আসর নামাজের গুরুত্ব ও পুরস্কার
ইসলাম ডেস্ক
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের তৃতীয় হচ্ছে আসর। সূর্য হেলে পড়লে এবং তেজস্ক্রিয়তা কমে গেলে চার রাকাত বিশিষ্ট এ নামাজ পড়া প্রত্যেক বালেগ মুসলমান নারী-পুরুষের ওপর ফরজ।
আসরের নামাজের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে হাদিসে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তির আসরের নামাজ ছুটে যায়, তা হলে যেন তার পরিবার-পরিজন ও মাল-সম্পদ সবকিছুই ধ্বংস হয়ে গেল। (বুখারি, হাদিস : ৫৫২)। আবু মালিহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক যুদ্ধে আমরা বুরাইদাহ (রা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। দিনটি ছিল মেঘলা। তাই বুরাইদাহ (রা.) বলেন, শিগগির আসরের নামাজ আদায় করে নাও।
কারণ নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ছেড়ে দেয় তার আমল বিনষ্ট হয়ে যায়। (বুখারি, হাদিস : ৫৫৩)
এ নামাজের অনেক ফজিলত ও পুরস্কার রয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ফেরেশতারা পালা বদল করে তোমাদের মাঝে আগমন করেন; এক দল দিনে, এক দল রাতে। আসর ও ফজরের নামাজে উভয় দল একত্র হয়। অতঃপর তোমাদের মাঝে রাত যাপনকারী দলটি উঠে যায়।
তখন তাদের প্রতিপালক তাদের জিজ্ঞেস করেন, আমার বান্দাদের কোন অবস্থায় রেখে এলে? অবশ্য তিনি নিজেই তাদের ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত। উত্তরে তারা বলে, আমরা তাদের নামাজে রেখে এসেছি আর আমরা যখন তাদের কাছে গিয়েছিলাম তখনও তারা নামাজ আদায়রত অবস্থায় ছিল। (বুখারি, হাদিস : ৫৫৫)।
আরও বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) আরও বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে আসরের নামাজের এক সিজদা পায়, তা হলে সে যেন নামাজ পূর্ণ করে নেয়। আর যদি সূর্য উদিত হওয়ার আগে ফজরের নামাজের এক সিজদা পায়, তা হলে সে যেন নামাজ পূর্ণ করে নেয়। (বুখারি, হাদিস : ৫৫৬)
আসরের নামাজের আগে চার রাকাত সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা নামাজ পড়া। নবীজি (সা.) নিজেও এ নামাজ পড়তেন এবং সাহাবায়ে-কেরামকে বিশেষভাবে তা পড়ার তাগিদ দিতেন। হজরত আলী ইবনে আবী তালেব (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজি (সা.) আসরের ফরজ নামাজের আগে চার রাকাত সুন্নত পড়তেন। (তিরমিজি : ৪২৯; ইবনে মাজা : ১১৬১)।
অন্য একটি হাদিসে রয়েছে, হজরত ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ সেই ব্যক্তির ওপর রহম করুন, যারা আসরের আগে চার রাকাত সুন্নত পড়ে।’ (আবু দাউদ : ১২৭১; তিরমিজি : ৪৩০)