কুমিল্লায় পানি উন্নয়ন বোর্ড নিজেই পানিতে বন্দি
✒️ মহানগর ডেস্ক
আষাঢ়ের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় রীতিমতো ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে কুমিল্লা নগরীর অনেক এলাকা। গতকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে ডুবে যাচ্ছে নগরীর অধিকাংশ ব্যস্ততম সড়ক ও নিম্নাঞ্চল।
বুধবার সন্ধ্যায় থেকে কুমিল্লা শহরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় থেমে থেমে টানা ২৪ ঘণ্টার বর্ষণ হয়। চলমান এই বর্ষনে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সেই সাথে বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় কাদা জমে যায়। এছাড়া শহরের নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ভোগান্তিতে পড়েন পুরো নগরজুড়ে ।
শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখো যায়, বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নগরীর জনজীবন। বিশেষ করে নগরীর প্রবেশপথ কান্দিরপাড়-পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড সড়কের কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে প্রায় ১কিলোমিটার জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়নের বোর্ড জলবদ্ধতার এমন চিত্র দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নগরবাসী অনেকেই ক্ষোভ করেন।পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই এই সড়কে দেখা দেয় সড়কে জলাবদ্ধতা । বছরের পর বছর কুমিল্লা সিটি মেয়রের জলাবদ্ধতার সাথে যুদ্ধ করে আসলেও সমস্যা সমাধানে উদাসীন দেখান সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
নগরী বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, বিআরটিসি ভবণ, অশোকতলা, ধর্মপুর স্টেশন রোডের খাদ্য গুদাম, দক্ষিণ চর্থা, রেসকোর্স, বিসিক শিল্পনগরী, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড়সহ বিভিন্ন এলাকার ভবনের নিচতলায় পানি জমে আছে। কোথাও কোথাও দোকানের ভেতরে পানি ঢুকে গেছে। সড়কের মধ্যে হাঁটুসমান পানি। ছোটরা জেলখানা সড়কের মধ্যে পানি জমে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সেখানকার সড়কে পানি থই থই করছে।
নগরের পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন বলেন, বাসাবাড়ি থেকে সড়ক উঁচু হওয়ার কারণে পানি সরতে পারছে না। সড়ক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা অফিস এখানে। অথচ এই ব্যাপারে তাদের কোনো পদক্ষেপ নেই। সিটি মেয়র সাক্কু কয়েকবার আশ্বাস দিয়েও পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্হা নেই কোথায়ও। জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য অনেক টাকা খরচ করে নর্দমা তৈরি করা হয়েছে । কিন্তু, তারপরও জলাবদ্ধতার হাত থেকে আমরা রক্ষা পাচ্ছি না।”
এদিকে টানা বর্ষনে নগরীর চকবাজার, ছাতিপট্টি, লাকসাম রোড, নজরুল অ্যাভিনিউ, রেসকোর্স, ঠাকুরপাড়া ও রামমালা সড়কে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
নগরীর দীপ চক্রবর্তী নামের এক বাসিন্দা জানান , নগরীর মেয়রের কোনো কাজেই পরিকল্পনাই কাজে আসছে না। সামান্য বৃষ্টিতে নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ ফলে মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। অনেক বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান অনেকে।
মেয়র হবেন তার প্রথম প্রতিশ্রুতি হওয়া উচিত এ জলাবদ্ধতা দূর করা। জলাবদ্ধতায় কুমিল্লার শহরের অন্যতম প্রধান উদ্বেগ বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
এদিকে কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া বলেন টানা ২৪ ঘন্টায় ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত জেলা রেকর্ড করেছে। যা চলতি মৌসুমে কুমিল্লায় সর্বোচ্চ। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। আগামী দুই-দিন সৌসুমি বৃষ্টিপাত থাকতে পারে ।