কুমিল্লায় ভারত সীমান্ত এলাকা থেকে বাংলাদেশি এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিনিধি।।
ভারতের সীমান্ত এলাকা থেকে বাংলাদেশি এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে বিজিবি।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী নারায়ণপুর ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সিপাই জেলার করমচুরা থানার রহিমপুর থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মরদেহটি উদ্ধার করে ৬০ বিজিবি ব্যাটালিয়ান সদস্যরা। পরে তারা বুড়িচং থানায় মরদেহ হস্তান্তর করে।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) ওপ্পেলা রাজু নাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ৩৫ বছরের তুষার খাঁ নওগাঁ জেলার রানী নগর বালুভরা গ্রামের এলাকার মোসলেম খাঁর ছেলে। শুক্রবার মরদেহ নওগাঁতে নেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, তুষারকে প্রথমে মুমূর্ষু (অচেতন) অবস্থায় বাংলাদেশের নারায়ণপুর দক্ষিণপাড়া থেকে ১০ ফুট ভারতের অভ্যন্তরে রহিমপুর এলাকায় বিবস্ত্র পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা।
খবর পেয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ঘটনাস্থলে আসলেও লোকটি কোন দেশের নাগরিক, তা শনাক্ত করতে করতেই তুষার মারা যান।
ওসি ওপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, ‘কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছি। এছাড়া প্রাথমিক সুরতহালে তুষারের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
তুষারের ফুফু আসমা বেগম জানিয়েছেন, গত বুধবার তুষার তার অসুস্থ ফুফা আবু তাহেরকে দেখতে নওগাঁ থেকে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় এসেছিলেন। হাসপাতালে ফুফাকে দেখে ফুফার বাড়ির উদ্দেশে বের হন।
এরপর থেকেই তুষারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।এদিকে তুষার কীভাবে সীমান্তে গেল বা কারা তাকে পিটিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় সেখানে ফেলে গিয়েছিল, তা দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কেউই কিছু বলতে পারেননি।
এদিন খবর পেয়ে ৬০ ব্যাটালিয়ন বিজিবির শশীদল বিওপির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্তর্জাতিক সীমানার ভারত অংশে ওই যুবককে মুমূর্ষু অবস্থায় পরে থাকতে দেখেন। পরে বিজিবি বার্তা পাঠালে বিএসএফ ঘটনাস্থলে আসে।
এ সময় অজ্ঞাত যুবক কোন দেশের নাগরিক, তা নিশ্চিত হতে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়।
কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় ওই অজ্ঞাত যুবককে বাংলাদেশে যথা সময়ে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।
পরে খবর পেয়ে যুবকের ফুফু আসমা বেগম সেখানে গিয়ে তাকে নিখোঁজ হওয়া তুষার বলে সনাক্ত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ততক্ষণে মারা যান মুমূর্ষু তুষার। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে তুষারের মরদেহ নিয়ে আসে বিজিবি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, শুধুমাত্র কোন দেশের নাগরিক, তা না জানায় চোখের সামনেই মারা গেছেন তুষার।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাক্তার কাজী তানভীর আবসাল বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা বিকাল পৌনে ৪টায় ঘটনাস্থলে যাই। তখন তাকে মৃত পাই।’
শশীদল বিওপির বিজিবি কমান্ডার নায়েব সুবেদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমরা সকাল ৬টায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থল যাই। ভারতের ১০ ফিট অভ্যন্তরে মুমূর্ষু অবস্থায় তুষার পড়ে ছিল।
আইন অনুযায়ী, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু তারা চিকিৎসার ব্যবস্থা না করেনি। পরে যখন আমরা তার পরিচয় নিশ্চিত হই, ততক্ষণে তুষার মারা যান।’