কুমিল্লায় অপচিকিৎসার বেশির ভাগই অবৈধ প্রতিষ্ঠানে
নিজস্ব প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা জেলায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা অননুমোদিত বা অবৈধ পাঁচ শতাধিক বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতাল-ক্লিনিক- ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে বলে ধারনা করছেন জেলা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইস আবদুর রব।
তিনি জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আবারো অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন। আশা করি অবৈধভাবে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হবে। তিনি আরো বলেন, আমার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেখেছি আগে অনুমোদন নিয়ে তার পর হাসপাতাল ক্লিনিক স্থাপন করে, আমাদের এখানে উল্টো- আগেই হাসপাতাল ক্লিনিক করে পরে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে। কুমিল্লা জেলায় যে পরিমানে বৈধ বা অনুমোদিত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আছে তার চেয়ে বেশি আছে অবৈধ।
সিভিল সার্জন আরো জানান, বিধি মোতাবেক কোন বৈধ চিকিৎসক যদি অননুমোদিত ক্লিনিক বা হাসপাতালে কাজ করেন তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার রয়েছে। যে কারণে চিকিৎসকদেরও সচেতন হতে হবে তিনি কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন – তা জেনে যেন করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার অনুমোদিত বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে জড়িত রয়েছেন চিকিৎসক, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন সচেতন মহলের প্রতিনিধিরা।
যারা বিভিন্ন সময়ে হাসপাতাল বা ক্লিনিক স্থাপনের জন্য প্রস্তুতি নেন সংশ্লিষ্ট কার্যালয়গুলোকে না জানিয়েই। পরবর্তীতে বিভিন্ন অনুমোদনের জন্য আবেদন করে বা না করে তদবির সুপারিশ করে চলতে থাকে কার্যক্রম।
এছাড়া বিভিন্ন বড় বড় হাসপাতাল বা ক্লিনিকের চাকুরীজীবি ওয়ার্ড বয়, নার্সরা মিলেও ক্লিনিক গড়ে তোলার খবর পাওয়া যায়। সাধারণত দালালের মাধ্যমে রোগীদের পাকড়াও করে নিয়ে আসা হয় এসব ক্লিনিক কিংবা হাসপাতালে। চড়া মূল্যে সেবার নামে ঠকানো হয় রোগীদের।
এছাড়া হাসপাতালের নামে দু’একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে শুরু করা প্রতিষ্ঠানে সার্জারি থেকে শুরু করে- দেয়া হয় অনেক স্পর্শকাতর সেবা, যার নূণ্যতম পরিবেশই বজায় থাকে না এসব প্রতিষ্ঠানে।
শয্যা অনুযায়ী হাসপাতাল গুলোতে যে পরিমানে ডাক্তার এবং নার্স থাকার কথা- তাও থাকে না এসব প্রতিষ্ঠানে।
কুমিল্লার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোতেই সাধারণত অপচিকিৎসা হয়। কিংবা ভুল চিকিৎসায় বিভিন্ন সময় যে মৃত্যু বা অন্যান্য অঙ্গহানির খবর পাওয়া যায় – এসবের অধিকাংশই হচ্ছে এসব অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
কুমিল্লা শহরেও অনেক অবৈধ প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোর বিরুদ্ধে এখনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। অভিযান আরো জোরদার করা উচিত।