মুরাদনগরে একই দিনে তিন কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ২,পলাতক ১
মুরাদনগর প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগরে ১৪ বছর বয়সের প্রতিবন্ধী কিশোরীসহ ভিন্ন স্থানে ১২ বছরের ও ১৭ বছরের দুই কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে মহিউদ্দিন ও রুবেল হোসেন নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৯জুন) ওই প্রতিবন্ধী কিশোরী (১৪)’র ভাই, কিশোরী (১২)’র মা ও কিশোরী (১৭)’র বাবা বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় তিনটি মামলা দায়ের করেছে।
গত বুধবার (২৩ জুন) উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের কাচারিকান্দি এলাকায় ও বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) ধামঘর ইউনিয়নের পরমতলা এলাকায় এবং সোমবার (২৮ জুন) নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে ওই তিনটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন পরমতলা এলাকায় কিশোরী (১২)কে ধর্ষণের ঘটনায় একই গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে মহিউদ্দিন (১৯) ও রহিমপুর গ্রামের কিশোরী (১৭) কে ধর্ষণের ঘটনায় নওগাঁ জেলার পতœীতলা থানার অষ্ট মাত্রাই গ্রামের আঃ জলিলের ছেলে রুবেল হোসেন (৩০)।
অপরদিকে জাহাপুর ইউনিয়নের কাচারিকান্দি এলাকায় প্রতিবন্ধী কিশোরী (১৪)কে ধর্ষণের ঘটনায় পলাতক জেলার হোমনা উপজেলার মিরাশ গ্রামের ওসমান মিয়ার ছেলে বাদশা মিয়া (১৬)।
অভিযোগ সূত্রে ও ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ঘটনা (১) গত বুধবার (২৩ জুন) বিকেলে উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের কাচারিকান্দি গ্রামের প্রতিবন্ধী কিশোরী (১৪)কে একই গ্রামের বাবুল মিয়ার ভাগ্নে বাদশা মিয়া মামার বাড়ীতে বেড়াতে এসে ওই প্রতিবন্ধী কিশোরীকে একা পেয়ে জরা (ঘাস ক্ষেত) ক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
বিষয়টি জানাজানি হলে ওই প্রতিবন্ধী কিশোরীর পরিবারের সাথে দফায় দফায় শালিস বসে প্রভাব খাটিয়ে ৫০ হাজার টাকায় দফারফা করার চেষ্টা করেন মামা বাবুল মিয়াসহ এলাকার মাতব্বররা। পরে এবিষয়ে ওই প্রতিবন্ধী কিশোরীর ভাই বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা করেন।
ঘটনা (২) উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের পরমতলা গ্রামে গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাতে কিশোরী (১২) তার চাচা ও অভিযুক্ত মহিউদ্দিনের বাবাকে ভাত খেতে দিয়ে পাশের নিজ ঘরে যাওয়ার সময় তাকে মুখে কাপড় পেচিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে মহিউদ্দিন। এ বিষয়ে পারিবারিক ভাবে আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা করেন।
ঘটনা (৩) উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতো অভিযুক্ত রুবেল হোসেন।
ঘটনার দিন গত সোমবার (২৮ জুন) রাতে একই গ্রামের ভাড়াটে রুবেল হোসেনের পাশের বাড়ীর কিশোরী (১৭) তার মায়ের সাথে অভিমান করে রুবেল হোসেনের ভাড়া বাসার সামনে যান। এসময় রুবেল হোসেন ওই কিশোরীকে একা পেয়ে তার ঘরে নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করেন। এসময় আশপাশের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে রুবেলের ঘরে গিয়ে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে রুবেলের কাছে মুক্তিপন হিসেবে ৫০হাজার টাকা দাবি করেন। অভিযুক্ত রুবেল টাকা দিতে না পাড়ায় এলাকার লোকজন তাকে মুরাদনগর থানা পুলিশের হাতে তুলেন। পরে ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাদেকুর রহমান জানান, তিনটি ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগের ভিত্তিতে দুইটি ঘটনার সাথে জড়িত মহিউদ্দিন ও রুবেল হোসেন নামের দুই জনকে গ্রেফতার করে বুধবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে প্রতিবন্ধী কিশোরীর ধর্ষণের ঘটনায় আসামীকে ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।