৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ‘স্বতন্ত্র’ পরিচয়ে বিএনপির দুই প্রার্থী

ডেস্ক রিপোর্ট।।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মেয়র, সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ তিনটি পদে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে রবিবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৮৯ জন প্রার্থী।

এর মধ্যে আছেন মেয়র পদে পাঁচ জন, সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৪৭ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন এবং এদের মধ্যে মাত্র ১২ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তবে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণায় অটল থাকলেও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এখানে মেয়র পদে ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থীর আবরণে দলটির দুই নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

এদিকে কুসিক নির্বাচনের আরো এক মাস বাকি। এরই মধ্যে ইসির নির্দেশে নগরীতে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। রবিবার থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এক প্লাটুন বিজিবির গাড়িবহর নগরীর সড়কে টহলে নেমেছে।

জানা গেছে, মেয়র পদে যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তারা হলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি থেকে বহিষ্কৃত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার।

অপর তিন জনের মধ্যে আছেন-জাতীয় পার্টির মো. মামুনুর রশিদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রাশেদুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র কামরুল আহসান বাবুল।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত মেয়র পদে দলের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

তবে স্বতন্ত্র ব্যানারে বিএনপির দুই জনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ নিয়ে নগরীতে বিভিন্ন মহলে বেশ আলোচনার ঝড় বইছে। এখানে দলটির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এক পক্ষে আছেন হাজি মো. আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন এবং অপরপক্ষে মো. মনিরুল হক সাক্কু।

দলটির স্থানীয় একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মেয়র সাক্কু দলের হয়েও তিনি সরকার দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলেছেন, দল ও দলের নেতাকর্মীদের নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।

তাই নিজাম উদ্দিন কায়সার তাকে (সাক্কু) ঠেকাতেই প্রার্থী হয়েছেন। তবে প্রতিপক্ষের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘কোনো দ্বন্দ্ব নেই, কেউ যদি আমাকে প্রতিপক্ষ মনে করেন কিছু করার নেই। সিটি নির্বাচন স্হানীয় সরকারের নির্বাচন, এটা তো জাতীয় নির্বাচন নয়। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে আমি নির্বাচন করতেই পারি।’

স্বতন্ত্র ব্যানারে মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, ‘তিনি কারো প্রতিপক্ষ হয়ে প্রার্থীর হতে যাচ্ছেন না। তিনি ১৭ মে মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন।’ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজি আমিন-উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আমরা (বিএনপি) কোনো নির্বাচনেই যাব না। কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে এ বিষয়ে দলের হাইকমান্ড থেকেই সিদ্ধান্ত আসবে।’

কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য ভোটকেন্দ্র ও বুথগুলোয় ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এখন থেকেই তিন জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রার্থীদের আচরণবিধি দেখার জন্য মাঠে আছেন। রবিবার থেকে এক প্লাটুন বিজিবি মাঠে দায়িত্ব পালন করছে।

নির্বাচনি আচরণবিধি যেন কোনোভাবেই লঙ্ঘন না হয়, আমরা সে বিষয়টি কঠোরভাবে দেখছি। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যেন থাকে, এটা ইলেকশন কমিশন নিশ্চিত করতে চাচ্ছে।’

উল্লেখ্য, এ সিটির ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৯২ জন। ১০৫ ভোটকেন্দ্রের সবকয়টিতে ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৭ মে ও মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ মে, আপিল দায়ের ২০-২২ মে পর্যন্ত, আপিল নিষ্পত্তি ২৩-২৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে। এখানে আগামী ১৫ জুন শতভাগ ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!