১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজকের মতামত ‘মরন ঘাতক বাইক, -সাবিনা সিদ্দিকী শিবা; -কবি ও কথাসাহিত্যিক

মরন ঘাতক বাইক,

কলমে: সাবিনা সিদ্দিকী শিবা

 
চলমান জীবনে প্রতিটি মানুষের সাথে জড়িয়ে আছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। কোনটা সহ্য করা যায়, কোনটা সহ্যশক্তি থাকেনা। প্রতিটি দুর্ঘটনায় আঘাত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। দিন দিন যানবাহনের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে রোডে এক্সিডেন্টে ঘটনা। আজ কাল অহরহ ঘটছে এক্সিডেন। এর প্রতিকার এর কোন উদ্যোগ নেই প্রশাসকের।। কয়দিন হামতাম, তারপর যেই লাউ সেই কদু।

ইদানিং সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে বাইক নিয়ে। ছোট ছোট বাচ্চা ছেলেরা যেই ক্ষিপ্ত গতিতে বাইক চালায়। মনে হয় বাইক নয় খোলা আকাশে বিমান চালাচ্ছে। এতোটা বেপরোয়া গতিতে বাইক চালায়, একটুও ভাবেনা, এক্সিডেন হলে কারও কোন ক্ষতি নেই, যা ক্ষতি হওয়ার তা হলো নিজের পরিবারের।

একটি সন্তান হারিয়ে কতটা অসহায় হয়ে পরে তার পরিবার, একমাত্র ভুক্তভোগীরাই জানে। আর কেন যে এতো অল্প বয়সেই প্রশাসক লাইসেন্স এর অনুমতি দেন বুঝতে পারছিনা। আমার মতে মিনিমাম প্রাপ্ত বয়স হয়ে এলে না হয় এই ঘাতক বাইক এর লাইসেন্স নবায়ন করার অনুমতি দিলে, এতো এতো দুর্ঘটনা কবলিত হতোনা। দুর্ঘটনায় জন্য বয়সও একটি বড় ভুমিকা রাখতে সহায়তা করে, অল্প বয়সে রক্ত গরম থাকে, শরীরে থাকে অসীম শক্তি এই শক্তি কে কাজে লাগিয়ে নিজেকে রাস্তার রাজা ভাবতে শুরু করে, তখনি বাইক এতো স্পিডে চালায়, এতেই কোন ভুমিকা ছাড়াই ঘটে যায় দুর্ঘটনা।

কিন্তু এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী কে? আমার মতে, পরিবার আর প্রশাসক। কারণ পরিবার যদি তার আদরের সন্তানকে বাইক চাবি হাতে তুলে না দিত, আর প্রশাসক যদি লাইসেন্স দিয়ে চালানোর অনুমতি না দিতো, তাহলে হয়তো নিজেকে নায়ক ভাবতে পারতোনা। আজ একটি ছেলে এক্সিডেন্টে মারা গেলে দেশের কোন ক্ষতি নেই। সারাজীবন এই ক্ষত বয়ে বেড়াতে হবে তার জনম দুঃখী মাকে, তথা পরিবারকে। একটি সন্তান লালন পালন করে বড় করতে কত শ্রম, কত কষ্ট করতে হয়, লেখা পড়ার খরচ করতে হয়। তাকে সন্তানেরা বুঝে? আর সেই আদরের সন্তানটি কিনা সামান্য হটকারিতায় উদ্বিগ্ন হয়ে পরে বাইক নামের ঘাতকের কাছে।

কেনরে বাবারা, একবার পরিবারের কথা ভাবিস না? ভাবিসনা তুই তোরা না থাকলে পরিবারটি কেমন করে সুখে থাকবে? কেমনে সামনের দিন গুলো তোর জনম দুঃখী মা কাটাব? সবাই তোকে ভুলে গেলেও, মা তো জীবনেও পারবেনা ভুলতে। ক্ষনে ক্ষনে তোর কথা, তোর ব্যবহার করা জিনিস মায়ের মনকে ব্যাকুল করে তুলবে । তোর বাবার কাঁধে তোর লাশের খাটিয়া যে কত ভারি তাকি তুই উপলব্ধি করতে পারিস বাবা?

এখনও সময় আছে আসুন আমরা সন্তানের হাতে বাইক নামের ঘাতকের চাবির রিং নয়, একটি বই তুলে দেই। একটু সময় দেই সন্তানের মানসিক বিকাশ ঘটতে। যাতে করে সন্তানেরা ডিপ্রেশনে না ভোগে। হাসি আনন্দে মাতিয়ে রাখতে পারে পরিবারকে।

আর একটা দুর্ঘটনা যেন না ঘটে,
আমরা চাই আমাদের সবার সন্তান থাকুক,
“দুধে ভাতে”…

কবি ও কথাসাহিত্যিক

আরো দেখুন
error: Content is protected !!