২৪ ঘন্টার মধ্যে সরাতে হবে নগরীর ফুটপাত ও রাস্তার উপরের মালামাল-কুসিক
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
রাস্তা ও ফুটপাতের উপর অবৈধ ভাবে রাখা ভ্রাম্যমাণ ভ্যান হকার এবং দোকানের মালামাল ২৪ ঘন্টার মধ্যে সরিয়ে নেবার নির্দেশ দিয়েছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন।
অন্যথায় রাস্তা ও ফুটাপাতের উপরে পাওয়া সকল কিছু সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ জব্দ করবে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরফানুল হকের নির্দেশক্রমে এমন জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাইকিং চলছে নগরী জুড়ে।
এর আগেও বিভিন্ন সময় নগরীর সড়ক ও ফুটপাত অবৈধ দখলদারমুক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করা হলেও কাজে আসেনি সেসব পদক্ষেপ, তবে নতুন মেয়রের আমলে এই অভিযান ফলপ্রসূ হবে বলে আশা করছেন নগরবাসী।
কুমিল্লা সিটি মেয়র আরফানুল হক রিফাত তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে নগরীকে যানজট এবং জঞ্জাল মুক্ত করাকে রেখেছিলেন সবার আগে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনায় আমরা সতর্কতা সরূপ মাইকিং করে হুশিয়ারি দিচ্ছি।
খুব শীঘ্রই আমরা আইনী পদক্ষেপে যাবো। যারা নির্দেশনা না মানবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সিটি কর্পোরেশনের মাসিক সভায় নগরীকে যানজট ও জঞ্জালমুক্ত করতে এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ফুটপাত দখল এবং যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। একটা পক্ষ যদি কোন কারণে পিছিয়ে যায় তাহলে এসব পদক্ষেপ আর কাজে আসে না।
উল্লেখ্য, সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর মেয়াদকালের শেষ এক বছরে অন্তত ৫ বার জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের যৌথ অভিযান পরিচালনা করে চকবাজার , রাজগঞ্জ, কান্দিরপাড়, টমছমব্রীজ, শাসনগাছাসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ও ফুটপাত দখল মুক্ত করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অভিযানের কিছুদিন পরই ফলাফল শূণ্যতে দাঁড়ায়।
আবারো পুরোনো চিত্র ধারণ করে নগরী। ভ্রামম্যান আদালতের জরিমানা এবং মালামাল জব্দ করেও ঠেকানো যায় নি রাস্তা ও ফুটপাত দখল।
তবে নতুন মেয়র আরফানুল হক রিফাতের নির্দেশনায় নেয়া পদক্ষেপে আবারো সুশৃঙ্খল নগরী দেখার আশা করছে নগরবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা নগরীতে রাস্তা দখল করে ব্যবসায়িক পণ্য রাখা হয়েছে এবং হকার বসে রাজগঞ্জ থেকে কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর পর্যন্ত। অন্তত ৪০টি ভ্যান দাঁড়িয়ে থেকে নানান খাদ্যদ্রব্য, পোষাক, গৃহস্থালি তৈজসপত্র বিক্রি করে প্রতিদিন।
ছোট ছোট চকিতে করে জামা কাপড় ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রেতার সংখ্যাও শতাধিক। এসব নিম্ন আয়ের মানুষ অনেকটা নিরুপায় হয়েই ব্যবসা নিয়ে বসে এই এলাকায়।
তবে নিউমার্কেটের নিচতলায় হকারদের জন্য আলাদা জায়গায় করে দেয়ার পরও এখন নতুন হকাররা আবারো দখল করে নিচ্ছে কান্দিরপাড়ের রাস্তা। নতুন হকারদের অনেকেরই দাবী, হকারদের জন্য নির্দিষ্ট বড় জায়গায় দরকার।
আর একদল হকার সরিয়ে নিলে আবার নতুন হকার বসবে- এভাবে একই এলাকা কখনোই হকারমুক্ত হবে না। অন্যদিকে সাধারণ দোকানদারদেও দাবি, যেসব পণ্য দোকানে পাওয়া যায় সেসব পন্যই আবার হকাররা বিক্রি করে রাস্তায় বসে।
এতে একদিকে লাখ লাখ টাকা খরচ করে শপিংমল বা মার্কেটে দোকান নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দোকানিরা, আবার রাস্তায় জঞ্জালও তৈরী হচ্ছে।
দেখা গেছে, ভ্রাম্যমান হকাররা সড়কের যান চলাচলের স্থান দখল করে রাখে। এতে যানবাহনের কিছুটা চাপ বাড়লেই যানজট সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে ব্যবসায়িদের মালামালে ফুটপাত দখল হবার কারণে পথচারীদেও হাঁটতে হয় রাস্তার উপরই।
যে কারণে যানবাহন তার স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। যানজট লেগে থাকে মোড়ে মোড়ে। পথচারীদের হাঁটার জায়গায়ও তৈরী হয় জনজট।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সাধারণ পর্ষদ সদস্য বদরুল হুদা জেনু বলেন, নতুন মেয়রকে নাগরিক হিসেবে নাগরিকদের পাশে দাঁড়িয়ে এই সমস্যাগুলো দূর করতে হবে।
এর আগেও এমন অনেক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে যা বিফলে গেছে, তাই সুদূর প্রসারী ফলাফলের চিন্তা না করলে এসব পদক্ষেপ নেয়া পণ্ডশ্রম। এসব পদক্ষেপ সফল হলে অবশ্যই নগরবাসী সাধুবাদ জানাবে।