কুমিল্লা লাকসামে দুই পরিবারের সংঘর্ষে এক নারীর কান কাটাসহ ৬ জন আহত
লাকসাম প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার লাকসামে পৈত্রিক সম্পত্তির জের ও বাড়ির চলাচলের রাস্তার সীমানা নিয়ে দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে এক নারীর কান কাটাসহ ৬ জন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
৪ ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে উপজেলার মুদাফফরগঞ্জ দক্ষিন ইউপির রাজাপুর গ্রামে মৃত ইছহাক মিয়ার ছেলে নুরুজ্জামান ওরফে নুরু ও হামিদুল হকের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে নুরুজ্জামানের হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে হামলায় হামিদুল হকের স্ত্রী রেহানা আক্তারকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে গুরুতর আহত করে।
দুই পরিবারের সদস্যদের হামলায় আরও ৫ আহত হয় তারা হলেন হামিদুল হক পাখি (৪৫), ফারহানা আক্তার (৩৪), মনোয়ারা আক্তার (৩৮), হালিমা বেগম (৩২) ও জান্নাতুল ফেরদৌস মায়া (২২) নুরুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী ছালেহা বেগম আহত হয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার রাজাপুর গ্রামে মৃত ইছহাক মিয়ার ছেলে নূরজ্জামান ও হামিদুল হকের মধ্যে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এমনকি দুই পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে।
শুক্রবার সকালে বাড়ীর চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ করে হামিদুল হক। তার বড় ভাই নুরুজ্জামান ওই পথের রাস্তা বেড়া দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনা নিয়ে শনিবার সকালে উভয়পক্ষের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে দু’পরিবারের মধ্যে লাঠি ও দেশি ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। হামলা পাল্টা হামলায় উভয়পক্ষের ৬/৭ জন আহত হয়। বড় ভাই নুরুজ্জমানের হাতে থাকা দা’র কোপে ছোট ভাই হামিদের স্ত্রী রেহানার কান ঘেঁষে গলা পর্যন্ত কেটে রক্তক্ষরন শুরু হলে রেহানার আত্মচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে তাৎক্ষনিক তাঁকে লাকসাম সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অপরদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত বড় ভাই নুরুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী ছালেহা বেগমসহ আরও ২ জন আহত হয়ে স্থানীয় নাসা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে উভয়পক্ষই সামাজিক মিমাংসা কিংবা আইনী সহায়তা নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে নুরুজ্জামান ও হামিদের ছোট ভাই ডাঃ দেলোয়ার হোসেন জানায়, আমাদের ৮ ভাইয়ের মধ্যে অভিযুক্ত নুরজ্জামান ছাড়া সবাই একে অপরের সাথে মিলিত ভাবে যে যার মতো সংসার চালাচ্ছি কিন্তু নুরুজ্জামান একটু বেপরোয়া প্রকৃতির লোক। তার সাথে আমাদের কোন ভাইয়ের মিল নেই।
নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে পারিবারিক মামলা রয়েছে। শনিবারের চলাচলের জন্য জায়গা নিয়ে সংর্ঘষ তারা আহত হয়। নুরজ্জামান পরিকল্পিত ভাবে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নুরুজ্জামানের বলেন, জানতে চাইলে তিনি তার বিভিন্ন অঙ্গে আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে বলেন, আমার জায়গার উপর দিয়ে তারা (হামিদ) পথের রাস্তা নির্মাণ করতে গেলে, আমি ও আমার স্বজনরা প্রতিবাদ করায় হামিদুল হক গং আমার ও স্ত্রী স্বজনদের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে মারধর করেছে। চিকিৎসা সনদ নিয়েছি আইনী সহযোগিতা নেবো।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আবুল হোসেন স্বপন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে তাদের ভাইদের মধ্যে হামলা মামলা চলমান রয়েছে। সামাজিক ভাবে কেউ কারো কথা মানেনা এবং শুনে না।
রোববার লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন ভুইয়া বলেন, দুই পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি বিরোধ নিয়ে হামলার ঘটনায় শুনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা জন্য ঘটনার স্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।