২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৭ কেজির রুপালি পোয়া মাছটি দাম ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকায়

নিউজ ডেস্ক।।
টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে ধরা পড়া ২৭ কেজি ওজনের রুপালি পোয়া মাছ। শনিবার দুপুরে মিস্ত্রীপাড়া ঘাটে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে ধরা পড়া ২৭ কেজি ওজনের রুপালি পোয়া মাছ।

শনিবার দুপুরে মিস্ত্রীপাড়া ঘাটে কক্সবাজারের টেকনাফে ধরা পড়া ২৭ কেজির কালা পোপা মাছটি ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

আজ শনিবার ভোররাতে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা শাহ আলম কোম্পানির ট্রলারের জালে পুরুষ প্রজাতির এ মাছটি ধরা পড়ে। মাছটি শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে কক্সবাজারের ফিশারিজ ঘাটে বিক্রি হয়। ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকায় মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া নামে একজন মৎস্য ব্যবসায়ী এটি কিনে নিয়েছেন। রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ট্রলারে মালিক শাহ আলম কোম্পানি।

শাহ আলম কোম্পানি বলেন, মাছটি বর্তমানে শাহপরীর দ্বীপে ফিশারিজে রাখা হয়েছে। এটি বিকেলে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার ফিশারিজ ঘাটে নিয়ে আসা হয়। সেখানে সাড়ে ৬ লাখ টাকা দাম হাঁকালে মৎস্য ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন।মাছটি কিনে নেওয়ার পর সিরাজ মিয়া বলেন, পোপা মাছটি চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করার জন্য পাঠানো হয়েছে। বিদেশে মাছ ও মাছের পটকা রপ্তানি করে থাকেন সে রকম কয়েকজন ব্যবসায়ী সঙ্গে কথা হয়েছে। এ মাছের পটকা বা ফুসফুসটির ওজন ৯০০ গ্রামের বেশি হলে বিক্রি করে আরও ভালো লাভ হবে।

চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ৩৭ কেজি ওজনের আরও একটি কালা পোপা মাছ ধরা পড়েছিল একই জেলেদের ট্রলারে। এবার কক্সবাজারের টেকনাফে ওই জেলেদের জালেই ধরা পড়েছে ২৭ কেজি ওজনের আরও একটি পোপা মাছ। স্থানীয় লোকজন ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় মাছটি ‘কালা পোপা’ নামে পরিচিত। তবে এটি বেশি পরিচিত ‘রুপালি পোয়া’ নামে। এটি লম্বায় প্রায় সাড়ে তিন ফুট।

টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ২৭ কেজি ওজনের বড় পোয়া মাছটি ধরা পড়ার খবর তিনি শুনেছেন। সাধারণত এত বড় পোয়া মাছ ধরা পড়ে না। এই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম Mycteroperca bonaci। পোয়া মাছের বায়ুথলি বা এয়ার ব্লাডারের কারণে মাছটির মূল্য বেশি। এয়ার ব্লাডার দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি হয়।

ট্রলারের চালক হোসেন আহমেদ বলেন, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে তাঁর নেতৃত্বে ট্রলারে ১০ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে জাল ফেলেন।

ভোররাত তিনটার দিকে জাল টেনে তুললে বড় একটি মাছ ধরা পড়েছে দেখা যায়। পরে ট্রলারের ১০ জন জেলে দেড় ঘণ্টা ধরে জাল টানেন। ওই জালে অন্যান্য মাছের সঙ্গে উঠে আসে বড় ওই পোয়া মাছটি। এই মাছ জালে ধরা পড়ায় জেলেরা সবাই খুশি। কারণ, এই মাছ কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব।

জেলের জালে ধরা পড়া ২৭ কেজি ওজনের রুপালি পোয়া মাছ। শনিবার দুপুরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রীপাড়া ঘাটে জেলের জালে ধরা পড়া ২৭ কেজি ওজনের রুপালি পোয়া মাছ।

ট্রলার মালিক শাহ আলম বলেন, সাগর থেকে জেলেরা বড় মাছ জালে ধরা পড়ার বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে বড় মাছ ধরা পড়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং আজ সকাল আটটার দিয়ে মাছ নিয়ে ট্রলারটি মিস্ত্রিপাড়া ঘাটে পৌঁছালে উৎসুক জনতা মাছটি দেখার জন্য ঘাটে ভিড় করেন।

এই মাছে এক কেজির বেশি পটকা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাছের চেয়ে মাছের পেটে থাকা পটকার দাম বেশি হওয়ায় এত বেশি দামে এটি বিক্রি হয়।

শাহপরীর দ্বীপের মাছ ব্যবসায়ী নুরুল কবির বলেন, বছরের শুরুতেই আরও একটি কালা পোপা মাছ ধরা পড়েছিল এ ট্রলারে। এর মাছের পটকা থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে রপ্তানি হয়। তাই এ মাছের এত দাম। শুকনা প্রতি কেজি পটকার দাম প্রায় তিন লাখ টাকা।

টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, পোয়া মাছের পটকার দাম অনেক বেশি। তাই জেলেদের কাছে পুরুষ পোয়া মাছের কদর বেশি। তিনি আরও বলেন, মাছটির মুখ ছোট, চোখ বড়, পাখনার ওপরের অংশে হলুদ ও কালো দাগ।

সাবরাং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফজলুল হক বলেন, এই মাছের দাম প্রচুর পাওয়া যায়। চলতি বছরের ৮ মার্চ ৩৬ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজনের পোয়া মাছ বিক্রি করা হয় ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ২৮ কেজি ওজনের একটি পোয়া মাছ বিক্রি হয়েছিল ১ লাখ ৯১ হাজার টাকায়।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!