২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় সোহেলের ওয়ার্ডে ভোটের মাঠে মুখোমুখি স্ত্রী ও ভাই

ডেস্ক রিপোর্ট।।
কুমিল্লায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেলের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে ভোটের লড়াইয়ে নামতে চান তার স্ত্রী ও ভাই দুইজনই।

সিটি নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হিসেবে সোহেলের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার রুনা এবং ভাই সৈয়দ মো. রুমন দুজনেই আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন এবং এরই মধ্যে তারা দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

শেষ পর্যন্ত যদি আপস না হয়, তাহলে এ ওয়ার্ডে দেবর-ভাবীর লড়াই দেখা যেতে পারে নির্বাচনে। অবশ্য তাতে তৃতীয় কোনো প্রার্থী লাভবান হতে পারেন বলে স্থানীয় ভোটারদের ধারণা।

কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরীর কাছ থেকে ১১ মে মনোনয়পত্র সংগ্রহ করেন রুনা। এ সময় কর্মী ও সমর্থকরা তার সঙ্গে ছিলেন।

পরদিন ১২ মে তার দেবর রুমনও কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র নেন।

ভোটের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনী মাঠ সমানতালে গরম রাখছেন দেবর-ভাবী। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, জনতার রায়ে সুযোগ পেলে তারা প্রয়াত কাউন্সিলর সোহেলের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে বদ্ধপরিকর।

গত বছরের ২২ নভেম্বর নগরীর পাথরিয়াপাড়া নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন কাউন্সিলর সোহেল।

তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দুটি নির্বাচনেই তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এবং প্যানেল মেয়রও ছিলেন। সোহেলের মৃত্যুর পর ওই ওয়ার্ডে আর উপনির্বাচন হয়নি।

ফলে এই ওয়ার্ডে সোহেলের উত্তরাধিকারী হিসেবে পরিবার থেকে কে প্রার্থী হচ্ছেন এ নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ ছিল। বছরের শুরুতেই দেবর ও ভাবী প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এলাকার দেয়ালে দেয়ালে দেখা গেছে দুজনের পোস্টার, খুঁটিতে ঝুলেছে ফেস্টুন। দুজনই আলাদাভাবে কর্মী-সমর্থক নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরব তাদের সমর্থকরা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, গত ৫ মে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নির্ধারণে সভা হয়।

নগরীর টাউন হলের ওই সভায় কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রার্থীর বিষয়ে তাদের মতামত জানান।

সোহেলের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার রুনা দাবি করেন, সেখানে একক প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা এখনও আসেনি।

শাহনাজ আক্তার রুনা বলেন, “আমার স্বামী দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। এলাকার প্রতিটি মানুষ সোহেলের মতোই আমাকে আপন করে নিয়েছে। তারা চায়, আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে সোহেলের মতোই তাদের পাশে থাকি।”

দেবর সৈয়দ মো. রুমনের প্রার্থিতার বিষয়ে জানতে চাইলে রুনা বলেন, “এ বিষয়ে আমি কথা বলতে চাই না। তিনি কী করবেন, সেটা তার ব্যাপার।”

পাশাপাশি সৈয়দ রুমনও দাবি করেছেন, তার ভাইয়ের জায়গায় এলাকাবাসী তাকে দেখতে চান এবং তিনিও ভাইয়ের স্বপ্নপূরণে প্রস্তুত।

রুমন বলেন, “ভাইয়ের স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য আমি আগেই নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছি। এখন শুনেছি ভাবিও নির্বাচন করবেন। তিনি হাবিবকে (১৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ কর্মী) নিয়ে নির্বাচনী কাজ করছেন। তবে আমিও প্রস্তুত আছি, ইনশাআল্লাহ।”

“আমিও নির্বাচন করব। এলাকার মানুষ সোহেল ভাইয়ের জায়গায় আমাকে দেখতে চায়। মানুষের অনুরোধেই চূড়ান্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

ভাই সোহেল হত্যার ন্যায়বিচার নিয়েও চিন্তিত বলে জানান রুমন।

“এখনও মূলহোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে, এজন্য আমাদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। সবার জীবনে ঈদ এলেও আমরা ভাইকে ছাড়া জিন্দালাশের মতো বেঁচে আছি। ভাইয়ের সব খুনিদের বিচার হলেই আমার কষ্ট কমবে।”

কাউন্সিলর সোহেলের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তি জানান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব প্রয়াত কাউন্সিলর সোহেলের পিএস ও বিশ্বস্ত লোক হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। সোহেলের মৃত্যুর পর হাবিব তার পরিবারের পাশে থেকেছেন। এবং রুনার সঙ্গে ভোটের মাঠে সবসময়ই হাবিবকে দেখা যাচ্ছে।

সোহেল বেঁচে থাকার সময় তার ভাই রুমন এবং হাবিব দুজনেই ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে নেতৃত্বে আসতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে রুমন ও হাবিরের মধ্যে দ্বন্দ্বও পুরনো।

কুমিল্লা সিটিতে সর্বশেষ ভোট হয়েছিল ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৭ মে প্রথম সভা হয়। তাদের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে এ বছরের ১৬ মে।

সিটি করপোরেশনে মেয়াদপূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে এবার তা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছিল গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়া কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

দুটি পৌরসভা নিয়ে ২০১১ সালের জুলাই মাসে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত দুটি নির্বাচন হয়েছে। ১০ বছর আগে প্রথম নির্বাচন নির্দলীয় প্রতীকে হলেও ২০১৭ সালে দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন হয়। দুই নির্বাচনেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়ী হয় বিএনপির প্রার্থী।

পাশাপাশি সৈয়দ রুমনও দাবি করেছেন, তার ভাইয়ের জায়গায় এলাকাবাসী তাকে দেখতে চান এবং তিনিও ভাইয়ের স্বপ্নপূরণে প্রস্তুত।

রুমন বলেন, “ভাইয়ের স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য আমি আগেই নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছি। এখন শুনেছি ভাবিও নির্বাচন করবেন। তিনি হাবিবকে (১৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ কর্মী) নিয়ে নির্বাচনী কাজ করছেন। তবে আমিও প্রস্তুত আছি, ইনশাআল্লাহ।”

“আমিও নির্বাচন করব। এলাকার মানুষ সোহেল ভাইয়ের জায়গায় আমাকে দেখতে চায়। মানুষের অনুরোধেই চূড়ান্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

ভাই সোহেল হত্যার ন্যায়বিচার নিয়েও চিন্তিত বলে জানান রুমন।

“এখনও মূলহোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে, এজন্য আমাদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। সবার জীবনে ঈদ এলেও আমরা ভাইকে ছাড়া জিন্দালাশের মতো বেঁচে আছি। ভাইয়ের সব খুনিদের বিচার হলেই আমার কষ্ট কমবে।”

কাউন্সিলর সোহেলের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তি জানান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব প্রয়াত কাউন্সিলর সোহেলের পিএস ও বিশ্বস্ত লোক হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। সোহেলের মৃত্যুর পর হাবিব তার পরিবারের পাশে থেকেছেন। এবং রুনার সঙ্গে ভোটের মাঠে সবসময়ই হাবিবকে দেখা যাচ্ছে।

সোহেল বেঁচে থাকার সময় তার ভাই রুমন এবং হাবিব দুজনেই ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে নেতৃত্বে আসতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে রুমন ও হাবিরের মধ্যে দ্বন্দ্বও পুরনো।

কুমিল্লা সিটিতে সর্বশেষ ভোট হয়েছিল ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৭ মে প্রথম সভা হয়। তাদের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে এ বছরের ১৬ মে।

আরো দেখুন
error: Content is protected !!