দেবীদ্বারে গরুচোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেফতারসহ ৩টি চোরাই গরুউদ্ধার
দেবীদ্বার প্রতিনিধি
কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের ইউসুব আলী মুন্সী বাড়ির ছাত্রলীগ নেতা মিজান মুন্সীর গোয়াল ঘর থেকে ৩টি বিদেশী গরু চুড়ি হওয়ার সাথে সাথে দেবীদ্বার থানা পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম অভিযান চালিয়ে গরুসহ পর্যায়ক্রমে ৫ চোরকে গ্রেফতার করেতে সক্ষম হয়েছে।
ঘটনাটি গত শনিবার দিবাগত ভোররাতে অর্থাৎ গত(০৩/০৫/২০২১ইং)ভোর রাতে উপজেলা সদরের বারেরা ইউসুব আলী মুন্সী বাড়ির আরব আলী মুন্সীর ছেলে মিজান মুন্সীর গোয়াল ঘরে।
দেবীদ্বারে গরু চুরির অভিযোগে আন্ত: জেলা গরুচোর চক্রের ৫ সদস্য সহ ৩টি গরু উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেবীদ্বার থানা পুলিশ ওই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান,
গত (০৩/০৪/২০২১)ভোর বেলা দেবীদ্বার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামে গরু চুরির সংবাদ আসে। তাৎক্ষনিক বিষয়টি কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারকে অবহীত করলে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. আরিফুর রহমান’র নেতৃত্বে উপ-পরিদর্শক(এসআই) সালাউদ্দিন শামীম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোঃ আজিজুল হক সহ একদল পুলিশ নিয়ে অভিযানে নামেন।
তাৎক্ষনিক উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে প্রথমে আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের সদস্য উপজেলার মাশিকাড়া গ্রামের মৃত; আব্দুস সালামের পুত্র মোঃ মাসুদ রানা(৩০)কে আটক করে পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যমতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আন্ত:জেলা গরু চোর চক্রের সদস্য আসামী এলাহাবাদ গ্রামের মৃত; আব্দুল খালেক’র পুত্র মোঃ রফিকুল ইসলাম(৪২), গুনাইঘর গ্রামের মৃত; শহীদ মিয়ার পুত্র মোঃ ইউনুছ মিয়া(৪৮), মৃত; মনির হোসেন’র পুত্র মোঃ ইকবাল হোসেন(৪০), মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের মৃত; আলফু মিয়ার পুত্র মোঃ হুমায়ুন(২৮)সহ ৫জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাহাদের হেফাজতে থাকা চুরি হওয়াা ৩ টি গরু উদ্ধার করা হয়।
মামলা ও বাদী সুত্রে জানা যায়, শনিবার দিবাগত ভোররাতের একটু আগে সবাই ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় কৌশলে চোরেরা ঘর থেকে দেশী-বিদেশী মিলিয়ে ৫টি গরু বের করে নেয়। তবে বাড়ির লোকজন সজাগ হয়ে যাওয়ার কারনে তারা দুটি গরু ছেড়ে দেয় যা বাড়ির অদুরে খুজে পাই এবং বাকি গরু গুলি খুজতে থাকি। থানায় ফোন দিলে দেবীদ্বার থানা পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমের প্রধান ওসি আরিফুর রহমান এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স ওই রাতে অভিযান চালিয়ে চুরি হওয়া ৩ গরু উদ্ধারসহ অভিযুক্ত ৫ চোর গ্রেপ্তার করেতে সক্ষম হয়।
এ বিষয়ে ইউসুব আলী মুন্সী বাড়ির ছাত্রলীগ নেতা মিজান মুন্সী বলেন, চুড়ি হওয়ার সাথে সাথে থানায় ফোন দিলে ওসি আরিফুর রহমান এর আন্তরীক সহযোগীতায় তাৎক্ষনিক অভিযানে আমার গরুগুলি খুজে পেয়েছি এই জন্য ”কুইক রেসপন্স টিম“ এর সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
এলাহাবাদ গ্রামের ৫টি গরু চুরি হওয়া নাম প্রকাশে এক ব্যক্তি ক্ষোভের সাথে জানান, গত তিন বছরে এলাহাবাদ গ্রামেরই অন্ত: অর্ধশত গরু চুরি হয়েছে। এসব চুরির ঘটনায় এলাহাবাদ ইউনিয়নের প্রভাবশালীরা জড়িত থাকায় তারা সব সময়ই বিচারের বাহিরে থেকে যাচ্ছে। এলাহাবাদ গ্রামের মৃত; আব্দুল খালেক’র পুত্র মোঃ রফিকুল ইসলাম(৪২) ও তার বাড়ির পাশের ২ প্রতিবেশীর বাড়ির মাটির নিচে ঘর বানিয়ে লুকিয়ে রাখা ৩ ট্রাক গরু উদ্ধার করার পরও অজ্ঞাত কারনে চোরের কোন সাজা হয়নি।
এ ব্যাপারে মামলার আইও দেবীদ্বার থানার এস আই সালাউদ্দিন শামিম জানান, মাননীয় ওসি মহোদয়ের নেতৃত্বে এএসআই আজীজুল হক সহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে প্রথমে পৌর এলাকার পুনরা থেকে গরু ৩টি সহ দেবীদ্বারের মাশিকাড়া গ্রামের মাসুদ রান কে গ্রেফতার করি। পরে তার তথ্য অনুযায়ী উপজেলার ধামতী গ্রামের ইউনুস মিয়া, গুনাইঘর গ্রামের ইকবাল হোসেন, এলাহাবাদ গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও মুরাদনগর উপজেলার মোঃ হুমায়ুনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এ ব্যাপরে একটি চুড়ির মাামলা প্রক্রিয়াধীন, আগামীকাল তাদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে।
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার কুইক রেসপন্স টিমের প্রধান অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. আরিফুর রহমান জানান, আমি যে থানায় সার্ভিস দিয়েছি সেখানেই ”কুইক রেসপন্স টিম“ গঠন করে এলাকায় ব্যাতিক্রমী পুলিশি সেবা প্রদান করে এসেছি। আর এরই ধারাবাহিকতায় দেবীদ্বার থানায় এই টিমের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে নিজে স্ব-শরিরে উপন্থিত থেকে একটু বেশী পরিশ্রম করে হলেও জনগনকে কাংখিত সেবা প্রদানে আমি বদ্ধ পরিকর। থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে, তাদের সাথে আর কেহ জড়িত আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, আসামীদেরকে মঙ্গলবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হবে।