২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুঁড়েঘরে শিকল বাঁধা ৮ সন্তানের মা, ভিডিও ভাইরাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
গ্রামের একটি কুঁড়েঘরে গলায় শিকল বাঁধা এক বৃদ্ধা। প্রচণ্ড শীতের মধ্যে অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন। গায়ে কোনো গরম পোশাকও নেই।

চীনের সামাজিকমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। দৃশ্যটি দেখে অনেকেই হতাশা ও ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ওই বৃদ্ধার আটটি সন্তান রয়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়েছে ক্ষুদে ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যম ডুইয়িনে। এটি টিকটকের চীনা সংস্করণ। এক লোক ওই নারীকে এভাবে দেখে ব্যথিত হন ও এ ঘটনার ভিডিও করে সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করেন।

তাকে গরম পোশাক দিয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলেও ওই নারী জবাব দিতে পারেননি। ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে তাকে উদ্ধারে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন নেটিজেনরা।

চীনের গ্রামীণ অঞ্চলে নারী নিপীড়ন ও তাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করা নিয়েও কেউ কেউ সমালোচনা করেছেন। জিয়াংশ প্রদেশের পূর্বাঞ্চলের জুঝাও এলাকার ওই নারী কোন পরিস্থিতি আটটি সন্তান জন্ম দিয়েছেন, তা নিয়েও অনেককে প্রশ্ন করতে দেখা গেছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতির দেশটিতে কঠোর পরিবার পরিকল্পনা বিধিনিষেধের কারণে একাধিক সন্তান নেওয়া কঠিন। কীভাবে এই ঘটনা কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে গেছে, সেই জিজ্ঞাসাও অনেকের।

ভিডিওতে বৃদ্ধাকে বিমূঢ় অবস্থায় দেখা গেছে। ভ্লোগারের প্রশ্ন যেন তিনি বুঝতে অক্ষম, মুখে জবাব আসছে না। ভ্লোগার তাকে বারবার জিজ্ঞাসা করছিলেন, আপনার ঠান্ডা লাগছে? কারণ প্রবল শীতের মধ্যেও তার পরনে ছিল একটি হালকা পোশাক।

গত শুক্রবার ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। এরপর থেকেই চীনের গরিব পল্লী এলাকাগুলোতে মানবপাচার নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। এই ঘটনার সঙ্গে ২০০৭ সালের চলচ্চিত্র ব্লাইন্ড মাউনটেইনের তুলনা টেনে আনছেন কেউ কেউ। সিনেমাটিতে এক তরুণীর অপহৃত হওয়া এবং দাস হিসাবে বিক্রি হয়ে যাওয়ার কাহিনী দেখানো হয়েছে।

তবে কুঁড়েঘরে শিকলে বাঁধা এই নারীর ক্ষেত্রে অপহরণ হওয়া নিয়ে কোনোরকম জল্পনা শুক্রবার এক বিবৃতিতে নাকচ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাকে ইয়াং নামে শনাক্ত করা হয়েছে।

জানানো হয়, তিনি (ইয়াং) হুয়ানকু টাউনশিপের ফেং কাউন্টির বাসিন্দা। ১৯৯৮ সালে তিনি স্বামী ডংকে বিয়ে করেন। পরে ইয়াংয়ের মানসিক অসুস্থতা ধরা পড়ে। ডং এর পরিবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে, ইয়াং প্রায়ই সহিংস হয়ে উঠতেন।

রোববার কর্তৃপক্ষ পরিবারটির ইতিহাস সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য দিয়ে আরেকটি বিবৃতি দিয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ইয়াংয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন। ডং আইন ভঙ্গ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে জননিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!