২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লার বরুড়ায় পুলিশসহ আহত ৭, পরীক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ ১৩ জন বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নকল করতে বাঁধা দেয়া এবং কেন্দ্রে কড়াকড়ি পাহারা দেয়ার অভিযোগ এনে শিক্ষকদের উপর হামলা করেছে শিক্ষার্থীরা।

পরীক্ষা শেষে বেশ কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা মিলে উত্তরপত্র ছিনিয়ে নেবারও চেষ্টা করে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় ৬ আহতের খবর দিয়েছে এলাকাবাসী।

অপরদিকে মহেশপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে খাতা নিয়ে আসার পথে কে বা কারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে নুরুল ইসলাম নামে একজন কনস্টেবল আহত হয়।

বরুড়া উপজেলায় মঙ্গলবারের পরীক্ষায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সহ ১৩ জন কে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করেছে প্রশাসন।

বরুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরিনা আফরিন মুস্তফা বলেন, সম্পুর্ন নকল মুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা হয়েছে। দায়িত্ব অবহেলার কারণে কয়েকজন শিক্ষক কে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ফিরোজ হোসেন জানান, হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের গোলযোগের খবর পেয়ে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নিয়েছে।

দ্রুত বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। পরীক্ষার খাতা ছিনিয়ে নেবার সময়ও টের পেয়ে পুলিশ সেগুলো রক্ষা করে শিক্ষা বোর্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

জানা গেছে, অংক পরীক্ষা শেষে খাতা টানার অভিযোগ এনে কয়েকজন পরীক্ষার্থী এক শিক্ষকের মোটরসাইকেল এর গ্লাস ভাংচুর করে।

এতে পুলিশ বাঁধা দিলে কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও বহিরাগতদের মাঝে ইটপাটকেল ও ধাওয়া পাল্টা দাওয়া হয়।

এতে সজিব হোসেন(২১) তাজুল ইসলাম (১৫) মোহাম্মদ আলী (৩৮) উদয় (১৭)ফাহাদ (১৭) মোঃ ফারুক (২১) নামে আহত হয়েছে।

মোঃ ফারুক হোসেন কে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটাল প্রেরণ করেছে বলে জানা যায়।

কেন্দ্রের কয়েকজন শিক্ষক জানান, আমরা কাউকে বহিঃস্কার করেনি। বাহির থেকে কোন নকল সরবরাহ করতে না পারার কারণে কিছু সংখ্যক পরীক্ষার্থী পরিক্ষা শেষে ভুল অভিযোগ দিয়ে পরিস্হিতি অশান্ত সৃষ্টি করছে।

পুলিশ এতে বাঁধা দিলে বহিরাগত কিছু লোকজন এসে তাদের সাথে যোগ হয়ে পরীক্ষার হলের বাহিরে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং স্কুলের দক্ষিণ পাশের বিল্ডিং এর কয়েকটি গ্লাস ভাংচুর করে।

খাতা নিয়ে যেতে বাঁধা দিবে বলে গুনজন উঠলে ২ ঘন্টা পর আনুমানিক ৩টার দিকে খাতা নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ লাটিচার্জ করে।

এতে কয়েকজন আহত হয়েছে। বরুড়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফিরোজ হোসেন সুকৌশলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

এছাড়া ও বিভিন্ন কেন্দ্রে ২ শিক্ষার্থী ১১ জন শিক্ষক কে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে কৃন্ষপুর মাদরাসার ১ জন শিক্ষার্থী ও তলাগ্রাম ত, চ,লাহা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। বাতাইছড়ি কেন্দ্রে কেমতলী উচ্চ বিদ্যালয় এর শিক্ষক সরোয়ার আলম ও শিমুল চন্দ্র ভৌমিক, আড্ডা উমেদারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঝলম স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক জহিরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, রন্জিত সরকার, বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে বাতাইছড়ি মাদরাসা শিক্ষক রাবেয়া আক্তার, চালিতাতলী মাদরাসা শিক্ষক ইলিয়াছ মিয়া, ঝলম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কৃন্ষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিনা ইসলাম ছোটতুলাগাও উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষক খোকন চন্দ্র শর্মা, পয়ালগাছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শাহিদা আক্তার কে দায়িত্ব অবহেলার কারণে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

বরুড়া হাই স্কুল কেন্দ্রের কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানান, ঘাড় ফেরাতে দেয়নি পরিদর্শকরা, পেছন থেকে আমার খাতা একজনে দেখে লিখেছে আমার খাতা ও নিয়ে গেছে। অথচ অনুরোধ করার পর আমার খাতাটি দেয় নি।

বরুড়া হাজী নোয়াব আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব মোঃ মেধাদ উদ্দিন বলেন, নকল মুক্ত সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষা শেষে বহিরাগত কিছু লোকজন পরীক্ষা হলের বাহিরে গোলযোগ করেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!