৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা আক্রান্ত ১৬ মানসিক রোগীকে চিকিৎসা ছাড়াই বাড়ি পাঠাল কর্তৃপক্ষ

👁️নিউজ ডেস্ক ✒️
পাবনা মানসিক হাসপাতালে ১৬ জন আবাসিক রোগীর করোনা শনাক্ত হওয়ায় তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে নিজ নিজ বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রোববার (১৮ জুলাই) দুপুরে হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ডা. মাসুদ রানা সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিকে, মানসিক হাসপাতালে রোগীদের পাশাপাশি করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও তিন চিকিৎসক ও সাত নার্স।

ডা. মাসুদ রানা সরকার বলেন, হাসপাতালে প্রবেশ ও ব্যবস্থাপনায় কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের পরেও চলতি মাসের শুরুর দিকে বেশ কয়েকজন ভর্তি রোগীর করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। এদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী। প্রথমে তাদের হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে নেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে বাকি রোগীদের নিরাপত্তার স্বার্থে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় করোনায় আক্রান্ত ১৪ জনকে তাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দুজন রোগীকে হাসপাতালেই আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

তিনি জানান, বিশেষায়িত হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ নেই। এ কারণে তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ না থাকলে নতুন কোনো রোগীকে ভর্তি নেওয়া হবে না বলেও জানান ডা. মাসুদ রানা।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, মানসিক হাসপাতালে রোগীদের উপসর্গ দেখা দেয়ায় কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে করোনা পরীক্ষার কারিগরি সহায়তা চান।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পরীক্ষার জন্য সকল ধরনের উপকরণ ও সহায়তা দেয়া হয়েছে। তবে, সেখানে কতজন আক্রান্ত সে সম্পর্কে আমাদের কাছে তথ্য নেই। রোগীদের চিকিৎসার ব্যাপারেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত নেবেন।

এদিকে, করোনা আক্রান্ত হাসপাতালের আবাসিক মানসিক রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টিতে কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা হিসেবেও মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

পাবনার বিশিষ্ট চিকিৎসক রামদুলাল ভৌমিক বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীরা এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের চিকিৎসা না দিয়ে পরিবারের কাছে পাঠানোয় এসব রোগীসহ তাদের পরিবারকে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

তাছাড়া, এক্ষেত্রে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে। মানসিক রোগীদের প্রতি সমাজ এমনিতেই অবহেলার দৃষ্টিতে দেখে, সেখানে দায়িত্বশীলদের এমন আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু রোগী ও চিকিৎসকদের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে, কালক্ষেপণ না করে মানসিক হাসপাতালে কোভিড ইউনিট করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে, কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেনারেল হাসপাতালের সহযোগিতা নিতে পারেন।

জেলা কোভিড ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল রহমান বলেন, মানসিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি। শনাক্ত রোগীদের কেন বাড়িতে পাঠানো হয়েছে সে বিষয়ে খোঁজ নেয়া হবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!