কুমিল্লায় ছিন্নমূল ও দরিদ্র শিশুদের জোরপূর্বক বলৎকারের অভিযোগে প্রধান আসামি গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার।।
ছিন্নমূল ও দরিদ্র পরিবারের শিশুদের (অল্প বয়স্ক ছেলেদের) বিভিন্ন প্রলোভন ও পূর্বের ভিডিও’র ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক বলৎকারের অভিযোগে সুমন মিয়া (৩৬) নামে একজন আসামী র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা কর্তৃক গ্রেফতার।
গত ০৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৮ টায় রাশেদ (ছদ্মনাম) ভিকটিমদেরসহ র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা অফিসে এসে তার বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে কর্মরত তিনজন শিশু বলৎকারের বিষয়ে একই ফ্যাক্টরীতে কর্মরত সুমন মিয়া (৩৬) এর বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় তা আমলে নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে র্যাব-১১, সিপিসি-২ ছায়া তদন্ত শুরু করে। ছায়া তদন্তে তারা বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে।
উক্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর একটি আভিযানিক দল গত ০৪ সেপ্টেম্বর বিকেল পৌণে ৩ টার সময় আসামী সুমন মিয়া (৩৬), পিতা- কবির হোসেন, মাতা- জোহরা খাতুন, সাং- ছেচড়া পুকুরিয়া, পোষ্ট- রাধানগর-৩৫১০, থানা- দেবিদ্বার, জেলা- কুমিল্লা’কে বিসিক শিল্পনগরী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, সে প্রায় ০২ বছর যাবৎ জনৈক রাশেদ (ছদ্মনাম) সাহেব এর বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে কর্মরত আছে। অল্প বয়স্ক ছেলেদের বলৎকার তার এক ধরনের স্বভাবে পরিণত হয়েছে।
সে বিভিন্ন সময়ে অল্প বয়স্ক ছেলেদের উক্ত বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে কাজের জন্য নিয়ে আসত। পরবর্তীতে তাদের সাথে মামা-ভাগ্নের সম্পর্ক তৈরী করে তাদেরকে বিভিন্ন সময় ভাড়া বাসায় নিয়ে যেয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক বলৎকার করত এবং তা ভিডিও ধারণ করে রাখত।
গত ০১ জুলাই হতে গত ০৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভিকটিম মোঃ রিপন (১৪) (ছদ্মনাম), মোঃ কামাল (১৫) (ছদ্মনাম) ও মোঃ আলম (১৫) (ছদ্মনাম) সহ আরো অনেককে কুমিল্লা সদরের ধর্মপুরের ভিক্টোরিয়া ডিগ্রী কলেজ মসজিদ গেইট সংলগ্ন একটি ছাত্রাবাসের রুমের ভিতরে এবং দৌলতপুর সাকিনস্থ দৌলতপুর টিএনটি মোড় সংলগ্ন আসামীর বর্তমান ভাড়া বাসায় নিয়ে ভিকটিমদেরকে বলৎকার করে বলৎকারের ছবি ও ভিডিও নিজের মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখে ও উক্ত ঘটনা কাউকে না বলার জন্য ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় ভিকটিমদেরকে সংরক্ষিত ভিডিওর ভয় দেখিয়ে পুনরায় বলৎকার করে। সে আরো স্বীকার করে যে, রেলস্টেশন ও বাসস্টেশনের ছিন্নমূল অল্প বয়সী ছেলেদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যেত এবং তাদেরকেও জোরপূর্বক বলৎকার করত।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীর মোবাইল পর্যালোচনা করে তার মোবাইলে বিভিন্ন অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায় যা সে মেসেঞ্জার গ্রুপ “Maja lao ”সহ অন্যান্য গ্রুপে আপলোড করতো।
কোতয়ালী মডেল থানায় আসামিদের হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।