বেশি দামের আশায় ইয়াবা নিয়ে সৌদি যাচ্ছিলেন কুমিল্লার সাদ্দাম
👁️মহানগর নিউজ ডেস্ক ✒️
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জব্দ হওয়া ৯ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট কম মূল্যে কুমিল্লার বিভিন্ন মাদক কারবারির কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন আটক সাদ্দাম। এ ইয়াবা সৌদি আরবে পাচারের পর অধিক মূল্যে বিক্রির উদ্দেশ্য ছিল তার।
বুধবার (২৮ জুলাই) ভোর ৬টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সৌদি আরবগামী যাত্রী সাদ্দামকে আটক করে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
বুধবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কেনপি-১ এ আযোজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জিয়াউল হক।
আটক সাদ্দামের শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সালাম এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে করে প্রথমে ওমানের মাস্কাট এবং কানেন্টিং ফ্লাইটে করে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে যাওয়ার কথা ছিল। আজ সকাল ৯টা ২০ মিনিটে তার ফ্লাইট ছিল। তবে তিনি ভোর ৬টার দিকে বিমানবন্দরে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জিয়াউল হক বলেন, ‘সন্দেহভাজন হিসেবে আটকের পর সাদ্দামকে প্রথমে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ইয়াবা থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে তার দেহ ও ব্যাগ তল্লালি করে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় ৮ হাজার ৯৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘সাদ্দামের ব্যাগ খুলে উপরে অনেক কাপড় দেখা যায়, তার নিচে সেলাই করা ব্যাগের একটি কাভার ছিল। ওই কাভারের ভেতরে কার্বন পেপার ও স্কচটেপ মোড়ানো অবস্থায় এসব ইয়ারা থাকতে দেখা যায়।’
এপিবিএনের এই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পারি, তিনি এই ইয়াবাগুলো ২০০/৩০০ টাকা পিস হিসেবে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। এগুলো যদি তিনি সৌদি আরবে নিয়ে যেতে পারতেন, তবে প্রতি পিস এক থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। সেখানে প্রতি পিস ইয়াবাতে তার ৮০০-১৩০০ টাকা করে লাভ থাকতো।’
জিয়াউল হক বলেন, ‘তার বাড়ি কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায়। সেখানে ইয়াবা পাচারের একটি চক্র রয়েছে। ওই চক্রটি তাকে সৌদি আরবে যাওয়ার টিকিট বা ভিসা করে দিয়েছে।
জানা গেছে, এই ইয়াবাগুলো বিক্রির পর সাদ্দামও একটি লভ্যাংশ পেতেন। ইয়াবাগুলো নিয়ে তিনি সৌদি আরবের দাম্মামের এক প্রবাসীর কাছে হস্তান্তর করতেন।’
ইয়াবা পাচার তার এটাই প্রথম নয় উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি। ২০২০ সালে সাদ্দাম ইয়াবা পাচারের সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেই মামলায় তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। এরই মধ্যে ইয়াবার বড় এই চালান তিনি সৌদি আরবে পাচার করতে যাচ্ছিলেন। তিনি এই পথে নতুন নয়।’
সৌদি আরবে এসব ইয়াবার গ্রাহক কারা জানতে পেরেছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা ইয়াবাসেবী রয়েছেন তারা এবং কিছু সৌদি আরবের নাগরিকরাও বর্তমানে ইয়াবা সেবন করছেন।’
বিমানবন্দর দিয়ে মাদক কারবারি চক্রগুলো প্রতিনিয়ত ইয়াবা পাচারের চেষ্টা করছে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাদকের কারবারিরা একটি নতুন ট্রেন্ড শুরু করেছে, অতিরিক্ত লাভের আশায় ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তারা ইয়াবা পাচারের চেষ্টা করছে। তবে আমাদের এখান দিয়ে যাওয়ার আগেই বিমানবন্দরের স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে অবশ্যই ধরা পড়বে।’
আটকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।