১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুশফিকই প্রথম

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির মাস সেরা পুরুষ খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং করার পুরস্কার পেয়েছেন। দুই পেসার পাকিস্তানের হাসান আলি এবং শ্রীলঙ্কার প্রবীণ জয়বিক্রমাকে পেছনে ফেলে মে মাসের সেরা ক্রিকেটারের খেতাব জিতেছেন বাংলাদেশের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডেতে ভালো নৈপুণ্য আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে। লঙ্কানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে সিরিজ জয়ে অবদান ছিল মুশফিকের। তিন ওয়ানডেতে ৮৪, ১২৫ ও ২৮ রান করেন তিনি। সিরিজটিতে তার ব্যাট থেকে এসেছিল মোট ২৩৭ রান। প্রথম বারেরমতো দলটির বিপক্ষে সিরিজও জেতে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচেই ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়া মুশফিক সিরিজটিতেও সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার আইসিসির স্বীকৃতিও জুটল তার নামে পাশে।

আইসিসির মাস সেরা খেলোয়াড় নির্বাচন কমিটির প্রতিনিধি ভিভিএস ল²ণ বলেন, ‘১৫ বছর ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলার পরেও মুশফিকুর রহিমের রানক্ষুধা এতটুকু কমেনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠের সিরিজে মেজাজ দেখিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে। দ্বিতীয় ম্যাচের ১২৫ রানের ইনিংসটি তার ধারাবাহিকতার প্রতীক, ওই ইনিংসের সাহায্যে ম্যাচটিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ।’ মুশফিকের এই ইনিংসের মাহাত্ত্ব্য তুলে ধরতে গিয়ে ভারতীয় ব্যাটিং কিংবদন্তি যোগ করেন, ‘মুশফিকের ইনিংসটি বিশেষ আরও এই কারণে যে ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপজয়ীদের (শ্রীলঙ্কা) বিপক্ষে এটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়। মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত ব্যাটিং ও সেই সাথে উইকেটরক্ষণের কাজ করা প্রমাণ করে মুশফিকের দারুণ ফিটনেস ও দক্ষতার।’

অভাবনীয় এই অর্জনে আইসিসি ও সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুশফিক। অভিনব এই অর্জনে আপ্লুত বাংরাদেশের অনেক অর্জনের সাক্ষী এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বলেন, ‘সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। বিশেষ করে আইসিসিকে, আমাকে মে মাসের সেরা খেলোয়াড়ের তালিকায় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য। তার চেয়েও বেশি ধন্যবাদ জানাচ্ছি যারা আমাকে ভোট করেছেন তাদের। আমি মনে করি, শুধু আমাকে না, বাংলাদেশকে আপনারা জিতিয়েছেন।’

মুশফিক মে মাসের মত ধারাবাহিক থাকতে চান পুরো বছরজুড়ে, দলকে জেতাতে চান আরও অনেক ম্যাচে। তিনি বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমার চেষ্টা থাকবে সবসময়। শুধু মান্থ অব দ্য প্লেয়ার না, আমি চেষ্টা করব সারা বছর জুড়েই যেন ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বজায় থাকে এবং বাংলাদেশকে যেন আমি আরও ভালো ভালো ইনিংস উপহার দিতে পারি, ম্যাচ জেতানোর মত ইনিংস উপহার দিতে পারি।’

একই দিন মে মাসের সেরা নারী ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃতি মিলেছে স্কটল্যান্ডের অলরাউন্ডার ক্যাথরিন ব্রেইসেরও। তিনি হারিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের দুই জন, বাঁহাতি স্পিনার লিয়া পল ও লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার গ্যাবি লুইসকে। আইরিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দারুণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেন ব্রাইস। চার ম্যাচ খেলে ৯৬ রানের পাশপাশি ৪.৭৬ গড়ে নেন ৫ উইকেট। এই পারফরম্যান্স তাকে নারী-পুরুষ মিলিয়ে স্কটল্যান্ডের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ দশে জায়গা করে দেয়। টি-টোয়েন্টি ব্যাটারদের তালিকায় ১০ নম্বরে আর অলরাউন্ডার হিসেবে তিনে আছেন ব্রাইস।

চলতি বছর থেকে প্রতি মাসের সেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি দেওয়া শুরু করেছে আইসিসি। নির্দিষ্ট মাসে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বিচার করে তৈরি করা হয় সংক্ষিপ্ত তালিকা। তারপর আইসিসির ভোটিং একাডেম এবং বিশ্বের ছড়িয়ে থাকা ভক্তদের ভোটে নির্বাচন করা হয় সেরা ক্রিকেটার। আইসিসির ভোটিং একাডেমিতে থাকেন ক্রীড়া সাংবাদিক, সাবেক ক্রিকেটার, ব্রডকাস্টার ও আইসিসির হল অব ফেইমের সদস্য।

প্রথম তিন মাসেই সেরা পুরুষ ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন ভারতের ক্রিকেটাররা। জানুয়ারিতে রিশভ পান্ত, ফেব্রুয়ারিতে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও মার্চে ভুবনেশ্বর কুমার। এপ্রিলে এই পুরস্কার ওঠে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের হাতে। আর এই চার মাসে সেরা নারী ক্রিকেটার হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার শাবনিম ইসমাইল, ইংল্যান্ডের ট্যামি বিউমন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার লিজেল লি ও অস্ট্রেলিয়ার কিপার-ব্যাটার এলিসা হিলি।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!