঘুমানো দরকার। ১৮ বছরের নিচে বয়সী শিশুদের রাতে ৮ ঘন্টার বেশী সময় ঘুমানো উচিৎ। তারপর ধীরে ধীরে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ঘুমের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে থাকবে এবং একজন ব্যক্তির ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত পৌঁছানোর পরেই কেবল পরিবর্তন দেখা দেয়। কিন্তু এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, প্রত্যেক ব্যক্তিরই নিজস্ব স্বতন্ত্র চাহিদা রয়েছে যেখানে এই সংখ্যার পরিবর্তন করতে পারে।

ভালো ঘুমের জন্য যা করবেনঃ

আপনার ঘুমের স্বভাব এবং সময়ের দিকে মনোযোগ দেয়া দরকার। খারাপ ঘুম স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম পেতে এবং প্রতিদিন নিজেকে ঝরঝরে রাখার জন্য এই টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন।

– আপনার দিন এবং রাত আলাদা করুন। এটা মনে রাখা জরুরী যে মানুষের দিনের বেলা সজাগ থাকা এবং রাতে ঘুমানো উচিৎ। আপনি যদি এই নিয়মটা ভাঙ্গেন তাহলে আপনার ঘুমের সমস্যা হতে পারে।

– প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যান এবং একই সময় ঘুম থেকে উঠুন

– ঘুমানোর আগে টনিক পানীয় পান করবেন না

– রাতে বেশী পরিমাণ খাবার খাবেন না

– ঘুমানোর কক্ষে স্বাচ্ছন্দ্য এবং আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করবেন

– একটি আরামদায়ক বিছানা বাছাই করবেন

– খোলা বাতাসে কিছুক্ষণ হাঁটলে আপনার অতি শীঘ্রই ঘুম চলে আসবে

– ঘুমাতে যাওয়ার আগে কোন গ্যাজেট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে চেষ্টা করুন এবং রাতে ফ্যান ছাড়া বাকি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিগুলো বন্ধ করুন।

– শারীরিক কার্যকলাপ এবং আরামের কৌশলগুলোর দিকে মনোযোগী হোন

পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হওয়াটা জটিল। আপনি এই সহজ কাজগুলো করে আপনার ঘুম ভালো করতে পারেন এবং এতে আপনি সুখী এবং সুস্থ থাকবেন।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!