পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় পরিকল্পনাকারী ও জড়িত সবাই শনাক্ত
অনলাইন ডেস্ক।।
কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার পরিকল্পনাকারী ও জড়িতরা সবাই শনাক্ত হয়েছেন।
পুলিশের পাশাপাশি র্যাব এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিকল্পনাকারী ও জড়িতদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। এখন তাদের গ্রেফতারের কার্যক্রম চলছে।
এদের মধ্যে অনেকে পলাতক রয়েছেন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা আত্মগোপনে আছেন। যাতে কেউ বিদেশে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সকল বিমানবন্দর, নৌ ও স্থল পথসহ সব জায়গায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কঠোর মনিটরিং করছেন।সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে চাঁদপুরে দুই জন, কুমিল্লায় ইকবাল হোসেনসহ চার জন, পীরগঞ্জে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
চাঁদপুরে হামলার ঘটনায় অন্যতম পরিকল্পনাকারী জামায়াত নেতা কামাল উদ্দিন আব্বাসি নিজেকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পূজামণ্ডপে হামালার পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন করা পর্যন্ত কারা জড়িত তাদের নামসহ বিস্তারিত তথ্য জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন।
পীরগঞ্জে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সৈকত মণ্ডল ও স্থানীয় মসজিদের মোয়াজ্জেন রবিউল। পীরগঞ্জে হিন্দু পল্লীতে হামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঘটনার বর্ণনা তারা দিয়েছেন। এ ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও হামলায় জড়িতদের নামও র্যাবকে তারা জানিয়েছেন।
পীরগঞ্জের ঘটনায় প্রথমে পরিতোষ তার ফেসবুক আইডিতে আপত্তিকর পোস্ট দেয়। আর সেটাকে সৈকত তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার মাধ্যমে লোকজনকে উত্তেজিত বিভ্রান্তি করে এবং মানুষকে হামলা করার জন্য উৎসাহ যোগায়। আর মোয়াজ্জেন সকলকে হামলার জন্য মাইকে ঘোষণা দেন।
নোয়াখালীর হামলার সকল মদদদাতাকে শনাক্ত করা হয়েছে। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ৩৩ জন। এছাড়া কুমিল্লা, নোয়াখালী, পীরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা এ পর্যন্ত ছয় শতাধিক গ্রেফতার হয়েছেন।
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, কুমিল্লায় হামলায় অনেকে জড়িত, আমরা তাদেরকে চিহ্নিত করেছি। জড়িত অনেকের নাম-ঠিকানা পেয়েছি। কুমিল্লার ঘটনায় ইকবালসহ ৪ জনকে সাত দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লা নানুয়া দীঘির পাড়ে দর্পণ সংঘের পূজামণ্ডপে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফ রাখা নিয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হামলা চালানো হয়।
এই ঘটনার ধারাবাহিকতায় পীরগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাংচুরের পাশাপাশি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে।