৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লা বুড়িচংয়ে জুয়ার আসরে পুলিশের অভিযান, পালাতে গিয়ে জুয়াড়ির মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে জুয়ার বোর্ডে পুলিশের অভিযানের খবরে দৌড়ে পালানোর সময় হার্টঅ্যাটাক করে মো. মিজান (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

আজ শুক্রবার জুমার নামাজের আগ মুহূর্তে উপজেলার ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের শোভারামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়নের সোন্দ্রম পূর্ব পাড়া ফজলু মিয়ার পুকুরপাড় এলাকায় কিছু লোকজন জুয়া খেলার আসর বসিয়েছে, এ খবরে বুড়িচং থানাধীন দেবপুর ফাঁড়ি পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়।

পুলিশের অভিযানের খবরে ১০,১২ জনের একটি দল দৌড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ধাওয়া করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে চলে আসে।

এ সময় পার্শ্ববর্তী শোভারামপুর গ্রামের আবদুল আজিজের (মৃত) ছেলে মো. মিজান পুলিশের ভয়ে পালানোর সময় বাড়ির অদূরে রাস্তার পাশে গোবর রাখার গর্তে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান।

স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে ময়নামতি জেনারেল হাসপাতলে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মিজানের বড় ভাই মো. আমির হোসেন জানান, তাঁর ভাই হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। এর আগেও তিনি স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

পুলিশের ভয়ে দৌড়ে পালানোর সময় হয়তো স্ট্রোক করেছে। মিজানের পরিবারের রয়েছে স্ত্রীসহ তিন মেয়ে ও এক ছেলে।

ভারেল্লা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার সাবেক মেম্বার হাবিবের নেতৃত্বে জুয়ার বোর্ড পরিচালিত হয়ে আসছিল।

গত সপ্তাহে আমি অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলতে নিষেধ করে আসি। কিন্তু তাঁরা কথা না শুনে জুয়া খেলেই আসছিল। খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। এতে পালানোর সময় একজনের মৃত্যু হয়েছে।’

পুলিশ অভিযানকালে মৃত্যুর খবর পেয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান, বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হালিমা খাতুন, বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ রহমান মিজানের বাড়িতে উপস্থিত হন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

বুড়িচং থানার ওসি মারুফ রহমান বলেন, জুয়া খেলা চলছে এ খবরেই পুলিশ অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলে কাউকে না পেয়ে পুলিশ চলে আসে।

পরে খবর পাওয়া যায় এক ব্যক্তি জুয়ার বোর্ড থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন। পরে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই।

এ ছাড়া কুমিল্লার এসপি আবদুল মান্নান স্যার, ইউএনও ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং তাঁদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহটি দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা হবে না।’

বুড়িচংয়ের ইউএনও হালিমা খাতুন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহতের বড় ভাই ও স্ত্রীর সঙ্গে কাথা বলে জানতে পেরেছি, ওই ব্যক্তি আগে স্ট্রোক করে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

পরিবারের সদস্যদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’

আরো দেখুন
error: Content is protected !!