২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জেনে নিন কাঁকরোলের যত পুষ্টিগুণ সম্পর্কে

লাইফস্টাইল ডেস্ক।।
মৌসুমি সবুজ শাক-সবজি স্বাস্থ্যের পক্ষে সব সময়ই উপকারী। চিকিৎসকরা সব সময়ই রোগ নিরাময়ের থেকে প্রতিরোধের উপর বেশি জোর দিতে বলেন।

আর স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে সবুজ শাক-সবজি বা ফলমূলের বিকল্প প্রায় নেই বললেই চলে। কাঁকরোল রান্না ভাজি, ভর্তাসহ বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়।

বর্ষাকালে কাঁকরোলের ভালো চাহিদা থাকে বাজারে। এটি খেতে যেমন স্বাদের পাশাপাশি এর পুষ্টিগুণও প্রচুর। সাধারণত বনাঞ্চলেই ফলে এই ফসল। তবে চাহিদা থাকায় এখন চাষিরা নিচু জমিতে চাষ করছেন এই কাঁকরোলের।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, কাঁকরোলে টমেটোর চেয়ে ৭০ গুণ বেশি লাইকোপিন থাকে, গাজরের চেয়ে ২০ গুণ বেশি বিটা ক্যারোটিন থাকে, কমলার চেয়ে ৪০ গুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে এবং ভুট্টার চেয়ে ৪০ গুণ বেশি জিয়াজেন্থিন থাকে। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় কাঁকরোল রাখা ভালো।

এবার জেনে নিন কাঁকরোলের নানা উপকারিতা সম্পর্কে

১. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, কাঁকরোলের পুষ্টি উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার কোষের সংখ্যা বৃদ্ধিকে ধীর গতির করতে পারে।

এতে নির্দিষ্ট একটি প্রোটিন থাকে, যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে প্রতিহত করতে পারে। এজন্যই কাঁকরোলকে ‘স্বর্গীয় ফল’ আখ্যা দেওয়া হয়।

২. এনেমিয়া প্রতিরোধ করে

কাঁকরোলে প্রচুর আয়রন থাকার পাশাপাশি ভিটামিন সি ও ফলিক এসিড ও থাকে। এ কারণে নিয়মিত এটি খেলে এনেমিয়ার প্রতিহত করা সম্ভব হয়।

৩. কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়

যাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি বা যাদের উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের রয়েছে তাদের নিশ্চিন্তে কাঁকরোল খেতে পারেন। এটি উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

৪. মেদ কমায়

কমলার চেয়ে শতকরা ৪০ ভাগ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে কাঁকরোলে। ভিটামিন সি শরীরের অতিরিক্ত মেদ পুড়িয়ে ফেলতে সাহায্য করে। আর রক্তে ভিটামিন সি’র পরিমাণ কম থাকলে ফ্যাট বার্নিং কম হয়। ফলে ওজন কমে না।

যাদের রক্তে প্রয়োজনীয় পরিমাণে ভিটামিন সি আছে,তাদের ফ্যাট বার্নিং হয় শতকরা ২৫ ভাগ। ফলে তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

৫. কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ প্রতিরোধ করে

যেহেতু কাঁকরোলে উচ্চমাত্রার এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তাই এটি কার্ডিওভাস্কুলার রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। সক্রিয় জীবনযাপনের পাশাপাশি কাঁকরোল খাওয়া হৃদস্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।

৬. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়

কাঁকরোলে চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ভিটামিন, বিটাক্যারোটিন ও অন্যান্য উপাদান থাকে, যা দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করার পাশাপাশি চোখের ছানি প্রতিরোধেও সাহায্য করে।

৭. বিষণ্ণতা প্রতিহত করে

কাঁকরোলে সেলেনিয়াম, মিনারেল এবং ভিটামিন থাকে, যা নার্ভাস সিস্টেমের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে। তাই বিষণ্ণতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে কাঁকরোল।

৮. তারুণ্য ধরে রাখে

কোষের কার্যক্রমকে উদ্দীপিত করার মাধ্যমে এবং স্ট্রেস কমানোর মাধ্যমে বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ধীর গতির করতে সাহায্য করে কাঁকরোল। কোলাজেনের গঠনকে পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে বয়সের ছাপ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে এটি।

৯. হার্ট এটাকের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়

গবেষণায় পাওয়া গেছে যাদের শরীরে লাইকোপিনেরে মাত্রা বেশি, তাদের চেয়ে যাদের শরীরে এর মাত্রা কম তাদের শতকরা ৫০ ভাগ বেশি হার্ট এটাকের সম্ভাবনা রয়েছে। তাহলে কাঁকরোল আপনার হার্টেরও উপকার করবে নিশ্চয়ই।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!