ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদকাসক্তের ছুরিকাঘাতে প্রয়াস নিরাময় কেন্দ্রের কর্মকর্তা খুন
নিউজ ডেস্ক।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়ায় এক চিহ্নিত মাদকসেবী রনি আহমেদ এর ছুরিকাঘাতে রাজীব পাল (৩২) নামে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে রাশেদ খান(৩০) নামে ওই কেন্দ্রের অপর এক কর্মী।
রোববার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর সদর হাসপাতালে আসেন থানার পুলিশ।
এদিকে, ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে মাদকাসক্ত রনি।রনির পরিবার ও মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সদস্যরা জানান, শহরের কাজীপাড়া এলাকার চিহ্নিত মাদকসেবী রনির অত্যাচারে পরিবার, স্বজনসহ অনেকেই অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন।
মাদকাসক্ত হওয়ায় অত্যাচার নির্যাতনের কারণে গত কোরবানির ঈদের আগে তিনি তার ছেলে রনির বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এরই মধ্যে তার অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। পরে রনির পিতা সানু মিয়া শহরের ফুলবাড়ীয়া এলাকার মাদক নিরাময় কেন্দ্র প্রয়াস এর দ্বারস্থ হন।
পরে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ৬ সদস্যের একটি পার্টি রনিকে ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসার জন্যে কাজীপাড়ার বাড়িতে যায়। পরে তারা রনির দ্বিতল ভবনের কক্ষে নক করার পর রনি ছুরি নিয়ে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সদস্যদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এতে ঘটনা স্থলেই রাজীব পাল নামে নিরাময় কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা নিহত হয়। গুরুতর আহত হয় রাশেদ খান নামে নিরাময় কেন্দ্রের অপরকর্মী।
নিহত রাজীব পালের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ভূলতা এলাকায়। তারা পিতার নাম কেশব পাল। আহত রাশেদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার যাদুঘর গ্রামে।
মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম রুয়েল জানান, রনির পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার সন্ধ্যায় তাদের একটি প্রতিনিধিদল মাদকাসক্ত রনিকে আনতে গেলে ঘরের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে কর্মকর্তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এতে ঘটনা স্থলে প্রয়াসের কর্মকর্তা রাজীব পাল মারা যায়। এ ঘটনায় রাশেদ খান গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় তিনি ঘাতক রনির গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
ঘাতক রনির পিতা সানু মিয়া জানান, মাদকাসক্ত হওয়ায় অত্যাচার নির্যাতনের কারণে গত কোরবানি ঈদের আগে তিনি তার ছেলে রনির বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
এতদিন তিনি আদালত থেকে তার সন্তানের গ্রেপ্তারি আদেশের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে রনির অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। পরে রনির অত্যাচার সহিতে না পেরে পিতা সানু মিয়া শহরের ফুলবাড়ীয়া এলাকার মাদক নিরাময় কেন্দ্র প্রয়াস এর দ্বারস্থ হন। পরে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ৬ সদস্যের একটি কটপার্টি রনিকে বাড়ি থেকে নিতে আসলে সে তাদের উপর আক্রমণ করে বসে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসক ডা. মো. হিমেল খান জানান, রাজীব নামে একজনকে তারা মৃত অবস্থায় পেয়েছেন। রাশেদ খান নামে অপর জনের অবস্থা গুরুতর। তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক রেজা জানায়, ঘাতক রনিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার পর মাদকসেবী রনির পিতা সানুমিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।