মহাসড়ক জুড়ে মানুষ আর মানুষ; চাকরীটা বাঁচাতে হবে ১০৪ কিঃমিঃ
👁️মহানগর ডেস্ক ✒️
‘করোনা অইলে ভালা অইয়া যাইব, চাকরি গেলে পোলা-মাইয়া না খাইয়া মরব।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অনেকাংশ জুড়ে কুমিল্লা। মহাসড়কের পাশ দিয়ে শনিবার দিনভর হেঁটে ঢাকার দিকে গেছেন হাজারো মানুষ। কারো হাতে ব্যাগ, কেউ এক হাতে সন্তান আর অন্য হাতে ব্যাগ নিয়ে হাঁটেন। পাশ দিয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার বা পণ্যবাহী ট্রাক দেখলেই তারা হাত তোলেন। অনুনয় করেন ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার সেনানিবাস এলাকায় শত শত মানুষ অপেক্ষা করেন গাড়ির জন্য।
কুমিল্লার বুড়িচংয়ের আনিছুর রহমান ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। রোববার কারখানা খোলার খবরে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
বাড়ি থেকে অটোরিকশায় সেনানিবাস এলাকায় আসেন। যেভাবেই হোক ঢাকায় পৌঁছাতে হবে। তিনি বলেন, ‘করোনা অইলে ভালা অইয়া যাইব, চাকরি গেলে পোলা-মাইয়া না খাইয়া মরব।’
বিকেলে মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম, মিয়াবাজার, সুয়াগঞ্জ, পদুয়ার বাজার, আলেখারচর, সেনানিবাস, চান্দিনা, দাউদকান্দিতে দেখা যায় ঢাকাগামী মানুষের ঢল।
সন্ধ্যার পর মহাসড়কের কুমিল্লার বিভিন্ন স্টপেজে চাপ বাড়তে থাকে। মাইক্রোবাস, ট্রাক পেলেই অনেককেই দৌড়ে উঠতে দেখা গেছে। অনেককেই হাঁটতে দেখা গেছে। কোথায় গিয়ে গাড়িতে উঠবেন তার কোনো হিসেব নেই।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক মাইক্রোবাসের চালক জানান, কুমিল্লা থেকে ঢাকার ভাড়া প্রতি জনে দুই হাজার করে নেন। সারা দিনে চারবার ঢাকা-কুমিল্লা যাতায়াত করেছেন।
ওই মাইক্রোবাসের যাত্রী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিনি ঢাকার গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ম্যানেজারের ফোন পেয়েই ঢাকায় ছুটছেন।
আক্ষেপ করে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আগে দুই-আড়াই শ টাকা দিয়া কুমিল্লা থাইক্কা ঢাকায় আইতাম। আইজ বিপদে পড়লাম, চাকরি বাঁচানের লাইগ্গা পাঁচ-ছয়গুণ ভাড়া বেশি দিতাছি। করোনা আইয়া আমডার মতো গরিবডির কপালে সিজ্জদ লাগাইছে।’
কুমিল্লা ময়নামতি হাইওয়ে ফাঁড়ির পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, ‘সড়কে প্রাইভেট যানবাহনের চাপ আছে। আমরা সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছি।’