২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মামুনুলকে গ্রেফতার : ডিসি মতিঝিল

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বায়তুল মোকাররম মসজিদে তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ১৭ নেতার নামে মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারে এক নম্বর ও হুকুমের আসামি করা হয়েছে মামুনুল হককে।

মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম।

মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হবে কি-না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করব। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এজাহারে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের অনেকের রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে। তবে আমরা কোনো পদ বিবেচনায় নেব না। আমরা অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। মামলাটি গতকাল রাতে হয়েছে। এখনও প্রি-ম্যাচুরড রয়েছে। আমরা আসামিদের প্রকৃত পরিচয়, তারা বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছে, ২৬ তারিখ তারা কোথায় ছিল, বায়তুল মোকাররমে সরাসরি উপস্থিত ছিল কি-না, তারা নাশকতার নির্দেশ-উসকানি দিয়েছে কি-না, হামলার অর্থদাতা বা মাস্টারমাইন্ড কি-না তা শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

সেদিন সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থলে সরকার দলীয় লোকজনও ছিল। সরকারদলের একজনই এই মামলাটি করেছেন। এ বিষয়ে পুলিশের অবস্থান জানতে চাইলে ডিসি বলেন, ‘যিনি মামলা করেছেন, তিনি একজন ব্যবসায়ী। তিনি টাইলসের আঘাতে আহত হয়েছেন। তার অন্য কোনো পরিচয় আছে কি-না তা আমরা খুঁজে বের করব।’

মামলায় হেফাজতের নেতাদের নাম উল্লেখ করা হলেও তারা ঘটনাস্থলে ছিলেন কি-না? জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘নামাজের পর মসজিদের বেদীর ওপরে অনেকে কথা বলছিল, সেখান থেকেই সংঘর্ষের শুরু। তবে সেখানে কোনো সিনিয়র নেতাকে দেখিনি। অনেকে ভেতরে ছিল, সিনিয়র নেতারা ভেতরে ছিল কি-না তা তদন্তে উঠে আসবে।’

এর আগে সোমবার (৫ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টায় আরিফ উজ জামান নামের ওয়ারীর এক ব্যক্তি হত্যা চেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনসহ কয়েকটি ধারায় পল্টন থানায় মামলাটি করেন।

মামলার অন্য ১৬ আসামি হলেন- হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব নাসির উদ্দিন মনির, নায়েবে আমির মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নায়েবে আমির মাজেদুর রহমান, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়্যুবী ও সহকারী মহাসচিব মাওলানা জসিম উদ্দিন।

এছাড়াও রয়েছেন- সংগঠনটির টঙ্গীর সহ-সাংগঠনিক মাওলানা মাসুদুল করিম, অর্থ সম্পাদক মুফতি মনির হোসাইন কাশেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা যাকারিয়া নোমান ফয়েজী, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, সহকারী দাওয়া সম্পাদক মাওলানা মুশতাকুন্নবী, ছাত্র ও যুব সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মো. জোবায়ের ও দফতর সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মো. তৈয়ব।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে মামুনুল হকের নির্দেশে ১৭ হেফাজত নেতার নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ দা, ছোরা, কুড়াল, কিরিচ, হাতুড়ি, তলোয়ার, লাঠিসোটাসহ অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ হামলায় আরিফ-উজ-জামান গুরুতর আহত হন।’

এ ঘটনার পেছনে হেফাজতের সঙ্গে জামাত-শিবির-বিএনপি জঙ্গি কর্মীদের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!