ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বরযাত্রীকে টক দই দেয়ায় কনের বাবা খুন!
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
মেয়ের বিয়ে। বরযাত্রী আসেন খানিকটা বিলম্বে। খাবার টেবিলে পরিবেশকৃত দই ‘টক’ বলে অভিযোগ তুলেন দুই বরযাত্রী।
এই নিয়ে বাদানুবাদ, মুরুব্বীদের মধ্যস্থতায় মিমাংসাও হয়। কনের বাবা ইকবাল হোসেন পরদিন স্থানীয় বাজারে চা খেতে গেলে বরযাত্রী হিসেবে যাওয়া কতেক যুবক চড়াও হয়ে তাকে মারধর করতে থাকে।
স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা এলাকার।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় কসবা থানা পুলিশ। এর আগে বুধবার রাতে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গনকমুড়া গ্রামে ঘটে নারকীয় এই ঘটনা।
নিহত ইকবাল হোসেন (৫০) গনকমুড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের পুত্র। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করেছেন হত্যা মামলা।
নিহতের পরিবার, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে ইকবাল হোসেনের মেয়ে কারিমা আক্তারের সঙ্গে একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী বিষ্ণাউড়ি গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে পারভেজ মিয়ার বিয়ের দিন ধার্য ছিল।
বরযাত্রী আসতে দেরি হওয়ায় কনের বাবা তাদের খাবার আলাদা করে রাখেন। বরযাত্রী আসার পর তাদের খাবার পরিবেশন করা হয়। এসময় খাবারের টেবিলে বসা দুই বরযাত্রী ‘দই টক’ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বিয়ে বাড়িতে থাকা মুরুব্বিদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মিমাংসা করা হয়।
পরদিন বুধবার রাত ১০ টার দিকে স্থানীয় বাজারে চা খেতে যান মেয়ের বাবা ইকবাল হোসেন। সেখানে পাশের গ্রামের (বিয়ের দিন বরপক্ষের হয়ে বরযাত্রী হয়ে আসা) এনামুলসহ ৫/৭ জন যুবকের সঙ্গে একই বিষয় নিয়ে পুণরায় কথা কাটাকাটি হয়।
এরই এক পর্যায়ে বর পক্ষের লোকজন ইকবাল হোসেনকে মারধর শুরু করে। এতে অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে কসবা থানা পুলিশ রাতেই নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পুলিশ জানায়, নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এদিকে নিহতের স্ত্রী জোৎস্না বেগম বাদী হয়ে তার স্বামীর ঘাতক এনামুলসহ ১৫ জনের নামোল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কসবা থানার পরিদর্শক (ওসি) আলমগীর ভূইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছেন। যেহেতু নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ইকবাল হোসেনের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।