২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 গরম খুন্তি দিয়ে গোপনাঙ্গে ছ্যাঁকা, আটক ৩ 

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লায় ৫ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে দুই সন্তানের জননীর (৩০) স্পর্শকাতর অঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গতকাল বুধবার ভোরে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার শীমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত ওই গৃহবধূ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন। এই ঘটনায় তাঁর স্বামী (৪৫) ও স্বামীর পরিবারের অন্য ৫ সদস্যের নামে কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগীর বাবা।

মামলা দায়েরের পর পুলিশ প্রধান আসামি ভুক্তভোগী গৃহবধূর ভাশুর ও তাঁর স্ত্রী এবং আরেক জা–কে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লা জেলা পুলিশের উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘তিন আসামিকে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অপর আসামিদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী নারীর ৯ বছর বয়সী এক শিশুকন্যা ও ১২ বছরের একটি ছেলে রয়েছে।’

থানায় দায়ের করা অভিযোগ ও আহতের স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, আসামি গৃহবধূর স্বামী গত দেড় বছর যাবত বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবিসহ নানান অপবাদে স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিলেন। ঈদের আগেও এরকম নির্যাতনের ঘটনা ঘটায় গৃহবধূ তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান।

ঈদের পর তাঁকে আবারো ফোনকল করে শ্বশুরবাড়িতে আনা হয়। বুধবার মধ্যরাতে স্ত্রীর কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবির পর নির্যাতন করা শুরু করেন স্বামী। যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে তাঁকে মারধর করে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে।

একপর্যায়ে গরম খুন্তি দিয়ে গোপনাঙ্গ, গলায়, গালে ও হাতেসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পুড়িয়ে দেয়। সকালে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা গৃহবধূকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং তাঁর বাবার বাড়ির লোকজনকে ফোনকল করে ঘটনাটি জানায়।

নির্যাতিতা গৃহবধূ বলেন, ‘নির্যাতনের পর তাঁরা রাতে আমাকে বাড়িতেই আটকে রাখে। পোড়া শরীর নিয়ে আমাকে সকালে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।’

গৃহবধূর বাবা বলেন, ‘শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল। আমি এর আগে কয়েকবার তাঁদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করি।’

এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কামরান হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালে গিয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর বক্তব্য রেকর্ড করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় তাঁর স্বামীসহ ৬ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে। বাকিদেরও আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

আরো দেখুন
error: Content is protected !!