কুমিল্লায় বঙ্গবন্ধুর খুনি খোন্দকার মোশতাকের ছেলেকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ
মহানগর নিউজ ডেস্ক।।
ছবিতে খন্দকার মোশতাক আহমেদ (বায়ে) ও খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবু
বাদী খোন্দকার জাবির অভিযোগ করে বলেন, মোশতাকের ছেলে খোন্দকার ইশতিয়াক আমাদেরকে ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছেন। তিনি কানাডায় বসে দশপাড়া এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন। আমাদের ওয়ারিশদের সই জাল করে বেশ কিছু সম্পত্তি বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া আরও কিছু সম্পত্তি বিক্রির পাঁয়তারা করছে।
বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ক্ষমতায় আসা খোন্দকার মোশতাকের ছেলে খোন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে কুমিল্লার একটি আদালত।
জমিজমা নিয়ে বিরোধের একটি মামলায় কুমিল্লার ৩ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. গোলাম মাহবুব খান গত রোববার তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
ইশতিয়াক অবশ্য দেশে থাকেন না। তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন বলে তথ্য মিলেছে।
বাদীর আইনজীবী ইফতেখার হোসেন জানান, মোশতাকের বাবা খোন্দকার কবির উদ্দিনের পাঁচ ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। মৃত্যুকালে কবির বিশাল সম্পত্তি রেখে গেছেন। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কবিরের কিছু সম্পত্তি কল্যাণমূলক কাজের জন্য ট্রাস্টের নামে লিখে দেয়া হয়। বাকি সম্পত্তির মালিক হন সন্তানরা।
কিন্তু মোশতাকের একমাত্র ছেলে খোন্দকার ইশতিয়াক শরিকদের সম্পত্তি জোর করে দখল করেন। এ ছাড়া কবির উদ্দিনের নামে ট্রাস্টের স্বঘোষিত চেয়ারম্যান বনে যান তিনি। ট্রাস্ট ও দাদার সম্পত্তি দখলে রাখতে মোশতাকপুত্র এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে রেখেছেন। কানাডায় বসে ওই বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।
সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যা এবং এস্টেটের উত্তরাধিকারীর অংশীদারত্ব পেতে কবির উদ্দিনের ওয়ারিশ খন্দকার জাবির আহাম্মেদ সারোয়ার গত বছরের শেষের দিকে আদালতে একটি মামলা করেন।
এতে মোশতাকপুত্র ইশতিয়াক, নাতি ইফতেখার আহমেদ শাদ ও কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিনকে আসামি করা হয়। মোশতাকপুত্রের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
মামলার বাদী খোন্দকার জাবির অভিযোগ করে বলেন, মোশতাকের ছেলে খোন্দকার ইশতিয়াক আমাদেরকে ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছেন। তিনি কানাডায় বসে দশপাড়া এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন।
আমাদের ওয়ারিশদের সই জাল করে বেশ কিছু সম্পত্তি বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া আরও কিছু সম্পত্তি বিক্রির পাঁয়তারা করছে। তার নির্দেশে এসব জালিয়াতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন মোশতাকের বাড়ির কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিন।
তিনি বলেন, কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিনই মোশতাকপুত্রের সব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে থাকেন। কানাডায় বসে ওই কেয়ারটেকারের মাধ্যমেই বাহিনী নিয়ন্ত্রণসহ এলাকার আধিপত্য ধরে রেখেছেন ইশতিয়াক।
অপর ওয়ারিশ কাজী রেহা কবির বলেন, ‘মোশতাক আমার নানার পরিবারের সদস্য হলেও আমরা তাকে প্রাণভরে ঘৃণা করি।
সবশেষ গত বছর মাকে নিয়ে কবির উদ্দিনের মাজার জিয়ারত করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু মোশতাকপুত্রের কেয়ারটেকারের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমাকে সেখানে ঢুকতে দেয়নি।’
‘এখন যেহেতু তার বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে অবিলম্বে তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে দাউদকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যতটুকু জানি মামলায় অভিযুক্ত আসামি খোন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবু বিদেশে পালাতক আছেন। তার পরেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি হাতে পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’