ভরা বর্ষায় ফুলকপি চাষে সাড়া জাগাচ্ছেন কুমিল্লার রাসেল
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কৃষক পরিবারের সন্তান রাসেল হোসেন। কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার হারং গ্রামে বাড়ি তার। দুবাইতে ছিলেন অনেক দিন। সেখান থেকে দেশে ফিরে শুরু করেন সবজি চাষ।
শুরুতে তার এ কাজ নিয়ে উপহাস করেন অনেকে, তবে সাফল্যের পর সেই উপহাস হয়ে যায় অতীত। বিদেশফেরত এ যুবক এখন অনেকের অনুপ্রেরণার উৎস।
শীতকালীন সবজি হওয়া সত্ত্বেও ভরা বর্ষায় রাসেলের চেষ্টায় জমিতে চাষ হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন ফুলকপি।
এ নিয়ে কৃষি উদ্যোক্তা বলেন, ‘দুবাইতে মামার সঙ্গে কাজ করতাম। কাজ ভালো ছিলো, বেতনও ভালো। ২০১৯ সালে দেশে আসার পর আর যাওয়া হয়নি। কৃষিকাজে মন বসে গেছে।
‘মাঠে একটা নেশা কাজ করে। এখানে নিজের হাতে সবজি চাষ করি, বিক্রি করি। নগদ আয় হয়, এতে বেশ ভালো লাগে।
রাসেল জানান, সবজির চারা উৎপাদন, গ্রীষ্মকালীন টমেটো ও ফুলকপিসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে তিনি এখন ভালো আয় করছেন।
গত বছর ৬০ হাজার টাকা খরচ করে সাড়ে ৪ লাখ টাকার গ্রীষ্মকালীন ফুলকপি বিক্রি করেন। গত বছরের সফলতায় এবারও দেড় একর জমিতে গ্রীষ্মকালীন ফুলকপি লাগিয়েছেন।
তার খরচ হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সব খরচ বাদে অন্তত ৫ লাখ টাকা মুনাফার আশা করছেন।
রাসেলের জমিতে ফুলকপি কিনতে প্রতিদিনই ভিড় করেন পাইকাররা। তারা মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন। রাসেল ফুলকপি সংগ্রহ করে মেপে তুলে দেন পাইকারদের হাতে।
কেজি প্রতি ১০০ টাকা করে বিক্রি করেন ফুলকপি। হাটে নিয়ে পাইকররা খুচরা প্রতি কেজি বিক্রি করেন ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা দরে।
রাসেল বলেন, ‘গত বছর ফুলকপি যখন লাগাই, তখন এলাকার অনেক মানুষ হাসাহাসি করে। প্রথম দিকে ফসলের অবস্থা ভালো ছিল না, কিন্তু আমি দমে যাইনি।
‘বিশ্বাস ছিল, আরেকটু পরিশ্রম করলে ও যথাযথ যত্ন নিতে পারলে জমিতে ফসল আসবে। ওই সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ারের পরামর্শ নিয়ে উপকৃত হয়েছি।’
এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘প্রবাসফেরত রাসেল একজন উদ্যমী মানুষ। তাকে পরামর্শ দেয়া আমাদের দায়িত্ব। রাসেলকে এখন এলাকার তরুণরা অনুসরণ করে। এটাই সার্থকতা।’
উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুল হক রোমেল বলেন, ‘চান্দিনা উপজেলার হারং গ্রামের রাসেল এলাকায় প্রথম গ্রীষ্মকালীন ফুলকপি চাষ করেন।
তার থেকে চারা নিয়ে ছায়কোট, তুলাতলীসহ পাশের কয়েকটি গ্রামের ৫০ থেকে ৬০ জন কৃষক ফুলকপি চাষ করছেন। চলতি বছর চান্দিনায় পাঁচ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন ফুলকপির চাষ হয়েছে।’
আগামী বছর আরও বেশি জমিতে চাষ হবে বলে আশা করছেন এ কর্মকর্তা।