২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স চ্যাম্পিয়ন

নিউজ ডেস্ক।।
তবে কি ফাইনাল মানেই কুমিল্লার জয় অবধারিত! বিপিএলে দলটির পরিসংখ্যান তেমনই বলছে। এর আগে দুইবার ফাইনালে উঠে প্রতিবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নাফিসা কামাল স্কোয়াড।

এবার তৃতীয়বারের মতো শিরোপা নির্ধারণীর ম্যাচ খেলতে নেমেও শেষ হাসি কুমিল্লার। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বরিশালকে তারা হারিয়েছে ১ রানে।

অন্যদিকে, বিপিএলে এ নিয়ে আটবার অংশ নিয়েও একবারও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি বরিশালের। বরিশাল বুলস, বরিশাল বার্নাস কিংবা শেষমেশ ফরচুন বরিশাল বারবার ফ্র্যাঞ্জাইজি বদল হলেও ভাগ্য বদল হলো না। এবার স্বপ্ন ছোঁয়ার কাছাকাছি গিয়েও ফিরতে হয়েছে আশা ভঙ্গের বেদনা নিয়ে।

সদ্য সমাপ্ত আসরের প্রথম কোয়ালিফায়ারেও মুখোমুখি হয়েছিল টুর্নামেন্টের ফেবারিট এ দুই দল। তবে প্রথমবার হারতে হয়েছে কুমিল্লাকে।

সে ম্যাচে ১০ রানে হারের পর শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ঐতিহাসিক জয়ে চরম প্রতিশোধই নিল কুমিল্লা। এ নিয়ে অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয় শিরোপা ইমরুল কায়েসের।  

বরিশালের জন্য টার্গেটটা বড় ছিল না, আবার মামুলি কিছুও নয়। যদিও কুমিল্লার দেওয়া ১৫২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বরিশালের শুরুটা  ভালো হয়নি। 

মুস্তাফিজের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই পরাস্ত হন আসরজুড়ে ব্যাটিংয়ে বরিশালের অন্যতম নির্ভরতার প্রতীক মুনিম শাহরিয়ার। অ্যাংকলে ব্যাথা পাওয়ার পর মাঠে পিজিও ডাকতে হয়েছিল পর্যন্ত। শেষমেশ মুনিমও পারলেন না ফাইনাল রাঙাতে। ৭ বলে খেলে রানের খাতা খোলার আগেই শহিদুলের বলে ফ্যাফ ডু প্লেসির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন। 

তবে মুনিম শাহরিয়ারের অভাব এদিন পূরণ করলেন ফাইনালের একাদশে সুযোগ পাওয়া সৈকত আলী। এক প্রান্তে গেইলেরমন্থর গতির ইনিংসে কিছুটা চাপেই ছিল বরিশাল।

তবে সাকিবদের মুখে এদিন হাসি ফোটালেন সৈকত। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ফুটিয়ে মাত্র ২৬ বলে ফিফটিতুলে নেন এ অলরাউন্ডার। রেকর্ড ১১ চার ও এক ছক্কায় ৩৪ বলে করেছেন ৫৮ রান। অথচ আসরজুড়েই একাদশে নিয়মিত সুযোগ মেলেনি। ফাইনালের মঞ্চে সুযোগ পেয়েই কি দুর্দান্ত একইনিংস খেললেন।

ক্রিস গেইলের আউটটা বরিশালের জন্য স্বস্তির না অস্বস্তির? আপাতত এ প্রশ্ন পাঠকের জন্যই তোলাই থাকুক। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের ক্রিকেটে দুই ছক্কা ও এক চারে ৩১ বলে ৩৩ রানের ম্যাড়ম্যাড়ে ইনিংসটা যে চোখের জন্য আরামের না এটা বলাই যায়। 

প্রথম কোয়ালিফায়ারে সাকিব করেছিলেন মাত্র এক রান। আজও খেলতে পারলেন না। ৭ বলে মাত্র ৭ করে তানভীরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে গেছেন। তবে বোলারের চেয়ে এ ক্ষেত্রে বড় অবদান দুর্দান্ত ক্যাচ লূফে নেওয়া মুস্তাফিজের।

এর আগে প্রথম ইনিংসে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিল কুমিল্লা। তবে এক সুনীল নারিন ছাড়া খেলতে পারলেন না কেউই। এদিন মিরপুরে আবারও দেখা গেছে সেই বিধ্বংসী নারিনকে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে নেমে বিপিএল ইতিহাসের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েছিলেন ক্যারিবীয় এ কিংবদন্তী। ছয় ছক্কা ও পাঁচ চারের মারে মাত্র ১৬ বলে করেছিলেন ৫৭ রান। ফাইনালেও একই রূপে হাজির নারিন।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই আফগান তারকা স্পিনার মুজিব উর রহমানের ওপর চড়াও হন নারিন। বলকে ফুটবল বানিয়ে স্কোরবোর্ডে জমা করেন ১৮ রান। শফিকুলের করা দ্বিতীয় ওভারেও চলল চার-ছক্কার চোখ জুড়ানো প্রদর্শনী। দুই ছয় এক চার ও সিঙ্গেলে তুলে নিলেন ১৮ রান। দুই ওভার শেষে কুমিল্লার সংগ্রহ ৩৬ রান!

তৃতীয় ওভারে বল হাতে তুলে নিয়েই সাফল্য পান বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাকিবের বল বুঝে উঠার আগেই সব শেষ। ভেঙে যায় স্টাম্প। ৬ বল খেলে ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন। এর মধ্য দিয়ে চলতি আসরে নিজের ১৬তম উইকেটের দেখা পেলেন সাকিব।

লিটন আউট হলেও ব্যাট হাতে নারিন তাণ্ডব চলছিল।শেষমেশ ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে মেহেদী হাসান রানার  বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়লেন শান্তর হাতে।তবে তার আগেই পাঁচ চার ও পাঁচ ছয়ে সাজানো ২৩ বলের ইনিংসের টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে ১১তম ফিফটি তুলে নিলেন। 

আরো দেখুন
error: Content is protected !!