৫০ গ্রামের একেকটি হলুদ-মরিচের প্যাকেটের মূল্য ৫০ হাজার টাকা।
নিউজ ডেস্ক।।
দেখলে মনে হবে বাজারের কোনো নামিদামি ব্রান্ডের হলুদ-মরিচের প্যাকেট। ৫০ গ্রাম ওজনের একেকটা হলুদ কিংবা মরিচের প্যাকেটের স্বাভাবিক মূল্য হওয়ার কথা ২০ থেকে ২৫ টাকা।
কিন্তু ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জব্দ করা ৫০ গ্রামের একেকটি হলুদ-মরিচের প্যাকেটের মূল্য ৫০ হাজার টাকা। কারণ দেখতে হলুদ মরিচের প্যাকেটের মতো মনে হলেও তার ভেতর বিশেষ কৌশলে রাখা ছিল ভয়াবহ মাদক হেরোইন।
পুলিশ জানায়, মাদক কারবারিরা বাজার থেকে গুঁড়া হলুদ-মরিচের প্যাকেট কিনে তা সংগ্রহ করে। পরে প্যাকেটে থাকা মসলা ফেলে দিয়ে ভরা হয় হেরোইন। পরে ফয়েল পেপারে মুড়িয়ে ছোট ছোট হেরোইনের পুড়িয়া সরবরাহ করা হয় মাদকসেবীদের কাছে।
হেরোইন সরবরাহকারী এক নারী মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পারে অভিনব এ কৌশল।
মসলার প্যাকেটে হেরোইন চোরাচালানের তথ্য ছিল গোয়েন্দাদের কাছে। এক নারী মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তারের পর অভিনব কায়দায় দামি এই মাদকটির চোরাচালান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পায় পুলিশ। উদ্ধার করা হয় ২২ প্যাকেট হলুদ ও মরিচের গুঁড়া। প্যাকেট খুলে দেখা যায় প্রতিটি প্যাকেটে ফয়েল পেপারে মোড়ানো ছোট ছোট হেরোইনের প্যাকেট।
গ্রেপ্তার হওয়া নারী মাদক কারবারি পুলিশকে জানিয়েছে আনিস নামে এক বড় মাদক কারবারি ভারত থেকে হেরোইনের চালানগুলো সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে দেশে নিয়ে আসে। পরে তার নিয়োগকৃত এজেন্টদের মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার রাজীব আল মাসুদ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া নারী এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত বিশেষ করে প্যাকেজিং ও ডিস্ট্রিবিউটিংয়ের কাজে। ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে এই মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত। এরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকাতে বিশেষ করে তেজগাঁও অঞ্চলে এসব হোরোইন মাদকসেবীদের মধ্যে সাপ্লাই করে থাকে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি তাদের হাতে ধরা পড়া সব মাদকের উৎস পাশের দুটি দেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের রুট ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল’ অর্থাৎ মিয়ানমার-থাইল্যান্ড-লাওস এবং ‘গোল্ডেন ক্রিসেন্ট’ পাকিস্তান-আফগানিস্তান-ইরানের একেবারে কেন্দ্রে বাংলাদেশ। ফলে ভৌগোলিকভাবেই মাদকের অন্যতম রুটে পরিণত হয়েছে দেশ।
সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, মাদক চোরাচালান কিংবা মাদক সংগ্রহ করা অর্থ্যাৎ মাদকের যে বাণিজ্য সেটা বিবেচনা করলে বাংলাদেশের অবস্থানটি আসলেই খুবই বিপজ্জনক। যারা সীমান্তে দায়িত্বে আছেন তাদের মধ্য থেকে কেউ না কেউ মাদক চোরাচালানে সহযোগিতা করছেন বলেই দেশে মাদক প্রবেশ করছে।
মাদকের প্রবেশ ঠেকাতে না পারলে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র:সময় টিভি