সফিউল ইসলাম’র ছোট গল্প – “বাবার মৃত্যু”
বাবার মৃত্যু
সফিউল ইসলাম
ফেনী, বাংলাদেশ।
দিনের সূর্য টা অস্তে ঢলে পড়ল মাত্র, বুকের ভেতর হালকা চিন চিন ব্যাথা অনুভব হচ্ছে। খবর পৌঁছালো ডাক্তার এর জন্য, ডাক্তার ও দেরি করলো না । এসে পৌঁছালো মাত্র।ডাক্তার পরিক্ষা নিরিক্ষা করে জানালো তেমন কিছু না ঠিক হয়ে যাবে।
দুই চার টি ওষুধ দিলো সেবন করানোর জন্য।
উঠে বসালাম খুব কষ্ট করে। ওষুধ গুলো সেবন করালাম, একটু কমেনি ব্যাথা। আরো বেড়ে চলেছে। খবর পাঠানো হলো বড় ভাইয়ের কাছে। বাবা বেশ অসুস্থ। ভাই ও তাড়াতাড়ি করে বাসায় এসে পৌঁছালো। সঙ্গে গাড়ি নিয়ে এলো কাপড় চোপড় নিয়ে রওয়ানা দিলাম শহরের হাসপাতালে উদ্দেশ্যে। ঘন্টাখানেক পর পৌঁছালো গাড়ি হাসপাতালে সামনে।
কয়েক জন নার্স এলো নিয়ে গেল বাবা কে ভিতরে। অক্সিজেন দেওয়া হলো। ডাক্তার খুব তাড়াহুড়ো করছে। ঠিক মতো কথা বলছে না কী হয়েছে বাবার।
আমি বিষণ চিন্তিত। ঘন্টাখানেক পর ডাক্তার বাহিরে এলো।আর যা বললো আমার চিন্তা আরো বেড়ে গেল। ডাক্তার জানালো, আমরা যথা সম্ভব চেষ্টা করছি, তবে ভালো হয় আপনার বড় শহরে নিয়ে গেলে।
যদি হায়াত থাকে এই যাত্রায় বাঁচতে পারেন। আমরা কয়েক মিনিটের মধ্যে একটি গাড়ি ভাড়া করলাম, আর হাসপাতালের বিল মিটিয়ে রওয়ানা দিলাম বড় শহরের উদ্দেশ্যে। চার ঘণ্টা পর এসে পৌঁছালো বড় শহরে। বড় ডাক্তার এলো, ট্রিটমেন্ট শুরু করলো। ঘড়ির দিকে চোখ পড়লো। দেখলাম রাত আটটা বাজে। এখন একটু সুস্থ আছে।
একটু একটু কথা ও বলছে। ঠিক রাত এগেরোটা বাজে বাবা বললো, আমি ভাত খাবো । হাসপাতালের পাশে এক পরিচিত বোনের বাসা ছিল। খাবার নিয়ে এলো এক বার। বলাতে। খাবার খেলো বাবা তার নিজের হাতে ধরে।এর পর ডাক্তার এলো কিছু ওষুধ খাইয়ে দিল। রাত যখন তিনটে বাজে,বাবার ব্যাথা বেশ বেড়ে গেল।
একবার এদিকে ফিরে চিৎকার করে, আরেক বার অন্য দিকে ফিরে। এমন চললো পুরোপুরি আধঘন্টা । মসজিদের মিনার থেকে ফজরের আযানের ধ্বনি শুনা যাচ্ছে এমন সময় বাবা ও পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে ওপারে পাড়ি জমালো।
খবর পৌঁছালাম বাড়িতে, ফোন করে। এর মধ্যে গাড়ি ভাড়া করলাম, রওয়ানা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। পথ ঘাট ফাঁকা থাকায় সাড়ে তিন ঘণ্টায় বাড়ি এসে পৌঁছালাম। যথা সময়ে জানাজা অনুষ্ঠিত হলো চির বিদায় দিয়ে মাটিতে শুয়ে দিলাম জনম দুঃখী বাবাকে।