বান্দরবানের দুর্গম এলাকা থেকে আরো ৫ জন গ্রেফতার ; তিনজনই কুমিল্লার
নিউজ ডেস্ক।।
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও থানচির দুর্গম এলাকায় অভিযান চালিয়ে জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দিল শারক্বীয়ার পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গতকাল বুধবার (১১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে জেলার থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকা থেকে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতার করে র্যাব।
তবে গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে কোনো অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বান্দরবান জেলা পরিষদের মিলনায়তনে আয়োজিত র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে থানচি উপজেলা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক। অন্য দুই জঙ্গি হলেন— কুমিল্লা জেলার আ. রাজ্জাকের ছেলে সালেহ আহমেদ ওরফে সাইহা (২৭) ও সিলেটের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাদিকুর রহমান ওরফে ফারকুন (৩০)।
এ ছাড়া রোয়াংছড়ি থেকে গ্রেফতারকৃত দুজন হলেন—কুমিল্লার বাইজিদ ইসলাম মুয়াজ ওরফে বাইরু (২১) ও নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির আবদুল কুদ্দুসের ছেলে নিজাম উদ্দিন হিরণ ওরফে ইউসুফ (৩০)।
মঈন আরো বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা জেনেছে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ সংগঠনটির আমীর মো. আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে উগ্রবাদী সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে। উগ্রবাদী এ সংগঠনে ৬ জন শূরা সদস্য রয়েছে।
যারা দাওয়াতী, সামরিক, অর্থ, মিডিয়া ও উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছে। শূরা সদস্য আব্দুল্লাহ মাইমুন দাওয়াতী শাখার প্রধান, মাকসুর রহমান সামরিক শাখার প্রধান, মারুফ আহমেদ সামরিক শাখার দ্বিতীয় ব্যক্তি, মোশাররফ হোসেন ওরফে রাকিব অর্থ ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান, শামীম মাহফুজ প্রধান উপদেষ্টা ও প্রশিক্ষণের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক এবং ভোলার শায়েখ আলেম বিভাগের প্রধান হিসেবে সংগঠনটিতে দায়িত্ব পালন করছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের প্রধান নাথান বম, সামরিক কমান্ডার কথিত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ভাংচুং লিয়ান বম, মিডিয়া শাখার প্রধান কথিত লে. কর্নেল লালজং মুই ওরফে মাওয়াইয়া, কথিত লে. কর্নেল লাল মুন ঠিয়াল ওরফে চির চির ময়সহ অন্যান্য নেতৃস্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের নির্দেশনায় ও সরাসরি তত্ত্বাবধানে পাহাড়ে প্রশ্রয় দিয়ে জঙ্গি এ সংগঠনের ৫৫ জন সদস্যকে সামরিক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে।
পাহাড়ের অবস্থানরত জঙ্গিদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে এবং প্রশিক্ষণ, খাবারসহ বিভিন্ন রসদ ও সরঞ্জাম সরবরাহ করে যাচ্ছে কেএনএফ।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ ৮ তরুণের মধ্যে ৩ জনসহ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিভিন্ন পর্যায়ের ৩১ নেতা ও সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। একইসঙ্গে ২০২১ সাল থেকে এ জঙ্গি সংগঠনকে অর্থের বিনিময়ে সহায়তা এবং সামরিক প্রশিক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের ১৪ জন নেতা ও সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।