২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির ডিপোতে মেট্রোরেলের রিসিভিং টেস্ট।

নিউজ ডেস্ক
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘পাঁচটি মেট্রোরেল সেট নির্মাণের কাজ জাপানের কারখানায় গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশেষ উদ্যোগে থার্ড পার্টি ইন্সপেকশনের মাধ্যমে ইন্সপেকশন শেষ করে মেট্রোরেল সেট দেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। মেট্রোরেল এখন আর স্বপ্ন নয়- বাস্তবতা। এই মেট্রো ট্রেনের মাধ্যমে বাংলাদেশ একই সঙ্গে বিদ্যুৎ চালিত ট্রেনের যুগেও প্রবেশ করল।’

স্বল্প পরিসরে চলল রাজধানীবাসীর বহু কাঙ্ক্ষিত মেট্রোরেলের প্রথম সেট।

মঙ্গলবার সকালে উত্তরার দিয়াবাড়ির ডিপোতে রেলের রিসিভিং টেস্টের সময় স্বল্প সময়ের জন্য চালান হয় মেট্রোরেলের প্রথম সেটটি। এটিই হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক রেল।

মেট্রোরেলের প্রথম সেটটি উত্তরা ডিপোতে এসে পৌঁছায় গত ২৩ এপ্রিল। দ্বিতীয় সেট গত ৯ মে মোংলা সমুদ্র বন্দরে এসে পৌঁছেছে। সেটি এখন ঢাকায় পৌঁছানোর অপেক্ষায়।

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ এর ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেল চলবে রাজধানীর বুকে।

রিসিভিং টেস্টে জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, প্রকল্পের অর্থায়নকারি প্রতিষ্ঠান জাইকার বাংলাদেশ প্রধান প্রতিনিধি হায়াকাওয়া ইয়ুহো, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক রেল সেটটি ঘুরে দেখেন।

এ সময় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, দেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন সিক্স নির্মাণের সার্বিক কাজ ৬০ ভাগেরও বেশি শেষ হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব হতে আগারগাঁও অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৮৪.৭৯ শতাংশ। দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৫৯.৭৮ শতাংশ এবং ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ৫৪.৪০ শতাংশ।

‘ডিপোর ভূমি উন্নয়ন কাজ নির্ধারিত সময়ের নয় মাস আগে শেষ হয়েছে। এতে সরকারের ৭০ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা সাশ্রয় হয়েছে। ডিপোর পূর্ত কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৮৮ শতাংশ। মোট ২০.১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে ১৪.৪১ কিলোমিটারের ইরেকশন শেষ হয়েছে।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের জানান, রেলের ভায়ডাক্টের উপর মূল ট্র্যাকে পারফরমেন্স টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে এ বছরের আগস্টে।

‘এরপর হবে ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট। এটি শেষ হলে রেলের ট্রায়াল রান শুরু হবে’-বলেন সেতুমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এমআরটি লাইন-৬ এর সকল স্টেশনের নির্মাণ কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে চলমান আছে। ডিপোর অভ্যন্তরে রেল লাইন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভায়াডাক্টের উপরে ১০.৫০ কিলোমিটার রেল লাইন স্থাপন করা হয়েছে। ডিপোর অভ্যন্তরে এবং আগারগাঁও পর্যন্ত ভায়াডাক্টের উপরে ওভারহেড ক্যাটেনারি ওয়ার স্থাপনের কাজ চলছে।

‘পাঁচটি মেট্রোরেল সেট নির্মাণের কাজ জাপানের কারখানায় গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশেষ উদ্যোগে থার্ড পার্টি ইন্সপেকশনের মাধ্যমে ইন্সপেকশন শেষ করে মেট্রোরেল সেট দেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। মেট্রোরেল এখন আর স্বপ্ন নয়- বাস্তবতা। এই মেট্রো ট্রেনের মাধ্যমে বাংলাদেশ একই সঙ্গে বিদ্যুৎ চালিত ট্রেনের যুগেও প্রবেশ করল।’

অনুষ্ঠানে জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, করোনা এবং পাঁচ বছর আগে হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে এগিয়েছে মেট্রোরেল প্রকল্প। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঢাকাবাসীর যানজটের সমস্যা অনেকটাই লাঘব হবে।’

উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মিরপুর হয়ে আগারগাঁও, ফার্মগেট দিয়ে শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, কার্জন হল, জাতীয় প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন হয়ে মতিঝিলে যাবে দেশের প্রথম মেট্রোরেল। সব মিলিয়ে লাইনের দৈর্ঘ্য ২০.১ কিলোমিটার। ব্যস্ত সময়ে প্রতিটি ট্রেন এক হাজার সাতশ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে ছুটবে।

প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জাইকা দেবে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!